হিন্দুদের উপর হামলায় কড়া হাসিনা! কুমিল্লার ঘটনায় গ্রেফতার তিন হাজারেরও বেশি, ৭১টি মামলা দায়ের
বাংলাদেশে হামলার ঘটনায় ৭১টি মামলা দায়ের হল। এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি লোককে কুমিল্লার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সারা দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় একের পর এক মামলা দায়ের হয়েছে। শুধুমাত্র হাজীগঞ্জ থানাতেই ১০টি মামলা দায়ের হয়েছে শনিবার।
সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা যে মোটেই হালকা ভাবে নিতে নারাজ সরকার তা কার্যত স্পষ্ট।

৭১টি মামলা দায়ের হয়েছে
দেশের বিভিন্ন জায়গায় সব মিলিয়ে ৭১টি মামলা দায়ের হয়েছে। শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৫০ জনকে। নোয়াখালিতে হামলার ঘটনায় ধৃত আরও তিন অভিযুক্ত আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। সেখানে তারা দোষও স্বীকার করেছে বলে সূত্রের খবর। গত শনিবার রাতে ১৬৪ ধারা অনুসারে অভিযুক্তদের জবানবন্দি রেকর্ড করেছে পুলিশ। ধৃতরা হল রিপন আহাম্মদ মাহীর, আরাফাত হোসেন রাজিব ও ইব্রাহিম খলিল রাজিব।

ধরপাকড় শুরু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ
এর আগে বৃহস্পতিবার আবদুর রহিম নামের আর এক অভিযুক্তও আদালতে জবানবন্দি দেয়। গত ১৫ অক্টোবর অর্থাৎ বিজয়া দশমীর দিন নোয়াখালির চৌমুহনী এলাকায় বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপে হামলার অভিযোগ উঠেছে। সংখ্যালঘুদের ওপরও হামলার অভিযোগ ওঠে।
এই অবস্থায় অভিযুক্তদের ধরতে ধরপাকড় শুরু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। দেশ জুড়ে চলছে তল্লাশি। দিন দুয়েক আগে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ঘটনার মূল চক্রী ইকবাল হোসেনকে। তাকে জেরা করেই বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ইকবালকে চিহ্নিত করে পুলিশ। সিসিটিভির যে ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছিল তাও দেখিয়েছে পুলিশ।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ইকবালকে
অষ্টমীর দিন গভীর রাতের ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ইকবালকে। ফুটেজে আরও দেখা যায়, ওই যুবক মসজিদ থেকে কোরান হাতে বেরিয়ে যাচ্ছে। তারপর হাঁটতে হাঁটতে তাকে নানুয়ায় দিঘির পাড়ের পুজো মণ্ডপে ঢপকতে দেখা গিয়েছিল। পরে হনুমানের গদা নিয়ে মণ্ডপ থেকে বেরিয়ে আসতেও দেখা যায় ইকবালকে। এই ঘটনার পর থেকে একাধিকবার সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবারই বাংলাদেশে একটি অনুষ্ঠানে তিনি সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে। শান্তি মিছিল ও শান্তিসভা করার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

এটা ইসলাম শিক্ষা দেয় না
কুমিল্লা আওয়ামী লীগের নতুন একটি অফিস ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘কোনও ধরনের সংঘাত যাতে দেখা না দেয় তার নিতে হবে।' এই মাটিতে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই যেন ভালোভাবে বাঁচতে পারে। সেই বার্তাই দেন তিনি। তিনি এদিন আরও বলেন, ‘কুমিল্লায় যে ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে, সেটা খুব দুঃখজনক।' তাঁর মতে, মানবধর্মকে সম্মান করার শিক্ষাই দেয় ইসলাম। তিনি আরও বলেন, নিজের ধর্ম পালনের অধিকার যেমন সবার রয়েছে, তেমনই অন্যের ধর্মকেও কেউ হেয় করতে পারে না। এটা ইসলাম শিক্ষা দেয় না।