বছর ঘুরলেই উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন! পিএসি রিপোর্ট অস্বস্তিতে ফেলতে পারে যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে
উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই। আগামী বছরের শুরুতেই রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বেঙ্গালুরু ভিত্তিক একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, যার নাম - পাবলিক অ্যাফেয়ার্স সেন্টার - তাদের রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, সরকার পরিচালনার দিক থেকে দেশের বড় রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ সরকার। বড় রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে শেষে ১৮ তম স্থান দখল করে রেখেছে উত্তরপ্রদেশ।

উন্নতি, সমতা ও স্থায়িত্বের ভিত্তিতে একটি ইনডেক্স তৈরি করে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। যে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কেরল প্রথম স্থান অধিকার করেছে সুষ্ঠুভাবে সরকার বা প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে। সবচেয়ে বড় কথা গত পাঁচ বছর ধরে তারা শীর্ষস্থানে রয়েছে।
তবে উত্তরপ্রদেশ প্রথম থেকেই তালিকায় একেবারে নিম্নস্থানে রয়েছে তা নয়। ২০১৬ সালে প্রথমবার যখন এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তখন উত্তরপ্রদেশ দ্বাদশতম স্থানে ছিল। উত্তরপ্রদেশের পরে ছিল মধ্যপ্রদেশ, অসম, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং বিহার।
২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশ চতুর্দশ স্থানে নেমে যায়। ২০১৮ সালে তারা চতুর্দশ স্থানে ছিল। ২০১৯ সালে নেমে যায় ১৭তম স্থানে। পিছনে ছিল শুধুমাত্র ওড়িশা। ২০২০ ও ২০২১ এই দুই বছরে উত্তরপ্রদেশ সরকার পরিচালনার ইনডেক্সে সবচেয়ে নিচে ১৮তম স্থান অধিকার করেছে।

এই সমীক্ষা ইনডেক্সেই উত্তরপ্রদেশ ২০১৬ সালে আর্থিক ব্যবস্থা পরিচালনার দিক থেকে প্রথম স্থানে ছিল। প্রথম ১০টি রাজ্যের মধ্যে ছিল গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো, সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায় বিচার, স্বচ্ছতা, গ্রহণযোগ্যতা ও আর্থিক স্বাধীনতার দিক থেকে। কিন্তু ২০১৯ সালের পর থেকে এই সমীক্ষার ইনডেক্সে কিছু পরিবর্তন হয় এবং সেখানে বৃদ্ধি, সাম্য এবং স্থায়িত্বকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। এবং সেখানেই দেখা যাচ্ছে সাম্য এবং স্থায়িত্বের দিক থেকে উত্তরপ্রদেশ সবকটি বড় রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে নিচে অবস্থান করছে। তার থেকেও বড় কথা এই ব়্যাঙ্কিং তৈরি করা হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের থেকে পাওয়া তথ্য থেকেই।
সমীক্ষার বিষয়টি মোট পাঁচটি ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেগুলি হল কণ্ঠস্বর এবং গ্রহণযোগ্যতা, উপযুক্ত সরকার পরিচালনা, আইন শৃঙ্খলা, গুণমান নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্নীতি দমন। এই বিষয়গুলোর মধ্যে মাইক্রো লেভেলে যে বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয় সেগুলি হল - সামাজিক সুরক্ষা ও পুষ্টি, মহিলাদের ক্ষমতায়ন, মজুরি, বস্তির জনসংখ্যা, শিশু মৃত্যুর হার, বঞ্চনা, খুন-জখম, সাজাপ্রাপ্ত নয় এমন জেলবন্দিদের সংখ্যা, তপশিলি জাতি ও উপজাতির বিরুদ্ধে অপরাধের হার, মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার ইত্যাদি।

এর পাশাপাশি আরও একটি রিপোর্ট নিঃসন্দেহে অস্বস্তিকর, তা হল - পণের জন্য হত্যা বা মৃত্যুর অভিযোগ। ২০১৯ সালের জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী - উত্তরপ্রদেশে প্রতি ১০ লক্ষে ২৪১০টি অভিযোগ আসে পণ সংক্রান্ত হত্যা বা মৃত্যুর। যেখানে জাতীয় গড় প্রতি ১০ লক্ষের মধ্যে ২৪৪টি ঘটনা।
এছাড়াও তপশিলি উপজাতিদের বিরুদ্ধে এখানে অপরাধের হার ৬৩.৬ শতাংশ, সদ্যজাতর মৃত্যুর হার ৬৪ শতাংশ। যার ফলে সব মিলিয়ে পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের অপুষ্টির হার এই রাজ্যে অনেকটাই বেশি।