মণিপুরের সেনা কনভয়ে যে জঙ্গি হামলা হয়েছে তার দায় স্বীকার করল পিপলস লিবারেশন আর্মি এবং মণিপুর নাগা পিপলস ফ্রন্ট নামে দুটি স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন।
পিপলস লিবারেশন আর্মি বা পিএলএ ১৯৭৮ সালে তৈরি করেছিলেন এন বিশ্বেশ্বর সিং। তার মূল দাবি ছিল ভারত থেকে আলাদা করে মণিপুরকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করা।
মার্কসিস্ট-লেনিনিস্ট এবং মাও মতাদর্শে এই সংগঠন বিশ্বাসী। পিপলস লিবারেশন আর্মি হল মণিপুর পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের সদস্য। যে সংগঠন বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনকে একজোট করে কাজ করে। এবং এই ধরনের নাশকতামূলক কাজকর্ম চালিয়ে থাকে।
এমন এক কাপুরুষের মতো হামলায় সব মিলিয়ে মোট ৮ জনের প্রাণ গিয়েছে। এই ঘটনায় সারাদেশে হাহাকার পড়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কড়াভাবে দমনের কথা বলেছেন।
২০১৮ সালের জুন মাসে এই রাজ্যের চান্দেল জেলায় সেনার ওপর হামলা হয়েছিল। তারপর গত তিন বছরের বেশি সময় এখানে সেভাবে কোনও হামলা হয়নি। সেই ঘটনায় ১৮ জনের প্রাণ গিয়েছিল। এবং বেশ কিছু লোক আহত হয়েছিলেন। এদিন প্রাণ গিয়েছে ৮ জনের এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন।
গত কয়েক দশকের হিংসা এবং বিচ্ছিন্নতার আগুন নিভিয়ে মণিপুর যখন অনেকটাই শান্ত হয়েছে তখন এমন ঘটনা কিন্তু নিঃসন্দেহে ফের একবার স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করবে। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি মণিপুর, মিজোরাম সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের শান্তি ভঙ্গ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ তা কঠোরভাবে দমন করে চলেছে। তা সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা কিন্তু নিঃসন্দেহে উদ্বেগের।
অসম রাইফেলসের ওপরে এদিন আক্রমণ হয়েছে। এই অসম রাইফেলস হল দেশের সবচেয়ে পুরনো আধাসেনা বাহিনী। ১৮৩৫ সালে ব্রিটিশ আমলে এর পথ চলা শুরু হয়। অসম রাইফেলস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন থাকলেও কাজ করে ভারতীয় সেনার নির্দেশমতো। অর্থাৎ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ জুরিসডিকশন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তবে অপারেশনাল কন্ট্রোল ভারতীয় সেনার হাতে।