শ্রীলঙ্কা বিপুল অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। নামেই তাদের প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হয়েছে। আদতে তা বদলে যে কোনও লাভ হবে না তা জানাই ছিল। সম্প্রতি সেখানকার অবস্থা নিয়ে এক প্রাক্তন সাংসদ বলেছিলেন ভারতের ১৯৯১ সালের মতো অবস্থা দেশের। তারপর জানা গিয়েছিল যে সেখানে পেট্রোল আর একদিনের রয়েছে। ঠিক সেই কারণেই এবার জানা যাচ্ছে যে তারা ভারতের থেকে ৫০ কোটি ডলার ধার নিতে চলেছে।
শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভা দ্বীপরাষ্ট্রে একটি গুরুতর বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের মধ্যে পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্রয়ের জন্য ভারতের ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ চাওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা জ্বালানি পাম্পগুলিতে আর পেট্রোল নেই। এই অবস্থা রোধ করার জন্য পরিস্থিতিকে সহজতর করার জন্য বিভিন্ন বিকল্পের কথা ভাবছে, কারণ দেশটিতে আমদানি রফতানি কিছুই ঠিক করে হচ্ছে না। ফলে শ্রীলঙ্কা গুরুতর বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। হাতের পাঁচ এই ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের নব্য গঠিত মন্ত্রীসভা।
দেশটি একটি অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে যা ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের থেকে তাদের স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বলে জানা গিয়েছে। দ্বীপরাষ্ট্র আমদানির জন্য অর্থ প্রদানের জন্য ডলারের অভাবে প্রায় সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতির সাথে লড়াই করছে।
একটি ক্যাবিনেট নোটে বলা হয়েছে, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্রয়ের জন্য ভারতীয় ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চাওয়ার জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রীর প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেছেন, জ্বালানি কেনার জন্য ভারতীয় ব্যাঙ্কের ঋণ চাওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যেই তেল কেনার জন্য ভারতের থেকে ৫০ কোটি ডলার এবং স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার থেকে আরও ২০ কোটি ডলার পেয়েছে। সবমিলিয়ে মঙ্গলবার সঙ্কট-বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কা পেট্রোলের দাম ২৪.৩ শতাংশ এবং ডিজেলের ৩৮.৪ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঘাটতির কারণে দেশের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে জ্বালানির দামের রেকর্ড বৃদ্ধি করেছে।
সোমবার, ভারত বলেছে যে তারা শ্রীলঙ্কায় প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন পেট্রোল সরবরাহ করেছে, তার আগে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল সরবরাহ করেছিল ভারত। অর্থনৈতিক সংকট শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক সঙ্কটেরও সূত্রপাত করেছে এবং রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষের গদিও এখন টলমল। এই সংকট ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতির বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে ৯ মে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে।মুদ্রাস্ফীতির হার ৪০ শতাংশ বেড়েছে। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতি , ব্ল্যাকআউটের জেরে দেশব্যাপী বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে।