কসমস ৪৮২ ডিসেন্ট ক্রাফট ফিরছে
সোভিয়েতের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শুক্রের উদ্দেশে ওই মহাকাশযান লঞ্চ করার পর তা ব্যর্থ হয়েছিল। তারপরে কমস ৪৮২ বলে নামকরণ করা হয়েছে মহাকাশ যানটির। আসলে এটি ছিল ভেনেরা ৮ মিশনের একটি অংশ। এই মহাকাশযানটি পৃথিবীর নিকটতম প্রতিবেশী গ্রহে লঞ্চ করা হয়েছিল। দ্য স্পেস রিভিউ-তে স্পেস সিচুয়েশনাল অ্যাওয়ারনেস কনসালট্যান্ট মার্কো ল্যাংব্রোকের একটি রিপোর্ট অনুসারে, অবজেক্ট ১৯৭২-০২৩ই, কসমস ৪৮২ ডিসেন্ট ক্রাফট শুক্রে অবতরণ করানোর উদ্দেশে পাঠানো হয়েছিল।
ভেনেরা ৮ মিশনের মহাকাশ যান
কিন্তু মহাকাশযানটি পৃথিবীর চারপাশে তার কক্ষপথ ধরেই ঘুরতে থাকে। তা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ছেড়ে বেরোতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যে বস্তুটি বিধ্বস্ত হতে চলেছে তা কেবল ল্যান্ডার নয়, তা ভেনেরা ৮ মিশনের একটি উল্লেখযোগ্যভাবে বড় অংশ। বস্তুটি তিন থেকে চার বছরের মধ্যে পুনরায় প্রবেশ করতে পারে এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এটির পুনঃপ্রবেশ একটি আশ্চর্যজনক হতে পারে, যেহেতু এটি শুক্রের ঘন বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
ভেনাস মিশন কী ছিল?
ভেনেরা ৮ মিশন কাজাখস্তানের বাইকোনুর কসমোড্রোম থেকে ১৯৭২ সালে চালু হয়েছিল। কসমস ৪৮২ শুক্রে যাত্রা শুরু করেছিল তার চার দিন পরে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন, মিশনটি ভেনেরা ৮-এর মতোই ডিজাইনের ছিল। তবে, এটি পৃথিবীর চারপাশে একটি উচ্চ উপবৃত্তাকার কক্ষপথে আটকে যাওয়ায় তা ব্যর্থ হয়।
শুক্র গ্রহের পথে সেট করা হলেও...
মিশনের ব্যর্থতার জন্য করা হয়েছিল ভুলভাবে সেট করা টাইমারকে। উপরের পর্যায়টি মিশনটিকে পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রোগ্রাম করা হয়েছিল, এটি শুক্র গ্রহের পথে সেট করা হয়েছিল। উৎক্ষেপণের পর মহাকাশযানটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। একটি ১৯৭২-০২৩এ প্রধান ক্রাফট। অন্যটি ১৯৭২-০২৩ই ডিসেন্ট ক্রাফট, যা শুক্র গ্রহে অবতরণ করত।
কী হচ্ছে এখন?
১৯৭২ সালে উৎক্ষেপিত ডিসেন্ট ক্রাফটের উচ্চতা ৭৭০০ কিলোমিটারেরও বেশি কমে এসেছে। গত পঞ্চাশ বছর ধরে তা কমতে কমতে নেমে এসেছে ৭৭০০ কিলোমিটার নীচে। জ্যোতির্বিজ্ঞানী বলেন, ২০২২-এর ১ মে বস্তুটি ১৯৮x১৯৫৭ কিলোমিটার কক্ষপথে রয়েছে। জেনারেল মিশন অ্যানালাইসিস টুল ব্যবহার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তা জানতে পেরেছেন।
এটি কি পৃথিবীতে পুনরায় প্রবেশ করে বেঁচে থাকবে?
১১৮০ কেজি ওজনের মহাকাশযান, যা শুক্র গ্রহে অবতরণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, শুক্রের ঘন বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে পুনরায় প্রবেশের জন্য টিকে থাকার প্রযুক্তি এবং উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল তা। তার পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশ একইরকম হতে পারে এবং পৃথিবীর ঘন বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার পর বিচ্ছিন্ন হওয়া অন্যান্য বস্তুর বিপরীতে ল্যান্ডারটি বেঁচে থাকতে পারে।
পুনঃপ্রবেশের পর ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করবে
"ডিসেন্ট ক্রাফ্টটি শুক্রের ঘন বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে প্রবেশে বেঁচে থাকার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। তাই সম্ভবত এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্ষত অবস্থায় পুনঃপ্রবেশের সময় বেঁচে থাকবে এবং ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করবে বলে জানানো হয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে।