দিল্লি সফরে মমতা
ফের দিল্লি যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি সপ্তাহেই দিল্লি যাওয়ার কথা তাঁর। ২২ থেকে ২৫ নভেম্বরের মধ্যেই দিল্লি সফর করবেন তিন। ওদিকে আবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে ২৯ নভেম্বর থেকে। কাজেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরের সময় রাজনৈতিক নেতাদের সমাগম থাকবে সেখানে। দিল্লি সফর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গভীর রাজনৈতিক সমীকরণ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ গতবার বাদল অধিবেশন চলাকালীন দিল্লি গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। তার পরে গোটা দেশেই একাধিক রাজ্য থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান বেড়েছে। ত্রিপুরা, গোয়া, উত্তর প্রদেশে একাধিক রাজনৈতিক নেতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে। লোকসভা অধিবেশন শুরুর আগে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমোর দিল্লি সফরকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বিজেপিও।
বরুণ গান্ধীকে নিয়ে জল্পনা
এদিকে আবার শোনা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরে বিজেপির হেভিওয়েট নেতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতে পারেন। সেই খবরের সূত্র ধরেই বরুণ গান্ধীর নাম ভাসছে রাজনৈতিক মহলে। গত কয়েক মাস ধরেই বিজেপিতে কার্যত একঘরে হয়ে রয়েছেন বরুণ গান্ধী এবং মানেকা গান্ধী। বিজেপি সাংসদ প্রকাশ্যেই দলের বিরুদ্ধে একাধিক কথা বলেছেন। বিশেষ করে লখিমপুর খেরির ঘটনার পর বরুণ গান্ধীর লেখা যোগী সরকারকে চিঠি শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। বরুণ গান্ধী এই ঘটনায় মূল অভিযুক্তের গ্রেফতারি দাবি করে যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয় মোদী সরকারের কৃষি আইনের প্রতিবাদ জানিয়ে বিজেপি সরকারের প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন তিনি। তারপরই বিজেপির এগজিকিউটিভ কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয় বরুণ গান্ধী এবং মানেকা গান্ধীকে। কৃষি আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন বরুণ গান্ধী। তাতে তিনি দাবি করেছিলেন মৃত কৃষকদের পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে যেন আর্থিক সাহায্য করা হয়। এমনকী এই সিদ্ধান্ত যদি মোদী সরকার আগে নিতেন তাহলে ৭০০ কৃষকের প্রাণ বাঁচত বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন বরুণ গান্ধী।
মোদীর সঙ্গে সাক্ষাত মমতার
জানা গিয়েছে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও সাক্ষাত করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে রাজ্যের দাবি দাওয়া নিয়ে কথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মধ্যমগ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন আম্ফান ও ইয়াসের ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও পুরো হাতে পায়নি রাজ্য। সেসব নিয়েও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন তিনি। সেই বৈঠকে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ রাজ্যে বিএসএফের সীমানা বৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে বিধানসভায় প্রস্তাবও পাস হয়েছে। সম্প্রতি সিতাইয়ে গরুপাচারকারী সন্দেহে বিএসএফের গুলিতে ৩ জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই বিএসএফের বিরুদ্ধে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল রাজনৈতিক মহল।
২০২৪-র স্ট্র্যাটেজি
২০২৪-র লোকসভা ভোটের স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ করতে শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। একাধিক রাজ্যে সংগঠন বিস্তার শুরু করে দিয়েছে। সামনেই ত্রিপুরায় পুরভোট। প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ত্রিপুরায় পুরভোটে প্রচারে জোর দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামিকালই আগরতলা উড়ে যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে আবার গোয়াতেও সংগঠন বাড়াতে শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে নফিসা আলি থেকে শুরু করে লিয়েন্ডার পেজের মত তারকা যোগ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসে। গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁকে আবার রাজ্যসভার টিকিট দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। কাজেই একেবারে মেপে মেপে পা ফেলছে তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তর প্রদেশেও দুই কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। মেঘালয়কেও টার্গেট করে রেখেছেন তাঁরা। লোকসভা অধিবেশনের আগে দিল্লিতে গিয়ে সর্বভরতীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতিটা মেপে নিতে চাইছেন তিনি।