বিতর্ক যেন থামতেই চাইছে না। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে গোটাদেশ তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল রাফায়েল দুর্নীতি নিয়ে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা। এবার ফের প্রকাশ্যে এল সেই দুর্নীতির অভিযোগ। সৌজন্যে ফরাসি অনলাইন জার্নাল। ফ্রান্সের একটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হল, ভারতকে রাফায়েল বিক্রি করতে এক মধ্যস্থতাকারীকে ৭.৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে রাফায়েলের নির্মাতা সংস্থা ডাসল্ট।
ফরাসি যুদ্ধবিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা ডাসল্টের কাছ থেকে মোট ৩৬টি বিমান কেনার চুক্তি করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। এর জন্য ভারতকে খরচ করতে হয়েছিল ৫৯ হাজার কোটি টাকা। এই চুক্তিতে দুর্নীতি নিয়েই ফের তোলপাড় হতে শুরু করেছে গোটাবিশ্ব। অনলাইন জার্নালটি আরও দাবি করেছে, মধ্যস্থতাকারীকে ৭.৫ মিলিয়ন ইউরো দেওয়ার কথাটি ভারতীয় সংস্থা জানত। প্রয়োজনীয় তথ্যও ছিল তাদের কাছে। তবে, এতকিছুর পরেও তারা এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।
একটি প্রতিবেদনে তারা দাবি করে, 'একাধিক বিদেশী সংস্থা, ভুয়ো বিল থেকে জানা যায় ভারতীয় সংস্থাগুলি এই টাকার লেনদেন সম্পর্কে জানত৷ সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, ইন্ডিয়ান ফেডারেল পুলিশ ফোর্সের আধিকারিকরা এই সম্পর্কে জানতেন। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে তাঁরা জানতেন যে ডাসল্ট এই চুক্তির জন্য ৭.৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে সুষেন গুপ্ত নামক এক মধ্যস্থতাকারীকে।'
অর্থ ও নারী চক্রের থেকে দলকে টেনে বের করতে হবে! বিস্ফোরক তথাগত রায় বিশ্বাস করেন বিজেপির দুই নেতাকে
এপ্রিল মাসের ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, অধিকাংশ টাকাপয়সার আদানপ্রদানই হয়েছে ২০১৩ সালের আগে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ' সুষেন গুপ্তর একাউন্ট স্প্রেডশিট অনুযায়ী এই আদানপ্রদান 'ডি' দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। যা কিনা ইঙ্গিত করছে ডাসল্টকে। ২০০৪-২০১৩ সময়কালে ১৪.৬ মিলিয়ন ইউরো আদানপ্রদান হয়েছে ইন্টারডেভ নামক একটি সংস্থার সঙ্গে।'
ইন্টারডেভ আদতে একটি খোলসের মতো। এটি তৈরিই হয়েছিল যাতে টাকার আদানপ্রদানে কোনও সমস্যা না হয়। এরকম আরও খোলস সংস্থা আছে অবশ্য। গুপ্তা পরিবারের স্প্রেডশিটে দেখা যাচ্ছে, ২০০৪-২০০৮ অবধি আরও ২.৮ মিলিয়ন ইউরো দেওয়া হয়েছে অন্যান্য ভুয়ো সংস্থাকে।' আরও একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, রাফায়েলের ৫০ টি রেপ্লিকা মডেল তৈরি করার দায়িত্বও পেয়েছিল সুষেন গুপ্তা। এই কাজের জন্য তাঁকে ১ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছিল ডাসল্ট।
তবে নতুন এই প্রতিবেদনে এবার রাফায়েল দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেল ২০১৪-র মোদী সরকারের আগের কংগ্রেস জমানাও৷ প্রকারান্তরে সেই সময়কার মনমোহন সরকারের নামও জড়াল এতে৷