হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের অপেক্ষা
টি ২০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে সবচেয়ে বড় যে সমস্যার মুখোমুখি পড়তে হয়েছে তা চোট সমস্যা। বেন স্টোকস, জোফ্রা আর্চাররা আগেই ছিলেন না। টি ২০ বিশ্বকাপের আগে, এমনকী বিশ্বকাপ চলাকালীনও ছিটকে গিয়েছেন স্যাম কারান, টাইমাল মিলস, জেসন রয়রা। জেসন রয় চলতি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী, তাঁর ছিটকে যাওয়ার ফলে ইংল্যান্ডকে যেমন ওপেনিংয়ে নতুন জুটি নামাতে হবে, তেমনই টিম কম্বিনেশন নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। তবু দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ হারলেও সুপার টুয়েলভের গ্রুপ অব ডেথ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। সেই তুলনায় অনেকটাই স্বস্তিতে নিউজিল্যান্ড। চাপের মুখেও পাঁচ দিনের ব্যবধানে টানা তিনটি দিনের ম্যাচ জিতে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছেন উইলিয়ামসনরা। ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, অ্যাডাম মিলনে, জিমি নিশামদের পাশাপাশি স্পিন বোলিংয়ে ইংল্যান্ড ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে পারেন মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি। মার্টিন গাপটিল, কেন উইলিয়ামন, ডেভন কনওয়েরাও ভালো ফর্মে রয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের বড় বাজি যেখানে হতে পারেন মার্টিন গাপটিল, সেখানে ২০১৯ সালের লর্ডস ফাইনালের দলে না থাকা মঈন আলি আজকের ম্যাচে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন।
কম্বিনেশন নিয়ে জল্পনা
জেসন রয়ের পরিবর্ত হিসেবে নেওয়া হয়েছে জেমস ভিন্সকে। তবে এই মিডল অর্ডার ব্যাটারকে সম্ভবত আজ খেলতে দেখা যাবে না। ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান জানিয়েছেন, উইকেট দেখে প্রথম একাদশ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। ভিন্সকে দলে নেওয়া মানে ব্যাটারের পরিবর্ত ব্যাটার। কিন্তু কোনও বোলার বা অলরাউন্ডারকে দলে নিলে বোলিং অপশন বাড়বে যাতে সুবিধাই হবে। আবু ধাবির উইকেট দেখে কম্বিনেশন চূড়ান্ত করা হবে, যদিও ওপেন কে করবেন তা ঠিক করে ফেলেছে ইংল্যান্ড। অবশ্য মহারণের আগে সেই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আনেননি মর্গ্যান। মনে করা হচ্ছে, ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করলে জস বাটলারের সঙ্গী হবেন জনি বেয়ারস্টো। আর রান তাড়া করতে হলে প্রয়োজন অনুযায়ী বেয়ারস্টোকে না নামিয়ে বাটলারের সঙ্গে ডেভিড মালানকেও ওপেন করতে পাঠানো হতে পারে।
চনমনে নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড অধিনায়কের কনুইয়ের সমস্যা থাকলেও তিনি খেলবেন। নিউজিল্যান্ডের প্রথম একাদশে পরিবর্তনের সম্ভাবনাও নেই। টিম সেইফার্টের জায়গায় অ্যাডাম মিলনে দলে এসে ভালো ফর্মেই রয়েছেন। লকি ফার্গুসন চোটের কারণে ছিটকে গেলেও তাঁর অভাব অনুভূত হচ্ছে না। চলতি বছর আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগে ইংল্যান্ডকে টেস্ট সিরিজে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তবে চলতি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ১৩ রানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে ১৬৩ রান তুলেছিল, কিউয়িরা চার বল বাকি থাকতেই ১৫০ রানে অল আউট হয়ে যায়। জস বাটলার ৭৩ রান করেছিলেন, ইশ সোধি নেন ৩ উইকেট। নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল (৪০) ছাড়া বাকিরা উল্লেখযোগ্য রান পাননি। মার্ক উড ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। সবমিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের কাছে আজ বদলার ম্যাচ, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েরই অপেক্ষা।
পরিসংখ্যানে এগিয়ে ইংল্যান্ড
টি ২০ আন্তর্জাতিকে ২১টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ড জিতেছে ১২টিতে। নিউজিল্যান্ড সাতটিতে। পরিত্যক্ত ১টি, টাই ১টি। ২০১৯ সালে ঠিক আজকের দিনেই কিউয়িদের দেশে গিয়ে অকল্যান্ডে ম্যাচ টাই হওয়ার পর সুপার ওভারে টি ২০ সিরিজের পঞ্চম ম্যাচ জিতে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ পকেটে পুরেছিল ইংল্যান্ড। ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন জস বাটলার, সিরিজ সেরা হয়েছিলেন মিচেল স্যান্টনার। টি ২০ বিশ্বকাপে ৫ বার এই দুই দল পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে। ইংল্যান্ড জিতেছে তিনটিতে, দুটিতে নিউজিল্যান্ড। এবার দেখে নেওয়া যাক আজকের ম্যাচে দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ।
ইংল্যান্ড- জস বাটলার (উইকেটকিপার), জনি বেয়ারস্টো, ডেভিড মালান, ইয়ন মর্গ্যান (অধিনায়ক), লিয়াম লিভিংস্টোন, মঈন আলি, স্যাম বিলিংস বা ডেভিড উইলি, ক্রিস ওকস, ক্রিস জর্ডন, আদিল রশিদ, মার্ক উড।
নিউজিল্যান্ড- মার্টিন গাপটিল, ড্যারিল মিচেল, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ডেভন কনওয়ে (উইকেটকিপার), গ্লেন ফিলিপস, জিমি নিশাম, মিচেল স্যান্টনার, অ্যাডাম মিলনে, টিম সাউদি, ইশ সোধি, ট্রেন্ট বোল্ট।