পেগাসাস স্নুপিং রো নিয়ে রায় বুধবার, রাজনৈতিক মহলের নজর সুপ্রিমে
বছরের শুরুতেই শিরোনামে উঠে এসেছিল পেগাসাস স্নুপিং রো। সেই পেগাসাস স্নুপিং রো নিয়ে আদালত-নিরীক্ষণে তদন্ত হবে কিনা তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বুধবার রায় দেবে। ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা, বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ সকাল সাড়ে ১০টায় এই রায় জানাবেন। মামলার বিশদ শুনানির পরে শীর্ষ আদালত বলেছিল যে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটি স্বাধীন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

এই পেগাসাস মামলায় আবেদনকারীরা আদালতের নজরদারি করা তদন্ত ছাড়াও সরকারকে হাজির করার নির্দেশ দিতে আবেদন করেছিল আদালতের কাছে। আবেদনকারীদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা, সিপিএম এমপি জন ব্রিটাস, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এমএল শর্মা, এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া এবং সাংবাদিকরাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
পেগাসাস সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে অননুমোদিত নজরদারির বিশদ বিবরণ তুলে ধরা হয়েছিল। ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও গ্রুপ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এই কাণ্ড-কারখানা। আবেদনকারীরা বলেছেন, সরকার কীভাবে স্পাইওয়্যারের লাইসেন্স পেয়েছে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এটি ব্যবহার করেছে এবং যাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ করা উচিত।
স্পাইওয়্যারটি ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা তা প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার এবং জাতীয় সুরক্ষার সমস্যাগুলি উদ্ধৃত করে আদালতকে বলেছিল যে এটি হলফনামা আকারে দাখিল করা যাবে না। তবে এটি বিশেষজ্ঞদের একটি স্বাধীন কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে বিষয়টি তদন্ত করতে পারে।
জুলাই মাসে গ্লোবাল মিডিয়া হাউসের একটি কনসোর্টিয়ামের রিপোর্টের পরে শীর্ষ আদালতে পিটিশনের দাখিল করা হয়েছিল। বিরোধী রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং অন্যান্যরা স্পাইওয়্যারের লক্ষ্য ছিল। নিউজ পোর্টাল 'দ্য ওয়্যার'-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতে ১৪২ জনেরও বেশি ব্যক্তি সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু ছিল। এই তালিকায় কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর, দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, একজন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের দুই রেজিস্ট্রার, একজন প্রাক্তন বিচারক, একজন প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং ৪০ জন সাংবাদিকের নাম রয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সিকিউরিটি ল্যাব দ্বারা কিছু সেলফোনের ফরেনসিক বিশ্লেষণ নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলেও রিপোর্টে জানানো হয়েছে। এর ফলে বিরোধীদের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় সরকার পক্ষকে। সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনজুড়ে ছিল পেগাসাস। খুব কমই অধিবেশন বসেছিল, পেগাসাস প্রতিবাদের জেরে মুলতুবি হয়ে যায়। এমনকি বিজেপির জোটসঙ্গী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও তদন্তের দাবিতে বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।