কালীঘাটে এসে মাথা মুড়িয়ে তৃণমূলে যোগ দেন আশিস
২০২১-এর বিধানসভা জিতেই ত্রিপুরায় পা রেখেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্য ছিল ত্রিপুরা থেকে বিজেপি শাসনের অবসান ঘটানো। তৃণমূলের সেই সংগ্রামে শামিল হতেই আশিস দাস বিজেপির প্রথম বিধায়ক হিসেবে দলত্যাগ করেন। কালীঘাটে এসে মাথা মুড়িয়ে বিপ্লব দেব সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিজেপি করার প্রায়শ্চিত্ত করেন তিনি। পরদিনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যোগ দেন তৃণমূলে।
তৃণমূলটা করা যায় না, তৃণমূলটা করতে পারছেন না
কালীঘাটে এসে আশিস দাস বলেছিলেন এতদিন ওই পার্টি করার এবং বিজেপির সরকারে থাকার পাপ মুছতে এসেছি। ২০২১-এ অক্টোবর মাস তিনি ঘটা করে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু আট মাসের মধ্যেই তাঁর মোহভঙ্গ হল। তাঁর মনে হল, এই তৃণমূলটা করা যায় না। তিনি তৃণমূলটা করতে পারছেন না। কারণ তৃণমূল তাঁর মতো বিধায়ককে কাজে লাগাতে পারছে না। তাই তিনি তৃণমূল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন।
আট মাস পরেই মোহভঙ্গ, তৃণমূল ছেড়ে কী জানালেন
বেশ কিছদিন ধরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে যাচ্ছিলেন আশিস দাস। শুক্রবার তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করলেন। মাত্র আট মাস পরেই তিনি তৃণমূল ছেড়ে দিলেন। এবার তিনি কোন দলে যোগ দেন, তা বলবে সময়। তিনি শুধু জানিয়েছেন, তৃণমূলটা করতে পারছি না। কেন করতে পারছেন না তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক।
পুরনোদের মূল্য নেই! বিজেপির পর তৃণমূলও ছাড়লাম
বিজেপি করার অপরাধে মাথা মোড়ানো বিধায়ক আশিস দাস বলেন, পুরনোদের মূল্য দেওয়া হচ্ছে না বলে বিজেপি ছেড়েছিলাম। তৃণমূলও দেখলাম তাই। এই দলেও যোগ্যদের কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এখানেও পুরনোরা গুরুত্ব পায় না। তিনি তো তৃণমূলে নতুন, তাহলে কোন এই তোপ। আশিসের কথায়, তৃণমূলে আমি নতুন হলেও আমি পুরনোদের সঙ্গে ছিলাম। সেটা একাংশের পছন্দ হয়নি। তৃণমূলে এত গ্রুপইজম যে এখানে থাকা যায় না।
তৃণমূল আসলে বিজেপিরই সুবিধা করে দিচ্ছে, অভিযোগ
তৃণমূলে মোহভঙ্গ হওয়া এই নেতার কথায়, তৃণমূল বাংলার পার্টি। ত্রিপুরার মানুষকে তা গুরুত্ব দেয় না। সম্মান দেয় না। একজন ত্রিপুরাবাসী হিসেবে আমি সেটা মানতে পারব না। তারপর কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের দুর্বল করে তৃণমূল আসলে বিজেপিরই সুবিধা করে দিচ্ছে। তাই তৃণমূল কতটা বিজেপিকে হারাতে চায়, তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। তাই ওই দল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
উপনির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ প্রাক্তন বিধায়কের
তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, আশিস দাস দলে আসার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা মন্তব্য করছিলেন। দলবিরোধী সেইসব মন্তব্য করা থেকে তাঁকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। এর পিছনে অন্য দলের মদত রয়েছে বলে জানিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, তিনি বুঝতে পেরেছেন আসন্ন উপনির্বাচনে তিনি টিকিট পাবেন না তৃণমূলে। তাই আগেভাগে পার্টি ছেড়ে দিলেন। এখন দেখার তিনি কোন দলে যোগ দেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, মানুষ চাইলে তিনি উপনির্বাচনে নির্দল হয়েই লড়বেন।