প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী গায়ক কেকে ওরফে কৃষ্ণকুমার কুন্নথের জীবনাবসান হয়ে নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান শেষে। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঁকুড়ার কর্মিসভা থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কলকাতায় গাইতে এসে চলে গেলেন জনপ্রিয় শিল্পী। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে আমরা কথা হয়েছে। আমরা তাঁকে গান স্যালুটে চিরবিদায় জানাব।
মমতা বলেন, দমদম বিমান বন্দরে প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পীকে গান স্যালুট দেওয়া হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন। সেই কারণে তিনি বাঁকুড়ার কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে অণ্ডাল হয়ে বিমানে দমদমে আসছেন। সেখানে কেকে-র প্রয়াণে গান স্যালুট প্রদান করে তাঁকে সম্মান জানানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত হয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার কলকাতায় নজরুল মঞ্চে কনসার্ট চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন সঙ্গীতশিল্পী কেকে। তারপর হোটেলে ফিরে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। কনসার্টের পরই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তাঁর মৃত্যুতে শোক মুহ্যমান সঙ্গীত দুনিয়া। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভিন্ন জগতের মানুষেরা তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেন।
বিগত তিনদিন ধরে জেলা সফরে ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে তাঁর বাঁকুড়ায় কর্মিসভা ছিল। সেই কর্মিসভায় বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি উপস্থিত থেকে গান স্যালুটে তাঁকে শেষ বিদায় জানাবেন। তাঁর প্রয়াণে শোক প্রকাশের ভাষা নেই। তাঁকে শেষবার দেখতেও ইচ্ছাপ্রকাশ করেন মমতা। তিনি তাই চটজলদি বাঁকুড়া থেকে দমদম বিমানবন্দরে নামবেন।
এদিকে কেকে-র মরদেহ এসএসকেএম হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর নিয়ে যাওয়া হবে মুম্বইয়ের উদ্দেশে। দমদম বিমানবন্দরে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। গান স্যালুটে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কেকে-কে বিদায় জানানো হবে। সেখানে উপস্থিত থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। গান স্যালুটের পর তাঁর মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেকে-র স্ত্রীর সঙ্গে তিনি ফোনে কথা বলেছেন। তাঁকে সমবেদনা জানিয়েছেন। দিয়েছেন পাশে থাকার আশ্বাস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে তাঁকেও জানানো হয়, তিনি উপস্থিত থেক গান স্যালুটে বিদায় জানাতে চান প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীকে। সেইমতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়া সফর সংক্ষিপ্ত করে তিনি বেরিয়ে পড়েন দমদমের উদ্দেশে।
প্রখ্যাত গায়ক কেকে ওরফে কৃষ্ণকুমার কুন্নথ কলকাতার অনুষ্ঠান মঞ্চে ভক্তদের গান শোনাতে শোনাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসু্স্থতা চেপে রেখে কোনওরকমে ফিরে যান হোটেলে। কিন্তু তাঁর সমস্যা বাড়তে থাকে। আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। অসুস্থতা বোধ করায় তিনি অনুষ্ঠান মঞ্চে স্পট লাইট বন্ধ করে দিতে বলেছিলেন। তবু গানের মঞ্চ ছেড়ে যাননি তিনি। শেষ গান গাইতে গাইতেই চলে গেলেন সুরলোকে। গেয়ে গেলেন 'হাম রহে ইয়া না রহে কাল, ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়া পাল'- জীবনের শেষ গান।