ইউক্রেনের হাতে আত্মঘাতী ভয়াবহ ড্রোন, রাশিয়ার পরিণতি কি বদলে যাবে?

By: Satyaki Tat

April 26, 2022

Share

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের আগুন নেভার কোনও সম্ভাবনা এখনও দেখা যাচ্ছে না। রুশ আগ্রাসন চলছে পুরোদমেই। এবার সেই আগ্রাসন ঠেকাতে ইউক্রেনের হাতে এল ৮০০ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন সাহায্য, যার মধ্যে রয়েছে একটি ড্রোন, যার মারণক্ষমতা ভয়ানক‌। এই ড্রোন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানি আত্মঘাতী বিমানবাহিনী কামিকাজের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে লক্ষ‍্যবস্তুর ওপর, এবং তাকে ধ্বংস করে দেয়। তার নাম ‘ফিনিক্স ঘোস্ট’।

পেন্টাগন জানাচ্ছে যে, এই ড্রোন নিয়ে আমেরিকান বায়ুসেনা বেশ কিছুদিন আগে থেকেই গবেষণা করছিল। রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর যখন ইউক্রেন আমেরিকার কাছে সাহায্য চায়, তখন তাদের কাছে সুপারিশ আসে ফিনিক্স ঘোস্টের। পেন্টাগন মনে করছে, অ্যাভেক্স এরোস্পেস এবং বায়ুসেনা-নির্মিত এই ড্রোন ইউক্রেনের পরিস্থিতির জন্য একেবারে আদর্শ, বিশেষ করে পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের জন‍্য।

তবে বিশ্বের কাছে এই ড্রোন এখনও নতুন এবং এর বিষয়ে এখনও পর্যন্ত বিস্তারিত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। এটুকু জানা গিয়েছে যে, কৌশলগত হামলার জন্য এই ড্রোনটি আদর্শ। এটি লক্ষ‍্যের কাছাকাছি পৌঁছে বিস্ফোরণ ঘটায়, নিজের সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ‍্যবস্তুকেও একেবারে চুরমার করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই ফিনিক্স ঘোস্ট। এই ড্রোনে রয়েছে ইনফ্রারেড রশ্মি, যার সাহায্যে এটি রাতের অন্ধকারেও কাজ করতে পারবে, যে কারণে এটি আরও ভয়ংকর।

আরও পড়ুন: ভয়াবহ মারণাস্ত্র রাশিয়ার হাতে, ফিরে আসছে ঠান্ডা যুদ্ধের স্মৃতি?

পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কার্বি জানাচ্ছেন, এই ড্রোনের সঙ্গে মিল রয়েছে এরোভিরনমেন্ট সুইচব্লেড ড্রোনের। দু’টি ড্রোনকেই বলা হয় কামিকাজে ড্রোন, তাদের আত্মঘাতী হানার ক্ষমতার জন্য। সুইচব্লেডের মতোই ফিনিক্সে রয়েছে নজরদারি ক্যামেরাও, যার সাহায্যে শত্রুর এলাকায় নজরদারি সম্ভব।

ইউক্রেনকে ৪০০টি সুইচব্লেড ইতিমধ্যেই পাঠিয়েছে আমেরিকা, এবং ১২১টি ফিনিক্স ঘোস্ট ড্রোন নতুন প্যাকেজে তারা পাঠাবে। এই দুই ধরনের ড্রোনের খুব বেশি তফাৎ না থাকলেও একটি বড় পার্থক্য হল, সুইচব্লেড বাতাসে ৩০-৪০ মিনিট ভেসে থাকতে পারে, সেখানে ফিনিক্স ঘোস্টের ক্ষমতা প্রায় ছয় ঘণ্টার। তবে কত দূর অবধি এই ড্রোন উড়ে যেতে পারবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

তবে একটা প্রশ্ন বারবার উঠে আসছে। আমেরিকা কি ইউক্রেনকে সামনে রেখে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে? মনে রাখা দরকার, এই আটশো মিলিয়নের সাহায্য কিন্তু অতিরিক্ত সাহায্য। এর আগেও কোটি কোটি ডলারের সাহায্য তারা ইউক্রেনকে পাঠিয়েছে। যুদ্ধ চলেই যাচ্ছে, মারা যাচ্ছেন ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ, তাহলে কি আমেরিকার উচিত নয় অস্ত্রসাহায্যের জায়গায় ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের জন্যে সাহায্য পাঠানো? বা যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করা? ইউক্রেন কি এখন মার্কিন যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর অস্ত্র পরীক্ষার ঘাঁটি হয়ে উঠল?

অন্যদিকে রাশিয়াও থামার কোনও লক্ষণ দেখাচ্ছে না। চলছে নির্বিচারে গণহত্যা, নিরপরাধ মানুষ নিধন। কতদিন এই ভাবে যুদ্ধ চলতে থাকবে, বিশ্ববাসীর কাছে সেটাই উদ্বেগের!

More Articles

error: Content is protected !!