বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়ানো যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় হস্তক্ষেপ, কেন্দ্রকে নিশানা মমতার
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক্তিয়ার সম্প্রসারণের বিষয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপের সমালোচনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রের এই প্রচেষ্টা দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোতে হস্তক্ষেপের নামান্তর। কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার পঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় ১৫ কিলোমিটারের পরিবর্তে ৫০ কিলোমিটারের দায়িত্ব বিএসএফ বা সীমন্তরক্ষী বাহিনীর উপর দায়িত্ব বর্তানোর পরিকল্পনা করেছে। এই সম্প্রসারিত এলাকায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে য়ে কোনও তল্লাশি, বাজেয়াপ্ত এবং গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেওয়ার জন্য আইন সংশোধন করা হয়।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, সীমান্ত এলাকায় রাজ্যের কোনও সমস্যা নেই। অযথা বিএসএফের এক্সিয়ার বাড়িয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করছে বিজেপির সরকার। বিএসএফের বিষয়টি সম্পর্কে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছি ইতিমধ্যেই। তবে তার এখনও কোনও জবাব পাইনি।
বিএসএফ আইন মোতাবেক, আগে সমীন্তরক্ষী বাহিনীর 'শাসনে'র এক্তিয়ার ছিল মাত্র ১৫ কিলোমিটার। বালুরঘাট বা কোচবিহারে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটার পর এখন তা বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করেছে। ১৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার এলাকায় বিএসএফের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি এটিকে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় হস্তক্ষেপ বলে মনে করছেন। এই মর্মে তিনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কঠার সমালোচনাও করেছেন। দেশের ফেডারেল স্ট্রাকচারকে নিয়ে কেন্দ্র ছিনিমিনি খেলছে বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গে একটি প্রশাসনিক পর্যালোচনা সভায় তিনি কেন্দ্রের এই হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা নিয়ে রাজ্যগুলিকে জোট বাঁধতে আর্জি জানান।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জোর দিয়েই বলেন, "আমাদের সীমান্ত এলাকায় কোনও সমস্যা নেই। বরং খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে। আমরা পরস্পরের সঙ্গে সৌহার্দ্র্য ভাগ করে নিই। তাই বিএসএফের হস্তক্ষেপ বাড়িয়ে কোনও এই বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রয়োজন নেই। আইন-শৃঙ্খলা একটি রাষ্ট্রীয় বিষয়। বিএসএফকে তার জন্য কী দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেটা রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করার কোনও প্রয়োজন মনে করেনি কেন্দ্র। তা করা হলে আমাদের সম্পূর্ণ সমর্থন আছে।
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ একটি আন্তর্জাতিক সীমানা ভাগ করে নিয়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আমরা রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন করেছিলাম যে, অবিলম্বে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়ানোর বিষয়ে। এখন আমরা সেই উত্তরের প্রতীক্ষায় রয়েছি।