কৃষি আইন বাতিল
গুরুনানকের জন্মদিবসে কৃষি আইন বাতিলের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ঘোষণা করেছেন কৃষক দরদী বিজেপি সরকার। তাই কৃষকদের বিরোধিতা মেনে নিয়ে তাঁদের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। তাঁদের কথা ভেবেই কৃষি আইন ৈতরি করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে যদি তাঁদের একান্তই মত না থাকে তাহলে সেটা ফিরিয়ে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরেই উল্লাসে ফেটে পড়েছিল গোটা দেশ। কৃষকরা সাময়িক ভাবে আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু যতক্ষণ না কৃষি আইন ফেরানোর আইনি প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে ততক্ষণ তাঁরা আন্দোলন আর প্রত্যাহার করবে না বলে জানিয়েছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠক
শীতকালিন অধিবেশনের আগে আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার বসছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেই বৈঠকেই কৃষি আইন বাতিলের প্রস্তাব পেশ করা হবে। এবং অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে মন্ত্রিসভা নাকি আগামিকালই তার অনুমোদন দেবে। কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক নাকি ইতিমধ্যেই কৃষি আইন বাতিলের প্রস্তাব তৈরি করে ফেলে। এমনই খবর জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সূত্রের খবর কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর প্রথম মন্ত্রিসভায় কৃষি আইন বাতিলের বিলটি পেশ করবেন। তাতে কৃষি আইনের তিনটি আইন বাতিলের প্রস্তাব দেওয়া হবে । তাতে নাকি বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে বিলটির অনুমোদন দেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তারপরে শীতকালীন অধিবেশনে আইনটি বাতিলের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে। ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে শীতকালীন অধিবেশন।
৫ রাজ্যের ভোট থেকে সিদ্ধান্ত
মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে বলে মনে করা হচ্ছে। পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, হিমাচলপ্রদেশ,গোটা এবং মণিপুর এই ৫ রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে ২০২২ সালে। তারমধ্যে পাঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজেপির কাছে। কৃষি আইনের প্রতিবাদে মূলত পাঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশের কৃষকরাই আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেকারণে ভোট দখলে রাখতে শেষ পর্যন্ত কৃষি আইন বাতিলের সিদ্ধান্তে হাঁটতে হয়েছে মোদী সরকারকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই প্রিয়াঙ্কা গান্ধী চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন যদি উদ্দেশ্য সৎ হয় তাহলে কোনওভাবে অজয় মিশ্রের সঙ্গে যেন তিনি এক মঞ্চে না থাকেন। বরুণ গান্ধী চিঠি লিখে মোদীকে বলেছিলেন এই সিদ্ধান্ত আগে নিলে ৭০০ কৃষকের প্রাণ বাঁচত। মৃত কৃষকদের পরিবারকে ২ কোটি টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এখনই আন্দোলন প্রত্যাহার নয়
মোদী সরকার কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করলেও কৃষক সংগঠনগুলি এখনই পুরোপুরি আন্দোলন প্রত্যাহার করতে চাইছে না। তাঁরা ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারণ ২৯ নভেম্বর থেকে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সেদিন সংসদ পর্যন্ত ট্র্যাক্টর ব়্যালি করবেন তাঁরা। শীতকালীন অধিবেশনে কৃষি আইন বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর তাঁরা আন্দোলন নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁরা একটি দাবি পত্রও পাঠিয়েছেন। তাতে অজয় মিশ্রের গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।