গত কয়েকমাস যাবৎ একাধিক মানুষ তাৎক্ষণিক লোন অ্যাপের পুনরুদ্ধার এজেন্টদের মাধ্যমে হেনস্থা হওয়ায় পুলিশকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে। এই অ্যাপগুলি মানুষকে সহজেই ঋণ পাইয়ে দেওয়ার এবং মুহূর্তের মধ্যে উচ্চ সুদের হার ও প্রক্রিয়াকরণ ফি–এর প্রলোভন দেয়। কিন্তু এরপরই শুরু হয় আসল খেলা। ঋণের টাকা শোধ করার সময়, কেউ যদি তা দিতে না পারে তখন যে ব্যক্তি ঋণ নিয়েছে তার যোগাযোগের তালিকা থেকে বন্ধু–বান্ধব, আত্মীয়স্বজনকে ফোন করে, মেসেজ পাঠিয়ে হেনস্থা করার পাশাপাশি ব্যক্তির ছবি মর্ফ করার মতো কাজও করে থাকে।
হায়দরাবাদের এক মহিলা, যিনি এই তাৎক্ষণিক লোন অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে হায়দরাবাদের সাইবার ক্রাইম পুলিশ ২৩ বছরের মণীশ কুমারকে বিহার থেকে গ্রেফতার করে। মহিলা তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন যে তিনি ঋণের ইএমআই শোধ করতে ব্যর্থ হন, তখন তাঁকে হেনস্থা করার জন্য ফোন করা হয় এবং তাঁর মানসিক চিন্তা বানাতে, আত্মহত্যার মতো চিন্তা মাথায় আনতে তাঁর মর্ফ করা নগ্ন ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠায়। কল ডিটেইল রেকর্ড (সিডিআর) বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে পুলিশ মণীশ কুমারকে সনাক্ত করে। এই ব্যক্তি অভিযোগকারিণীকে অপমানজনক মেসেজ পাঠিয়েছে এবং তাকে বিহার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, লোন অ্যাপের গ্রাহকদের ছবি ব্যবহার করে মণীশ কুমার 'বিকিনি অ্যাপ’–এর মাধ্যমে সেগুলিকে নগ্ন করত এবং তা আক্রান্তের পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও অন্যান্যদের পাঠাতো, ঋণের টাকা শোধ না করার জন্য এভাবে গ্রাহকদের ভাবমূর্তি নষ্ট ও হেনস্থা করত অভিযুক্ত। ঋণ গ্রহীতাদের নাম, তাঁদের আধার, প্যান কার্ড ও কিছু গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করার তথ্য সহ একটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অভিযুক্তের কাছ থেকে।
হামলার আগে সিধুর গাড়িকে ধাওয়া করছিল আততায়ীরা, ধরা পড়ল সিসি ক্যামেরায়
পুলিশ জানিয়েছে, মণীশ কুমারের সঙ্গে আরও একজন ছিল, সেও বিহারের বাসিন্দা, নাম বিকাশ কুমার, দিল্লিতে বসবাস করে, সে পলাতক। এরা দু’জনে মিলে ঋণ গ্রহীতাদের ইএমআই ব্যর্থ হলেই তারা ফোনে হেনস্থা, মেসেজে গালিগালাজ, ব্ল্যাকমেইল, ছবি মর্ফ করে হোয়াটসঅ্যাপে দিয়ে দেওয়ার মতো কাণ্ড ঘটাতো। পুলিশ জানতে পেরেছে, বিকাশ কুমার ঋণ গ্রহীতাদের ছবি, আধার–প্যান কার্ড যহ যাবতীয় তথ্য মণীশকে পাঠাতো। মণীশই গ্রাহকদের ফোন করে হেনস্থা, হুমকি ফোন এইসব করত। প্রসঙ্গত, মে মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে হায়দরাবাদ পুলিশ এ ধরনের ৬টি অভিযোগ পায়। যেখানে লোন অ্যাপের এজেন্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। গত বছর তাৎক্ষণিক লোন অ্যাপে নিয়োগ করা এজেন্টদের হেনস্থার কারণে তেলঙ্গানায় ৬ জন আত্মহত্যা করেন।