ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা বা জেএমএম সোমবার প্রবীণ নেত্রী মহুয়া মাজিকে রাজ্যের আসন্ন রাজ্যসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করেছে। সংসদের উচ্চকক্ষে একটি আসন চেয়েছিল কংগ্রেস। জোটসঙ্গী কংগ্রেসের সেই আর্জি প্রত্যাখ্যান করে দলের প্রার্থী দাঁড় করানোর ঝাড়খণ্ডে বিপাকে জেএমএম-কংগ্রেস জোট।
জেএমএমের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যে জোট নিয়ে জোর অশান্তি শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অবিনাশ পাণ্ডে সোমবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন। হেমন্ত সোরেনের এই ঘোষণার পরেই কংগ্রেস হাইকম্যান্ড সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা জানান। অবিনাশ পাণ্ডে বলেন, তিনি জেএমএমের সঙ্গে জোট চালিয়ে যাবেন কি না সেই বিষয়ে দলের অবস্থান নিয়ে আলোচনা করবেন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে।
গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে যে, মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের ঘোষণা 'মৈত্রী ধর্মের' অবমাননা করেছে। সোরেন বলেন, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং তাঁর বাবা জেএমএম সুপ্রিমো শিবু সোরেনের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করার পরে তিনি মহুয়া মাজির নামটি চূড়ান্ত করেছিলেন। মহুয়া মাজি এর আগে ঝাড়খণ্ড রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ছিলেন। তিনি জেএমএম মহিলা শাখার সভানেত্রীর পদেও অধিষ্ঠিত ছিলেন।
কংগ্রেস এবং আরজেডি হল ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতাসীন জোটের অন্য দুই শরিক। ১৫টি রাজ্যে ৫৭টি রাজ্যসভার আসন পূরণের জন্য ১০ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু তার আগে ঝাড়খণ্ডে যেভাবে শরিকি বিবাদে জড়িয়ে পড়ল কংগ্রেস ও জেএমএম, তা আগামী দিনের পক্ষে সুখকর নয়। কংগ্রেসের গোটা দেশেই খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই। তার উপর একটার পর একটা রাজ্যে যদি জোট নিয়ে শরিকদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে, তবে ২০২৪-এর পক্ষে তা ভালো উদাহারণ হবে না।
সামনই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন রয়েছে, সেখানে দুই জোটসঙ্গী কী অবস্থান নেন, সেটাও যেমন দেখার, একইভাবে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে দেশজুড়ে জোটের আবহ তৈরি করার দায় রয়েছে কংগ্রেসের। তার আগে আবার একাধির রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। সেই নির্বাচনে কংগ্রেসকে গুরুত্ব ফিরে পেতে হবে।
কিন্তু যদি তার আগে জোটসঙ্গীদের সঙ্গে বিবাদ বাড়তে থাকে, তবে তা বিজেপির পক্ষে খুবই সুবিধাজনক হবে। ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে কংগ্রেসকে হেমন্ত সোরেন বা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বা জেএমএমের উপর নির্ভর করে থাকতে হবে। তেমনই অন্যান্য অনেক রাজ্যে পৃথক জোটসঙ্গীর উপর বিশ্বাস ও ভরসা রাখতে হবে। ২০২৪ পর্যন্ত সেই ধৈর্য্য হারালে আরও বড় লজ্জায় পড়তে হতে পারে কংগ্রেসকে।