দেব–দেবী থাকলে পুজোর অধিকারও আছে
আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন জানিয়েছেন, 'যদি কোন দেবতা ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে দেবতা তার দেবত্ব বা পবিত্রতা হারায় না। কমপ্লেক্সের ভেতরে মূর্তিগুলি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে যে যদি মূর্তি থাকে, তবে পুজো করার অধিকারও রয়েছে।' উপাসনা করার সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে বলে আইনজীবীর যুক্তিকে নস্যাৎ করে বিচারক বলেন, 'উপাসনার অধিকার জনসাধারণের শৃঙ্খলার উপর সীমাবদ্ধ হতে পারে।' প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই এএসআই তাদের রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়ে জানিয়েছেন যে সংরক্ষিত স্মৃতিসৌধে প্রার্থনা করার অনুমতি নেই।
কুতুব মিনার বিতর্ক
জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্কের মাঝেই কুতুব মিনার কাণ্ড নিয়ে আলোড়ন চলছে গোটা দেশজুড়ে। প্রসঙ্গত, এই কুতুব মিনার নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধার পেছনে রয়েছেন এএসআইয়ের প্রাক্তন-আঞ্চলিক পরিচালক ধরমবীর শর্মা। তিনি দাবি করেছেন যে কুতুব মিনার কুতুব আল-দিন আইবাক নন, বরং হিন্দু শাসক রাজা বিক্রমাদিত্য তৈরি করেছিলেন, সূর্যের দিক পরিবর্তন পর্যবেক্ষণের জন্য। তিনি আরও দাবি করেছেন যে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি পাওয়া গিয়েছে কমপ্লেক্সের মধ্যে। এর আগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র বিনোদ বনসল দাবি করেন যে কুতুব মিনার আসলে একটি 'বিষ্ণু স্তম্ভ', ২৭টি হিন্দু-জৈন মন্দির ভেঙে প্রচুর সম্পদ মেলে। সেটি দিয়েই স্মৃতিস্তম্ভটি তৈরি করা হয়েছিল।
এএসআই কি বলছে
দেশজুড়ে জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে বিতর্কের মাঝে কুতুব মিনার নিয়েও জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া কুতুব মিনার সংক্রান্ত একটি মামলায় তাঁদের জবাব জমা দিয়েছে সকেত আদালতে, যেখানে মন্দিরকে পুনরুজ্জীবিত করার আবেদনের বিরোধিতা করা হয়। এএসাই জানিয়েছে, ১৯১৪ সাল থেকে কুতুব মিনার একটি সংরক্ষিত স্মৃতিসৌধ এবং এর কাঠামো এখন বদলানো সম্ভব নয়। এএসআই বলে, '১৯১৪ সাল থেকে সংরক্ষিত সৌধ হিসেবেই কুতুব মিনারকে রক্ষা করা হয়েছে। এর কোনও অংশের, কাঠামোর পরিবর্তন সম্ভব নয়। সংরক্ষিত এলাকা বলে চিহ্নিত এলাকায় কোনও ভাবেই নতুন করে প্রার্থনার অনুমোদন দেওয়া যায় না।'
প্রাচীন সৌধ এবং পুরাতাত্ত্বিক স্থান নিয়ে আইন
১৯৫৮ সালের আইন অনুযায়ী প্রাচীন সৌধ এবং পুরাতাত্ত্বিক স্থান বা ধ্বংসাবশেষে নতুন করে গঠন পাল্টানো বা সেখানে অন্য ধরনের রীতিনীতি চালু করা বেআইনি। যখন থেকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে সেই সময়ের পর পুনরায় পুজোপাঠ চালু করা সেখানে সম্ভব নয়। এদিন এএসআই তাঁদের হলফনামা সকেত জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক নিখিল চোপড়ার এজলাসে জমা দেয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব তাঁর নির্দেশে এএসআইকে ওই দুই গণেশের মূর্তি সহ কুতুব মিনারে রাখা হিন্দু ও জৈনদের বিভিন্ন মূর্তির ছবি সাইনবোর্ডে এঁকে দিতে বলেছেন। সেখানে ওই সব মূর্তিগুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।