আফগানিস্তান নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্তরে বৈঠক হয়ে গেল দেশে। ভারত সহ মোট আট দেশ উপস্থিত ছিল এই বৈঠকে। আজ বুধবার প্রত্যেকটি দেশের প্রতিনিধিরা শান্তিপূর্ণ আফগানিস্তানের পক্ষে সওয়াল করেছেন। অজিত দোভালের নেতৃত্বে হওয়া এই বৈঠকে অংশ নিয়েছিল রাশিয়া, ইরান সহ সাত দেশের প্রতিনিধিরা।
প্রত্যেকেই এদিন আফগানিস্তানের মানুষের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কাবুল, কান্দাহার এবং কুন্দুজে লাগাতার জঙ্গি হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদও জানিয়েছেন তাঁরা।
ভারত এবং অন্যান্য বাকি সাত দেশের প্রতিনিধিরাই এই বৈঠকে বলেছেন, আফগানিস্তানের মাটিকে জঙ্গিদের প্রশিক্ষন দেওয়া। জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করা কিংবা জঙ্গিদের আশ্রয় হিসাবে ব্যবহার করা উচিৎ নয়। এছাড়াও সন্ত্রাসবাদে অর্থ সরবরাহ বন্ধ করে অবিলম্বে জঙ্গি কার্যকলাপ বন্ধ করার সপক্ষেই কথা বলেছেন প্রত্যেক দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা।
তবে এদিন বৈঠকে দোভাল বলেন, সব দেশের মধ্যে সম্পর্ক এবং সহযোগিতা তৈরির সময় এটা। ফলে সবাইকে একজোট হওয়ার বার্তা দেন। দোভাল বলেন, আমরা আফগানিস্তানের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। এই অবস্থা শুধু আফগানিস্তান নয়, প্রতিবেশী দেশগুলির উপরেও প্রভাব ফেলবে বলে মত তাঁর।
সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং মাদক পাচার বন্ধ করতে একজোট হয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছে ওই সমস্ত দেশ। আফগামিস্তানের সরকার গঠন নিয়েই সাত দেশেরর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন দোভাল। সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে নিয়েই যাতে সরকার গঠন করা হয় সে বিষয়ে জোর দিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে অংশ নেওয়া সবদেশ।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তান ইস্যুতে প্রথম থেকেই তালিবানদের পাশে পাকিস্তান এবং চিন। অগাস্ট মাসে তালিবান কাবুল দখল করার পর এই দুই দেশই সমর্থন করেছিল তাদের। ফলে ভারতের ডাকা এদিনের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল চিন এবং পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদেরকেও।
কিন্তু প্রথমে পাকিস্তানের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তাঁরা অংশ নেবে না। এরপর কাজের বাহানা দেখিয়ে বৈঠক এড়িয়ে যায় চিনও।
তবে আফগানিস্তান ইস্যুতে দু'টি রাষ্ট্রের বৈঠক এড়ানো নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে চিন-পাকিস্তান অনুপস্থিত থাকলেও উপস্থিত ছিল রাশিয়া, তাজাকিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, কাজাকিস্তান, কির্গিস্তানের মতো দেশগুলি। প্রতিটি দেশেরই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে।
ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন এনএসএ অজিত ডোভাল। উল্লেখযোগ্যভাবে চিন অনুপস্থিত থাকলেও তারা জানিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য সর্বদা প্রস্তুত বেজিং৷
তবে বলে রাখা প্রয়োজন এদিনের এই বৈঠকে তালিবানদের কোনও প্রতিনিধি ছিল না। তবে গত মাসে রাশিয়াতে হওয়া এক বৈঠকে তালিবানরা উপস্থিত ছিল। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিল ভারতও। সেখানে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়। আর এরপরেই ভারতের এদিনের এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।