সিডনি টেস্টের অবাঞ্ছিত ঘটনা
আজ মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে সেই ঘটনার কথা উঠে এলো অজিঙ্ক রাহানের বক্তব্যে। সিডনি টেস্ট চলাকালীন মহম্মদ সিরাজ ও জসপ্রীত বুমরাহকে উদ্দেশ করে গালিগালাজ-সহ বর্ণবৈষম্যমূলক কটূক্তি করে কয়েকজন দর্শক। রাহানে বলেন, আমরা শুরু থেকে চেয়েছিলাম অভব্য ওই দর্শকদের মাঠ থেকে বের করা হোক। উল্লেখ্য, নতুন বছরের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনে খেলার শেষে ভারতীয় ক্রিকেটাররা ম্যাচ অফিসিয়ালদের জানান কীভাবে তাঁদের উদ্দেশ করে বর্ষণবৈষম্যমূলক কটূক্তি করা হচ্ছে। পরের দিন সকালেও তা চলতে থাকে। এরপর আম্পায়ারদের নজরে এনে যথাযথ পদক্ষেপ করতে বলে ভারতীয় দল। খেলা বন্ধ থাকে মিনিট দশেক। এরপর অভিযুক্ত দর্শকদের মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার পর খেলা শুরু হয়।
ভারতের সম্মিলিত প্রতিবাদ
রাহানে বলেন, আম্পায়ার পল রাইফেল ও পল উইলসন ক্রিকেটারদের বলেন, যদি তাঁরা খেলতে না চান তাহলে ড্রেসিংরুমে ফিরে যেতে। কিন্তু আমরা ওই দর্শকদের মাঠ থেকে বের করে খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলি। টেস্টের চতুর্থ দিনে আগের দিনের মতো বর্ণবৈষম্যমূলক কটূক্তির কথা সিরাজ আমাকে এসে বলতেই আম্পায়ারদের বলেছিলাম, অবিলম্বে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। না নেওয়া অবধি আমরা খেলব না। আম্পায়াররা বলেন, এভাবে খেলা থামানো যায় না। খেলতে না চাইলে ড্রেসিংরুমে দল নিতে ফিরে যেতে পারেন। তখন আমরা বলি, আমরা এখানে খেলতে এসেছে, ড্রেসিংরুমে বসে থাকতে আসিনি। মাঠ থেকে যাতে ওই দর্শকদের বের করা হয় তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চাপ রেখে যাই। কেন না, আমাদের সতীর্থের পাশে থেকে তাঁর প্রতি সমর্থন জানানোই বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সিডনিতে যে ঘটনা ঘটেছিল তা মোটেই মেনে নেওয়া যায় না। উল্লেখ্য, ভারতীয় দলের চাপে অভিযুক্ত দর্শকদের বের করে দিলেও পরে তাদের ক্লিনচিট দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
অশ্বিনের উপলব্ধি
ব্যাক স্প্যাজমের যন্ত্রণা-অস্বস্তি উপেক্ষা করে হনুমা বিহারীর সঙ্গে দীর্ঘ সময় ক্রিজে কাটিয়ে ভারতকে সিডনি টেস্ট ড্র রাখতে সাহায্য করেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় অ্যাডিলেড ও মেলবোর্নের দর্শকরা খারাপ নন। কিন্তু সিডনিতে এমন ঘটনা হামেশাই হয়। আমার সঙ্গেও হয়েছে। খুবই নোংরা আচরণ করে সেখানকার দর্শকরা। বর্ণবৈষম্য প্রসঙ্গে অশ্বিন বলেন, বিশেষ কোনও দেশের দর্শকদের একাংশ এমনটা ঘটায় তা নয়। বর্ণবৈষম্য এমন একটি বিষয় যেখানে মানুষ একে অপরের মধ্যে ফারাক বোঝাতে এর আশ্রয় নেয়। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই আচরণ রোধ করা যায় বলে উপলব্ধি অশ্বিনের।
এসসিজিতে হামেশাই এমন ঘটনা
অশ্বিনের কথায়, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতেই এমন ঘটনা বেশি হয়ে থাকে। সিরাজ যে সাহস দেখিয়ে এই ঘটনাকে সর্বসমক্ষে এনেছে তা প্রশংসনীয়। এতে অনেক মানুষ ঘটনাটি জানতে পেরেছেন, পরবর্তী সময়ে ওই দর্শকদের পাশে যাঁরা বসেছিলেন তাঁরাও ওয়াকিবহাল ও সতর্ক থাকবেন। এই ধরনের ঘটনা নিন্দনীয়। কিন্তু একইসঙ্গে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মাপকাঠির নিরিখে মানুষ যে বৈষম্য করে থাকেন, সেটাকেও সমর্থন করা যায় না বলে বলে সাফ জানিয়েছেন অশ্বিন।