রাজনৈতিক স্বার্থে আলাদা করা হচ্ছে হাওড়া এবং বালিকে, বিস্ফোরক অভিযোগ দিলীপের

১৯ ডিসেম্বর হাওড়ায় পুরসভা ভোট করাতে চায় রাজ্য সরকার। হাওড়া এবং বালি পুরসভাকে আলাদা করার প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে বিধানসভায়। এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বুধবার ইকোপার্কে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে নিশানা করে বলেছেন পুরোটাই রাজনৈতিক স্বার্থে এই কাজ করছে রাজ্য সরকার। প্রকাশ্যে এমনই অভিযোগ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি।

হাওড়ায় পুরভোট

উপনির্বাচন শেষ হতেই রাজ্যে পুরভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। ১৯ ডিসেম্বর হাওড়ায় পুরভোট করাতে চাইছে রাজ্য সরকার। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে তারা। সেটার অনুমোদনও প্রায় হয়ে গিয়েছে। নির্বাচন কমিশন তাতে সম্মতি জানিয়েছে বলে খবর। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। শুক্রবার এই নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে পুরভোট নিয়ে রাজ্য সরকারের তৎপরতার তীব্র বিরোধিতা করেছে বিজেপি। গতকালই এই নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

হাওড়া ও বািল পুরসভা আলাদা করার প্রস্তাব

গতকাল বিধানসভা অধিবেশনে পুরসভা ভোট নিয়ে আলোচনার সময় হাওড়া ও বালি পুরসভাকে আলাদা করার প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুর আইন সংশোধনীর জন্য প্রস্তাব আনছে সরকার। ১৯ ডিসেম্বর ভোট হবে হাওড়া পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ডে। তবে বালি পুরসভায় ১৬টি ওয়ার্ডের ভোট হবে না বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। কারণ বালিকে হাওড়া থেকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। পুর আইন সংশোধনের কাজ তাই দ্রুত শেষ করতে চাইছে মমতা সরকার। ২০১৩ সালে হাওড়া পুরসভা হাতে পেয়েছিল তৃণমূল। ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়। প্রায় তিন বছর প্রশাসক বসিয়ে পুরসভার কাজ চলেছে।

রাজ্য সরকারকে নিশানা দিলীপের

এত দ্রুত পুরভোটের জন্য প্রস্তুত নয় বিজেপি। গতকালই তার বিরোধিতা শুরু করেছিল তারা। বুধবার সকালে ইকোপার্কে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে সরাসরি রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি হাওড়া এবং বালি পুরসভাকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত একেবারেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি অভিযোগ করেছেন, 'সমস্ত রাজনৈতিক স্বার্থেই সিদ্ধান্ত। বালিকে আনাই বা কী ছিল। বালিকে ছাড়াই বা কী ছিল। হয়ত আগের চিন্তা ভাবনা ঠিক ছিল না। চিন্তাভাবনা না করেই ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন রাজনৈতিক লাভের জন্য। এখন দেখছে উল্টো হয়েছে তাই পাল্টে দেওয়া হচ্ছে। এই যে খামখেয়ালিপনা এটা যোগ্য প্রশাসকের পরিচয় নয়। এজন্য বাংলার অসুবিধা হচ্ছে।'

জরুরি বৈঠকে বিজেপি

পুরভোট নিয়ে রাজ্যসরকার তোরজোর শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বৈঠক করেন হাওড়ায়। সূত্রের খবর সেই বৈঠকে অনেক বিজেপি নেতাই উপস্থিত ছিলেন না। তবে সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন যখনই পুরভোট হোক সংগঠন তৈরি রয়েছে। সূত্রের খবর হাওড়া ও বালি পুরসভা ভোটের জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রুদ্রনীল ঘোষ ও রথীনকে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষও জানিয়েছেন, নির্বাচন এক সঙ্গে হোক আর আলাদাভাবে হোক, কলকাতা এবং হাওড়া কর্পোরেশনের নির্বাচনের জন্য আলাদা টিম তৈরি করা হয়েছে। শেয়ারিং কমিটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। মিটিং হয়ে গিয়েছে। পুরো শক্তি নিয়ে লড়াই করবে দল।

কমিটি তৈরি করলেন সুকান্ত

পুরভোট নিয়ে ইতিমধ্যেই হাওড়ায় বৈঠক করে ফেলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে গতকাল রাতেই বৈঠক করেছেন তিনি। হাওড়ার ৫০ টি ওয়ার্ডের জন্য একটি কমিটি গড়া হয়েছে। চেয়ারম্যান করা হয়েছে রথীন চক্রবর্তীকে৷ কলকাতা পুরসভাকে চারটি জোনে ভাগ করে গড়া হয়েছে ৪ কমিটি। তাদের মাথায় বসানো হয়েছে উত্তর কলকাতা জোনের জন্য কল্যাণ চৌবে, দক্ষ্মিণ কলকাতার জন্য রুদ্রনীল ঘোষ, সাউথ সাবার্বানের জন্য তুষার কান্তি, এবং মধ্য কলকাতা জোনের চেয়ারম্যান করা হয়েছে প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালকে। এদিকে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পর থেকেই হাওড়ার একাধিক জায়গায় আদি ও নব্যের লড়াই তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুরভোটে কতটা সাফল্য পাবে বিজেপি এই নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।

More DILIP GHOSH News  

Read more about:
English summary
Howrah Municipal Election contro
Story first published: Wednesday, November 10, 2021, 11:18 [IST]