১৫ হাজার কোটির দুর্নীতি, পিএনবি কেলেঙ্কারির চেয়েও বড় কাণ্ডের তদন্তে সিবিআই
হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী ও মোহুল চোকসি যুক্ত পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের চেয়েও বেশি মূল্যের আর্থিক প্রতারণা এবার সামনে এল। সিবিআই ১৫,০০০ কোটি টাকার বাইক বট কেলেঙ্কারির তদন্ত করার জন্য একটি এফআইআর দায়ের করেছে।

এফআইআরে, উত্তরপ্রদেশের বাইক বোটের চিফ ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় ভাটির নাম রয়েছে। তাঁর সঙ্গে আরও ১৪ জনের নাম আছে, যাঁরা দেশজুড়ে বিনিয়োগকারীদের ১৫ হাজার কোচি টাকার প্রতারণা করেছেন। বাইক বোট দুর্নীতিতে অভিযুক্তরা বাইক বট নামে একটি বাইক–ট্যাক্সি পরিষেবার আড়ালে অত্যন্ত লাভজনক বিনিয়োগের পরিকল্পনা তৈরি করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে এও বলা হয়েছে যে গ্রাহক একটি, তিনটি, পাঁচটি বা সাতটি বাইকে বিনিয়োগ করতে পারে, যা রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করার দায়িত্বে থাকবে সংস্থা। বিনিয়োগকারীদের মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া, ইএমআই ও বোনাস (যদি কোনও বিনিয়োগকারী একাধিক বাইকে বিনিয়োগ করেন) দেওয়া হবে এবং অতিরিক্ত বিনিয়োগকারীদের প্রবেশেরও পরিকাঠামো রয়েছে বলে জানিয়েছিল সংস্থা। সংস্থাটি বিভিন্ন শহরে ফ্র্যাঞ্চাইজি বরাদ্দ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অথচ এই শহরগুলিতে বাইক এবং ট্যাক্সি খুব কমই চলে।
২০১৭ সালের অগাস্টে এই পরিকল্পনাটি নিয়ে আসে উত্তরপ্রদেশের ওই সংস্থা এবং ২০১৯ সালের গোড়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারী, গ্রাহক ও পরিশোধকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলতে থাকে। পেট্রোল বাইকের রেজিস্ট্রেশন ও পরিচালনা নিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে ২০১৮ সালের নভেম্বরে এই সংস্থা ই–বাইক সংক্রান্ত একই পরিকল্পনা চালু করে। ই–বাইকের সাবস্ক্রিপশনের পরিমাণ ছিল নিয়মিত পেট্রোল বাইকের বিনিয়োগের পরিমাণের প্রায় দ্বিগুণ। অভিযোগে এও বলা হয়েছে যে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার জন্য সংস্থাটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিল যে বাইক বট–জিআইপিএল স্কিম দ্বারা চালিত বাইক ট্যাক্সি খুব শীঘ্রই শুরু হবে এবং স্কিমটি পেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে দ্রুত অর্থ জমা দিতে হবে। এই ধরনের বিজ্ঞাপন দেখার পর প্রায় ২ লক্ষ বিনিয়োগকারী টাকা বিনিয়োগ করে এই সংস্থায়। যদিও ঘটনাটির অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছিল এবং সংস্থার প্রতারণামূলক কার্যকলাপ নয়ডা জেলা কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি পুলিশ কর্তৃপক্ষের জানা ছিল তবে তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সিবিআইয়ের এফআইআরে বলা হয়েছে, ক্রাইম ব্রাঞ্চের এসপি ও এসএসপি উপরন্তু অভিযোগকারীদের সংস্থার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে শুরু করে।
দিওয়ালিতে সব বাজি নিষিদ্ধ নয়! কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর সুপ্রিমকোর্ট কী জানাল
সিবিআইয়ের এফআইআরে এও বলা হয়েছে যে পূর্ব–পরিকল্পিত এই ষড়যন্ত্রে, সঞ্জয় ভাটি ও তার সহযোগীরা প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এবং ব্যবসার নাম করে দেশজুড়ে সংগ্রহ করেছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এর আগে ইডি গৌতম বুদ্ধ নগরের দাদরি থানায় গারভিট ইনোভেটিভ প্রমোটার্স লিমিটেড, এর কর্ণধার সঞ্জয় ভাটি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত বিভিন্ন এফআইআরের ভিত্তিতে বাইক বট কেলেঙ্কারিতে অর্থ–পাচারের তদন্ত শুরু করেছিল। আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা এই মামলায় ২১৬ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।