জয়দীপের পদত্যাগ:
হঠাৎই ছন্দ পতন ঘটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। সুতারকিনের আইএফএ অফিস ছাড়ার আগে নিজের পদত্যাগপত্র তিনি পাঠিয়ে দেন চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত এবং সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আকস্মিক পদত্যাগের কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত এবং শরীরিক অসুস্থতা'কে উল্লেখ করেছেন তিনি।
জয়দীপের বক্তব্য এবং চেয়ারম্যানের প্রতিক্রিয়া:
শুক্রবার সকালে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেছেন, "বাংলার ফুটবল-এর পক্ষে যেটা ভাল সেটাই করেছি, আশা করবে পরবর্তীতেও বাংলা ফুটবলের উন্নতিতে যা মঙ্গলময় সেটাই করা হবে। যে হেতু, এএফসি'র যোগ্যতা অর্জনকারী পর্ব রয়েছে তাই ১৭ জুন পর্যন্ত দায়িত্ব সামলানোর কথা আমি জানিয়েছি। যারা নতুন দায়িত্বে আসবেন, তাঁরা যদি মনে করেন বাংলা ফুটবলের উন্নতির ক্ষেত্রে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়কে প্রয়োজন, তাঁরা যে কোনও সময়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।" যদিও সূত্রে খবর, ঘনিষ্ঠ মহলে জয়দীপ জানিয়েছে, যাথার্থ সম্মান না পাওয়ার কারণে এবং বাংলার ফুটবলের উন্নতিতে সাধনের যে লক্ষ্য তাঁর সেই লক্ষ্যর পথে এগতে গিয়ে বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত প্রতিকূলতার সম্মুখীন হওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
সচিবের পদত্যাগ সম্পর্কে আইএফএ-র চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত বলেছেন, "এই রকম কিছু হতে পারে মনে হয়েছিল তাই আমি ওকে (জয়দীপ মুখোপাধ্যায়) বুঝিয়ে ছিলাম পদত্যাগ না করতে এবং মেয়াদ পূর্ণ করতে। ও ১৭ জুন পর্যন্ত দায়িত্ব এখনও রয়েছে। তার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
আইএফএ-কে নতুন রূপদান:
উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের টার্ম শেষ হওয়ার পর সচিব পদে যখন জয়দীপ বসেন তখন আইএফএ-এর দেনা ছিল ১৪ কোটি টাকারও বেশি। পুরো টার্ম শেষ না করেও মাত্র তিন বছরে সেই ঋণের পরিমান তিনি কমিয়ে এনেছে ৫-৬ কোটি টাকায়। পাশাপাশি তিনি যখন চেয়ারে বসেছিলেন তখন আইএফএ-এর অ্যাকাউন্টে ছিল ১৫ লক্ষ টাকা, সেখান থেকে ১ কোটি ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স করে পদত্যাগ করছেন বাংলার নিয়মক সংস্থার ইতিহাসে কনিষ্ঠতম সচিব। একাধিক স্পনসরও তিনি নিয়ে আসেন আইএফএ-তে।
জয়দীপ মুখোপাধ্যায় দায়িত্বে আসার পর ঢেলে সাজানো হয় আইএফএ-কে মান্ধাতার আমলের ভাঙাচোরা অফিস বদলে ঝাঁ চমচকে আধুনিক রূপ দেওয়া হয় সুতারকিনের দফতরের। কর্মীদের নিয়ে আসা হয় নিয়মানুবর্তিতা মধ্যে, যা অনুপস্থিত ছিল উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের জামানায়। বাংলা ফুটবলের মরা গাঙে জয়দীপ নিয়ে এসেছেন একের পর এক স্পনসর। সল্টলেক স্টেডিয়াম মেট্র্রো স্টেশনের নাম দ্য ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন সল্টলেক স্টেডিয়াম মেট্র্রো স্টেশন করার নেপথ্যে অনেক বড় অবদান ছিল তাঁর। বাংলার ফুটবলের ইতিহাসে ডার্বি ম্যাচে টস সোনার কয়েনে প্রথম করিয়েছিলেন জয়দীপ। এছাড়া সীমিত ক্ষমতার মধ্যে সন্তোষ ট্রফিতে রানার্স হওয়া বাংলা দলকে বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে আইএফএ।
অতীতেও পদত্যাগ এবং পরবর্তীতে তা ফিরিয়ে নেওয়া:
এর আগেও গত বছর সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পদত্যাগ পত্র চেয়ারম্যানকে পাঠিয়েছিলেন জয়দীপ। কিন্তু সে বার প্রায় দেড় মাস পর তিনি সেই পদত্যাগ পত্র ফিরিয়ে নেন বিভিন্ন অনুরোধে। এখন দেখার এ ক্ষেত্রে আর তিনি সে ভাবে ফিরে আসেন কি না!