মধ্যপ্রদেশে মৃত্যুদণ্ড বদলেছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে
২০১১ সালের জুনে মধ্যপ্রদেশে চুরির জন্য তিন জন্য বাড়িতে ঢোকে। তারা তিন মহিলাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তিনজনকেই মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ জেলে তাদের ভাল আচরণ এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে মধ্যপ্রদেশের হাইকোর্টের মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ২৫ বছরের কারাদণ্ডে বদল করে দেয়। বলা হয়েছে মৃত্যুদণ্ড শুধুমাত্র বিরলতম বিরল ক্ষেত্রেই দেওয়া উচিত।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ
সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতি ইউইউ ললিত, এস রবীন্দ্র ভাট ও বেলা ত্রিবেদীর ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার বলেছে ১৯৮০ সালে বচন সিং বনাম পঞ্জাব সরকারে আদালতের লড়াইয়ে সর্বোচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের ওপরে জোর দিয়েছিল। সেখানে বেশ কয়েকটি বিষয় পর্যালোচনার ওফরে জোর দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে রয়েছে যে পরিস্থিতিতে অপরাধ সংগঠিত করা হয়েছিল ( চরম মানসিক বা মানসিক অস্থিরতায় কাজ করা, চাপে কাজ করা, অপরাধ করার জন্য নৈতিক যুক্তি), অভিযুক্তের বয়স, ঘটনার সময় মানসাকি অবস্থা, সংস্কারের সম্ভাবনা এবং অভিযুক্তরা সমাজের হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে কিনা।
দেখতে হবে মানসিক স্বাস্থ্য
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, দায়রা আগালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আগে অভিযুক্তের মনস্তাত্ত্বিক এবং মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন করতে হবে। দেখতে হবে অপরাধ করার সময় ওই ব্যক্তির মনে অবস্থা কী ছিল।
এছাড়াও সর্বোচ্চ আদালতের তরফে রাজ্যকে অভিযুক্তদের বয়স, পারিবারিক অবস্থা, অপরাধে পূর্বের যোগ, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অন্য তথ্য একসঙ্গে করারও নির্দেশ দিয়েছে।
জেল সুপার কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার যিনি থাকবেন, তাঁকে অভিযুক্তের জেলে আচরণ, কারাগারে করা কাজ এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির জড়িত থাকার প্রমাণ আদালতে পেশ করতে হবে। সেখানে কারাগারে থাকাকালীন সংস্কারমূলক অগ্রগতি হয়েছে কিনা, তার রিপোর্টও জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি ভাট রায় দিতে গিয়ে বলেছেন, বাস্তব পরিস্থিতি হল, এইসব নথি বেশিরভাগ সময়েই অনুপস্থিত থাকে।
৪ দশকেও পরিবর্তন হয়নি
আদালত বলেছে, বচন সিং-এর রায়ের পরে চার দশক ধরে এই বিষয়টির ওপরে যথাযথ নজরদারি করা হয়নি। পরিস্থিতি বিবেচনা করা যেমন জরুরি প্রয়োজন, ঠিক তেমনই ট্রায়াল কোর্টকে অবশ্যই অভিযুক্ত এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।