শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন সাংমা
দীর্ঘদিন ধরেই শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন মুকুল সাংমা। উত্তরপূর্বের ছোট রাজ্য মেঘালয়ে তাঁকে প্রায় কোণঠাসা করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ সেখানকার রাজনৈতিক মহলের একাংশের। রাজ্যে কংগ্রেসের প্রধান হিসেবে ভিনসেন্ট পালাকে নিযুক্ত করার পর থেকেই অসন্তোষ আরও বাড়ে। দুই নেতাকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন রাহুল গান্ধী। তবে মুকুল সাংমা যে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন, সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে। নিজের কলকাতা সফরের সময় মুকুল সাংমা তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
সাহায্য করেছেন প্রশান্ত কিশোর এবং লুইজিনো ফেলেইরো
মুকুল সাংমাকে অনেকে প্রশান্ত কিশোরের ঘনিষ্ঠও বলে থাকেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী কলকাতায় আসার পরে মুকুল সাংমা প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এছাড়াও তৃণমূলে যোগ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হওয়া গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনো ফেলেইরোর সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক মুকুল সাংমার। কেননা লুইজিনো ফেলেইরো কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উত্তর-পূর্বের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ২০১৯-এ সেখানে কংগ্রেসের ভাঙন রুখেছিলেন।
২০১৯-এ মেঘালয়ে কংগ্রেসের ভাঙনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল
শুধু এই ২০২১-এর শেষ লগ্নেই নয় ২০১৯-এ মেঘালয়ে কংগ্রেসের ভাঙনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই সময় ১১ জন বিধায়ক (যাঁদের বেশিরভাগই গারো পার্বত্য এলাকার) ন্যাশনাল পিপল পার্টিতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে একরকম সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন। সেই সময় লুইজিনো ফেলেইরোই কংগ্রেসকে সেখানে ভাঙনের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন। ফেলেইরো বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, মেঘালয়ে কংগ্রেসের ভাঙনের কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু দুবছর পরে সেই লুইজিনো ফেলেইরোর হাত ধরেই মেঘালয়ে কংগ্রেসের ভাঙন সম্পন্ন হল বলেই বলছে সেখানকার রাজনৈতিক মহল।
উত্তর-পূর্বে সংগঠন বাড়াতে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল
২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা জয়ের পরে তৃণমূল ত্রিপুরায় সংগঠন গড়ার উদ্দেশে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেখানে কংগ্রেস ভেঙে সুবল ভৌমিক যোগ দেন তৃণমূলে। অসমের সুম্মিতা দেব তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় পাঠানো হয়। অন্যদিকে গোয়ার মতো ছোট রাজ্যেও সেখানকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের সাতবারের বিধায়ক লুইজিনো ফেলেইরো তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর থেকেই মেঘালয় নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের এক মন্ত্রীর ইঙ্গিত করেছিলেন তারা মুকুল সাংমাকে পেতে ঝাঁপিয়েছেন।
মেঘালয় বিধানসভায় রাজনৈতিক শক্তি
৬০ আসন বিশিষ্ট মেঘালয় বিধানসভায় এই মুহূর্তে এনডিএ-এর আসন রয়েছে ৪০ টি। সেখানে কংগ্রেসের আসন ছিল ১৮। এদিন তার মধ্যে থেকে ১২ জন তৃণমূলে যোগ দিলেন। ফলে সেখানে বিরোধী দলের মর্যাদা হারাল কংগ্রেস।