হিমাচল প্রদেশ নিয়ে কংগ্রেসকে আশা দিয়েছিলেন পিকে
সম্প্রতি প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেসকে কতকগুলি প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রস্তাবনা মোতাবেক কংগ্রেস এগোতে পারছে কি। হিমাচল প্রদেশে সম্প্রতি উপনির্বাচনে কংগ্রেস জয়যুক্ত হয়েছে। তারপর থেকেই কংগ্রেস ধারণা করেছিল, এই রাজ্যে তাঁরা জেতার মতো জায়গায় রয়েছে। শুধু সঠিকভাবে লক্ষ্য স্থির করে এগোতে হবে। তাহলেই ধরা দেবে সাফল্য। প্রশান্ত কিশোরও হিমাচল প্রদেশ নিয়ে কংগ্রেসকে আশার কথা শুনিয়েছিলেন।
গুজরাতেও কংগ্রেস বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জায়গায়
একইসঙ্গে গুজরাতেও কংগ্রেসের হয়ে ব্যাট ধরতে ইচ্ছুক ছিলেন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। তিনি চেয়েছিলেন বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেসের পাশে থাকবেন। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর সমঝোতা শেষ পর্যন্ত না হওয়ায় তিনি এই লড়াইয়ে থাকছেন না। কিন্তু তিনি তাঁর প্রস্তাবে উল্লেখ করেছেন গুজরাতেও কংগ্রেস বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো জায়গায় রয়েছে।
প্রশান্ত কিশোরের 'প্রেডিকশন'-এর প্রভাব দৃশ্যমান
এখন দেখার হিমাচল প্রদেশ হোক বা গুজরাত, কংগ্রেস কি পারবে বিজেপিকে কঠিন লড়াই দিয়ে ভোটে জয় হাসিল করতে? প্রশান্ত কিশোরের 'প্রেডিকশন'-এর প্রভাব দৃশ্যমান হওয়া সত্ত্বেও হিমাচল প্রদেশ নেতৃত্ব কংগ্রেস হাইকমান্ডকে অমান্য করছে। এটাই কংগ্রেসের সবথেকে বেশি সমস্যা। কংগ্রেস নিজেরা গন্ডগোল করেই বিজেপির জয় সহজ করে দিচ্ছে। এবার যেমন উত্তরাখণ্ডে জেতার মতো জায়গায় ছিল কংগ্রেস। কিন্তু জয় হাসিল করতে পারেনি। গোয়াতে বিজেপি বিরোধী হাওয়া কাজে লাগাতে পারেনি কংগ্রেস।
কংগ্রেসের কাছে বিরাট সুযোগ, কিন্তু ...
তেমনই এবার হিমাচল প্রদেশ তাদের হাতের মুঠো থেকে বেরিয়ে যাবে না তো। হিমাচল প্রদেশে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতি নিয়ে বিব্রত হিমাচলের বিজেপি সরকার। হিমাচল প্রদেশে ৩৫ শতাংশ বিধায়কের টিকিট এবার কাটতে পারে বিজেপি। দুর্নীতি নিয়ে জয় রাম ঠাকুর সরকারকে কড়া বার্তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপিও। এই অবস্থায় এবার কংগ্রেসের কাছে বিরাট সুযোগ।
উদয়পুরে চিন্তন শিবিরে কংগ্রেস হাইকমান্ড আদেশ
এবার রাজস্থানের উদয়পুরে চিন্তন শিবিরের সময় কংগ্রেস হাইকমান্ড আদেশ দিয়েছিল যে, সমস্ত রাজ্যে দলের রাজ্যস্তরের চিন্তন শিবির সংগঠিত হবে। সর্বভারতীয় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১ ও ২ জুন সমস্ত রাজ্যে রাজ্যস্তরের চিন্তন শিবিরের আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে উদয়পুর চিন্তন শিবিরে গৃহীত সিদ্ধান্ত ও ঘোষণার বাস্তবায়ন এবং রাজ্য স্তরের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা।
হিমাচল কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের নির্দেশ থেকে সরে গেল
আদেশে বলা হয়েছে, রাজ্যস্তরের চিন্তন শিবিরে রাজ্য কার্যনির্বাহী ছাড়াও রাজ্যের ইনচার্জ, সহ-ইনচার্জ, কংগ্রেস বিধায়ক এবং জেলা সভাপতিদের উপস্থিতি আবশ্যক। কিন্তু সবার আগে হিমাচল কংগ্রেস এই নির্দেশ থেকে সরে গেল। এআইসিসি-র সিদ্ধান্তের বিপরীতে গিয়ে হিমাচল প্রদেশ কংগ্রেস প্রধান প্রতিভা সিং ১ ও ২ জুন জেলা ও ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে একটি বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজ্যস্তরের চিন্তন শিবির আয়োজন করা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
কংগ্রেসের সমস্যা কংগ্রেসই, লড়াইয়ে আপও
উল্লেখ্য, হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন এই বছরের শেষের দিকে হওয়ার কথা। ক্ষমতাসীন বিজেপি নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও সরকারবিরোধী হাওয়া উঠেছে। অন্যদিকে, কংগ্রেস উপনির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর বিজেপিকে পরাজিত করার দাবি করছে। অন্যদিকে আম আদমি পার্টিও তৃতীয় শক্তি হিসেবে নির্বাচনী ময়দানে নামতে প্রস্তুত। একই পরিস্থিতি গুজরাতেও। গুজরাতেও কংগ্রেসের অন্দরে কোন্দল চরমে। সেখানেও তৃতীয় শক্তি হিসেবে আম আদমি পার্টি প্রবেশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস কতটা লড়াই জারি রাখতে পারবে, তা-ই দেখার।
ভোট কৌশলী সুনীল কানুগোলু কংগ্রেসের রণনীতি স্থির করবেন
তবে কংগ্রেস বসে নেই। প্রশান্ত কিশোরকে না পাওয়া গেলেও ভোট কৌশলী সুনীল কানুগোলু এসে গিয়েছেন। তিনি কংগ্রেসের রণনীতি স্থির করবেন। তাঁর নজরে এসেছে ২০২৪-এর মধ্যে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনগুলিও। তিনি কংগ্রেসকে এখন সঠিক রাস্তা দেখাতে পারেন কি না, তা বলবে ভবিষ্যৎ। আপাতত কংগ্রেসের সমস্যা তাঁরা নিজেরাই।