রোহিতকে তিনে পাঠানো নিয়ে জলঘোলা! লিডারশিপ গ্রুপের কে প্রথম প্রস্তাব দেন?
পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হার, তারপর নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজয় ৮ উইকেট। টি ২০ বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচেই জোড়া হার ভারতকে নিয়ে গিয়েছে খাদের কিনারায়। শেষ তিন ম্যাচে জিতলেও শেষ চারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা দাঁড়িয়ে অনেক জটিল সমীকরণের উপর। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে পরাজয়ের সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে উঠে আসছে রোহিত শর্মাকে তিনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত। ব্যাটিং অর্ডারের মাথায় এমন রদবদলেই ভারতের ভরাডুবি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

রোহিত শর্মাকে তিনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে আজ প্রশ্ন করা হয় ভারতের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোরকে। তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ড ম্যাচের আগের রাতে ব্যাক স্প্যাজমের সমস্যায় পড়েন সূর্যকুমার যাদব। তিনি মাঠের নামার অবস্থায় না থাকায় ঈশান কিষাণ দলে আসেন। আগেও ওপেনার হিসেবে সফল হয়েছেন ঈশান কিষাণ। গোটা টিম ম্যানেজমেন্ট সম্মিলিতভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কিষাণকে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওপেন করতে পাঠানোর ব্যাপারে। সেই টিম ম্যানেজমেন্টের অঙ্গ হিসেবে রোহিতও সেই আলোচনায় অংশ নেন। ঈশান কিষাণ বাঁহাতি। তিনি মিডল অর্ডারে নামলে বাঁহাতি ব্যাটারের সংখ্যাও বেড়ে যেত। কেন না, ঋষভ পন্থ, রবীন্দ্র জাদেজাও বাঁহাতি ব্যাটার। তাই যেহেতু ওপেন করতে নেমে যেহেতু কিষাণ সফল তাই টেকনিক্যাল দিকের কথা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ফলে কিষাণকে ফিনিশার হিসেবে মিডল বা লোয়ার মিডল অর্ডারে পাঠানোর বিষয়ে যাঁরা মত ব্যক্ত করছেন, মিডল অর্ডারে বেশি বাঁহাতির সংখ্যা এড়াতেই যে কিষাণকে ওপেন করতে পাঠানো হয় সেই যুক্তি রাঠোরের মাধ্যমে আজ তুলে ধরা হল। কিন্তু তাতেও জল্পনা থামছে না। ওই বৈঠকে কার মাথায় এই ভাবনার কথা প্রথম আসে সেটাই খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। ম্যাচ শেষের পর সম্প্রচারকারী টিভি চ্যানেলের ফোকাস ছিল রবি শাস্ত্রী ও মহেন্দ্র সিং ধোনির উপর। যেখানে কোচ ও মেন্টরের কথোপকথনে ধোনিকে বেশ গম্ভীরই দেখাচ্ছিল। হাত নেড়ে কিছু বলছিলেন শাস্ত্রী। কোচ, ক্যাপ্টেন ও মেন্টরের সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে কিনা তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। আজও কেউই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি।

এরই মধ্যে একটি ওয়েবসাইট বিসিসিআইয়ের সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এটা ঐকমত্যে পৌঁছে টিম ম্যানেজমেন্টেরই নেওয়া সিদ্ধান্ত। তবে ভারতীয় দলের মেন্টর মহেন্দ্র সিং ধোনিই প্রথম এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কোচ, অধিনায়ক সকলেই এই প্রস্তাব মেনে নেন। সেখানে রোহিত শর্মা নিজেও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বাঁহাতি ব্যাটার দিয়ে বাঁহাতি ট্রেন্ট বোল্টকে সামলানোর সেই রণকৌশল মুখ থুবড়ে পড়ে। রোহিত তিনে নামায় বিরাটও চারে নামতে বাধ্য হন। অথচ মাহেলা জয়বর্ধনের কথায়, যদি রোহিতের সঙ্গেও কিষাণ ওপেন করতেন এবং বিরাট তিনে নামতেন, সেক্ষেত্রে চার ও পাঁচে রাহুল ও পন্থ কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারতেন। বোল্টকে সামলানোর জন্য কিষাণকে ওপেন করতে নামিয়ে রোহিতকে তিনে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেননি সুনীল গাভাসকরও। তাঁর মতে, যদি রোহিতকে বলা হয় তুমি বোল্টকে সামলাতে পারবে না বলেই অন্য কাউকে ওপেন করতে পাঠানো হচ্ছে, সেটা রোহিত কেন যে কোনও ব্যাটারের আত্মবিশ্বাসেই প্রভাব ফেলবে। স্বাভাবিকভাবেই ওই বোলারের মুখোমুখি হওয়ার ব্যাপারে নিজের দক্ষতার প্রতিও সংশয় তৈরি হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাটারের। শাহিন শাহ আফ্রিদির দাপট দেখেই দলের সেরা টি ২০ ব্যাটারকে তিনে নামানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। থাকছে জল্পনাও।