কী বলা হচ্ছে ?
ব্যাপক হারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ভারতের অর্থনীতির জন্য খুবই খারাপ হতে চলেছে। জানা যাচ্ছে এটি এটি মুদ্রাস্ফীতিকে বাড়িয়ে দিতে পারে এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। মুডি'স ইনভেস্টর সার্ভিসের সোমবারের যে রিপোর্ট তাতে এমনটাই বলা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে দেশের এমন ভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি আরও সঙ্কটের মুখে পড়বে । ফলে দেশ আরও চরম খারাপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। রেটিং এজেন্সি বলেছে যদিও ভারতে তাপমাত্রার পরিস্থিতি যে সর্বত্র চরমে পৌঁছে গিয়েছে তা নয়। সাধারণত মে এবং জুনে এটাই ঘটে থাকে। তবে এই বছর নয়াদিল্লি মে মাসে পঞ্চমবার তাপপ্রবাহের মুখে পড়েছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গিয়েছিল। সেটাই চিন্তার কারণ বলা হচ্ছে।
কিন্তু এর কারণ কী ?
বলা হচ্ছে ভারতে জুনে শেষ হওয়া শস্য বছরে গম উৎপাদনের হার কমে ৫.৪ শতাংশ কমে ১০৫ মিলিয়ন টন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর কারণ উচ্চ তাপমাত্রা। এর জেরে গমের ফলন কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মে জুন মাসে মাসে ভারতে বেশি গরম হলেও তা দীর্ঘমেয়াদে চলে না বা বারবার হয় না। এবার সেটা হচ্ছে তাঁর কুফল মিলবে আগামী দিনে। ফলে মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়াবে। এর ফলে ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে। সরকার গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে এবং এর পরিবর্তে স্থানীয় ব্যবহারের দিকে বেশি নজর দিতে বাধ্য হয়েছে। আগামী দিনে এর প্রভাব আরও বেশি হতে পারে। মুডি'স বলেছে ভারাতের গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা এমন সময়ে করা হয় যখন ভারত - বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গম উৎপাদক এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সামরিক দ্বন্দ্বের পরে গমের বৈশ্বিক চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বহু দেশকে তারা তা সরবরাহ করে অর্থনৈতিক হার চাঙ্গা করতে পারত কিন্তু আবহাওয়ার কুপ্রভাব তা হতে দেয়নি।
রাশিয়া ইউক্রেন সংঘাত
ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী গমের দাম ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। সংস্থাটি বলেছে যে নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের রপ্তানি অংশীদাররা সম্ভবত গমের দাম আরও বাড়াতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, যা ২০২১ অর্থবছরে ভারতের গম রপ্তানির ৫৬.৮ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা (৮.৩ শতাংশ), সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (৬.৫ শতাংশ) এবং ইন্দোনেশিয়া (৫.৪ শতাংশ) কিনেছিল।
কয়লার ঘটতি
মুডি'স আরও বলেছে যে কয়লার উৎপাদন কম হওয়ার ফলে ফলে শিল্প ও কৃষি উৎপাদনে দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুত বিভ্রাট হতে পারে, যার ফলে আউটপুট উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে এবং ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির উপর আরও প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে যদি জুনের পরেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকে। প্রসঙ্গত , জ্বালানি থেকে শাকসবজি এবং রান্নার তেল পর্যন্ত সমস্ত জিনিষের দাম বৃদ্ধির ফলে পাইকারি মূল্যস্ফীতি এপ্রিল মাসে রেকর্ড ১৫.০৮ শতাংশ এবং খুচরা মূল্যস্ফীতি প্রায় আট বছরের সর্বোচ্চ ৭.৭৯ শতাংশে বেড়ে গিয়েছে৷