|
নেপথ্য নায়ক
আঙুলের চোট আশিস নেহরাকে ছিটকে দিয়েছিল ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল থেকে। গ্যারি কার্স্টেনের কোচিংয়ে সেবার ভারতীয় দলে ছিলেন নেহরা। গুজরাত টাইটান্সে আশিস এখন কোচ, কার্স্টেন মেন্টর। এমনিতে মজাদার মানুষ আশিস নেহরা। জৈব সুরক্ষা বলয়ে ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতে তাই ইতিবাচক ভূমিকা নেন নেহরা। তিনিই প্রথম ভারতীয় কোচ হিসেবে আইপিএল খেতাব জয়ের নজির গড়লেন। নেহরা বলেন, এটা এক দারুণ অনুভূতি। তবে ট্রফি জেতার চেয়েও যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, আমরা যেভাবে খেলেছি। হার্দিকের উদ্দেশে নেহরা বলেন, "তোমার নেতৃত্বে দলের প্রত্যেকে এককাট্টা হয়ে দারুণ খেলেছে।"
|
অনন্য কীর্তি
২০১৬ সালের ২৯ মে ক্রিকেটার হিসেবে প্রথমবার আইপিএল ট্রফি স্পর্শ করেছিলেন আশিস নেহরা। সেবার তিনি ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নারের নেতৃত্বাধীন সানরাইজার্স হায়দরাবাদে। এবার সেই ২৯ মে তারিখেই কোচ হিসেবে নেহরা আইপিএল ট্রফি হাতে নেওয়ার সুযোগ পেলেন। এবারের আইপিএলে দেখা গিয়েছে কীভাবে চাপের মুখেও শান্ত ছিলেন কোচ নেহরা ও অধিনায়ক হার্দিক। দলকে একসূত্রে বেঁধে রাখতে এই দুজনেই বড় ভূমিকা নিয়েছেন। এই সাফল্যের কৃতিত্ব সাপোর্ট স্টাফদেরও রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হার্দিক। আবার গুরু গ্যারি প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন কোচ আশিসকে। নেহরা ও কার্স্টেন এর আগে আরসিবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন। কার্স্টেন ছিলেন হেড কোচ, নেহরা বোলিং কোচ। ২০১৯ সালে তাঁদের ছাঁটাই করেছিল আরসিবি। রয়্যাল চ্য়ালেঞ্জার্স ব্য়াঙ্গালোর এখনও খেতাব না জিতলেও, নেহরা-কার্স্টেন জুটি আইপিএল জেতালেন গুজরাত টাইটান্সকে।
|
প্রথম ভারতীয় কোচ হিসেবে আইপিএল খেতাব
রিকি পন্টিং, শেন ওয়ার্নদের মতো ক্রিকেটার ও কোচ হিসেবে আইপিএল খেতাব জয়ের নজির গড়েছেন নেহরা। অনিল কুম্বলে ২০১৩ ও ২০১৫ সালে আইপিএল খেতাবজয়ী মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মেন্টর ছিলেন। কিন্তু কোচ ছিলেন না। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব বা পাঞ্জাব কিংসের হেড কোচ হওয়ার পর কুম্বলে আইপিএল খেতাব জেতেননি। প্রথম ভারতীয় কোচ হিসেবে আইপিএল খেতাব জয়ের বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না নেহরা। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পর তিনি ড্রেসিংরুমে ফিরে সেই ট্রফিটি হাতে নেবেন বলেও জানান আইপিএলের তরফে পোস্ট করা ভিডিওয়।
|
হার্দিকের সঙ্গে আলাপচারিতায়
আইপিএলের সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে কোচ নেহরা হার্দিকের কাছে জানতে চাইছেন তাঁর আইপিএল খেতাব জয়ের অভিজ্ঞতার কথা। হার্দিক বলেন, প্রথম বছরেই আমরা ছক্কা হাঁকিয়েছি। আমরা চ্যাম্পিয়ন এর চেয়ে গর্বের কিছু হয় না। অনেকে বলেছিলেন, আমাদের ব্যাটিং দুর্বল, বোলিং দুর্বল। তারপরও খেতাব জিতেছি। তাই ভালোই লাগছে। এরই মধ্যে নেহরা হার্দিকের কাছে জানতে চান তাঁরা কারা যাঁরা গুজরাতের শক্তি নিয়ে সংশয়ী ছিলেন।
|
সুখের সংসারে মজা
এই ভিডিওতেই হার্দিক মজা করে বলেন, নেহরা সবার আগে অনুশীলনে যান। সাধারণভাবে সকলের ব্যাটিং হলে বলা হয় চলো এবার ফেরা যাক। কিন্তু নেহরা প্রথমেই জিজ্ঞাসা করেন, কত সময় বাকি? যদি ২০ মিনিট বাকি থাকে তখন সকলকে ফের ব্যাটিং করতে বলেন নেহরা। ফলে আমরা যে ক্রিকেট খেলেছি তার কৃতিত্ব অবশ্য নেহরার প্রাপ্য়। প্রত্যেককে প্যাশন নিয়ে কঠোর অনুশীলন করতে উৎসাহিত করেছেন। ফলে যেই খেলতে গিয়েছেন তিনি ব্যাটিং বা বোলিংয়ে নিজের সেরাটা দিতে প্রত্যয়ী ছিলেন। যদিও এরপরই লাজুক নেহরা হার্দিকের সঙ্গে কথোপকথন ছেড়ে উঠে যান শুধু এই বলে, এমন কিছুই হয়নি।