যমুনোত্রী হাইওয়েতে ধস, আটকে পড়লেন তিন হাজারের বেশি চারধাম তীর্থযাত্রী

বুধবার রাতে যমুনোত্রী হাইওয়েতে রানা চাট্টি ও সায়ানা চাট্টি অঞ্চলের মাঝে ১৫ মিটার জায়গা জুড়ে ধস নামে। ফলে ওই এলাকা দিয়ে বাস ও অন্যান্য বড় গাড়ির যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে যমুনোত্রী ধামের দিকে যাত্রা ব্যাহত হয়। সরকারিভাবে জানা গিয়েছে, তিন হাজারের বেশি তীর্থযাত্রী আটকে পড়েছেন এখানে।

চলছে শুধুমাত্র ছোট যান

উত্তরকাশীর বিপর্যয় মোকাবিলা পরিচালনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে বাস ও ভারী যান চলাচল একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হলেও শুধুমাত্র ছোট যানগুলিকে বারকোট থেকে জন কি চাট্টির মাধ্যমে বের করে আনা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, '‌রানা চাট্টি ও সায়ানা চাট্টি অঞ্চলের মাঝে যমুনোত্রী ন্যাশনাল হাইওয়ের ১৫ মিটার জায়গা জুড়ে ধস নামে যার ফলে বাস ও ভারী যান যেগুলিতে করে তীর্থযাত্রীরা যাচ্ছিলেন, সেগুলির চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, একমাত্র ছোট যানগুলিকে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।'‌

জানা গিয়েছে, একটি ট্র‌্যাক্টর, ২টি জেসিডব্লিউ যন্ত্র, একটি টিপার, একটি পোকল্যান্ড ও ১৫ জন শ্রমিক দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়েছেন এবং চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে রাস্তা মেরামতের কাজ সম্পন্ন করা যায়।

কোন কোন রাস্তা খোলা রয়েছে

প্রায় ২৪টি বাস ও ১৫টির ওপর মিনিবাস ভর্তি তীর্থযাত্রীরা এই ধসের কারণে আটকে পড়েন এবং তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিকটবর্তী আশ্রমে ও সায়নচাট্টি অতিথিশালায়।

তবে হৃষিকেশ-গঙ্গোত্রী হাইওয়ে, বিকাশ নগর-বারকোট জাতীয় সড়ক, চিনায়লাই সৌদ-সুভাখোলি, উত্তরকাশী-লামগাঁও-শ্রীনগর ও মুসৌরি-দেরাদুন রোড খোলা আছে।

এখনও পর্যন্ত চারধাম যাত্রায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ও অন্যান শারীরিক অসুস্থতার জন্য মোট ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে যমুনোত্রীতে মারা গিয়েছেন ১৫ জন। গঙ্গোত্রীতে মারা গিয়েছেন চারজন। বদ্রীনাথে মারা গিয়েছেন আটজন। কেদারনাথে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন মারা গিয়েছেন বৃহস্পতিবার সকালে, জানিয়েছেন রুদ্রপ্রয়াসের প্রধান মেডিক্যাল অফিসার বিকে শুক্লা।

তীর্থযাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে নজর

কেদারনাথের নোডাল অফিসার কেএন গোস্বামী বলেন, '‌কর্নাটকের মাণ্ডিয়ার বাসিন্দা ৫৭ বছরের নাগরান্তা মারা গিয়েছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এবং কেদারনাথে তৈরি হওয়া বিবেকানন্দ হাসপাতালের কর্মীরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।'‌ তিনি আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন যে কোনও তীর্থযাত্রী রাতে খোলা আকাশের নীচে ঘুমোবেন না। তিনি বলেন, '‌আমরা নজর রাখছি যাতে কোনও তীর্থযাত্রী রাতে খোলা আকাশের নীচে না ঘুমোন। যদি তীর্থযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তাহলে গাড়োয়াল মণ্ডল বিকাশ নিগমের হলঘর খুলে দেওয়া হবে। সেখানে তাঁরা রাতে থাকবেন।'

চারধাম যাত্রা করেছেন সাড়ে ৬ লক্ষ জন

এখনও পর্যন্ত চারধাম যাত্রা সম্পূর্ণ করেছেন সাড়ে ৬ লক্ষ মানুষ। বুধবার কেদারনাথে পৌঁছেছেন ১৬ হাজার ৭৮৮ জন। এই নিয়ে কেদারনাথ দর্শন করলেন ২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৭১১ জন। সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত বদ্রীনাথ দর্শন করেছেন ১ লক্ষ ৮৮ হাজার ৩৪৬ জন। যমুনোত্রী দর্শন করেছেন ১ লক্ষ ৬ হাজার ৩৫২ জন। গঙ্গোত্রী দর্শন করেছেন ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৮৫৫ জন।

কেদারনাথের নির্মাণ কাজ দেখতে মুখ্য সচিব

বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরাখণ্ডের মুখ্য সচিব এস এস সান্ধু কেদারনাথ মন্দিরে পৌঁছান এবং কেদারনাথ নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছেন। পরিদর্শনের সময়, মুখ্য সচিব কেদারনাথে সমস্ত নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করা এবং কাজের উচ্চ গুণমান বজায় রাখা যাতে হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তীর্থযাত্রী পুরোহিতদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণের কাজ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, সকল কর্মকর্তা ও তীর্থযাত্রী পুরোহিতদের সমন্বয়ে ধামের উন্নয়ন কাজ করা উচিত।

প্রতীকী ছবি

More UTTARAKHAND News  

Read more about:
English summary
yamunotri highways 15 metre stretch caves stranded over 3 thousand pilgrims