প্রকৃতির প্রতিশোধ, সন্তানদের নিয়ে বৃষ্টি দেখতে গিয়ে কেরলে বন্যায় প্রাণ হারালেন মা
১৬ অক্টোবর সকালটা আর পাঁচটা সকালের থেকে অন্যরকমভাবে নেমে এসেছিল ২৮ বছর বয়সী ফৌজিয়ার পরিবারে৷ এদিন সকালের গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হঠাৎ-ই ভয়াবহ মেঘভাঙা বৃষ্টিতে পরিণত হয়েছিল। ফৌজিয়া ও তার দুই ছোট সন্তান প্রথমটাই উপভোগ করছিলেন বৃষ্টির জল পাহাড়ের কোলে থাকা তাদের বাড়ির উঠোনে আস্তে আস্তে ঢুকছিল৷ পাহাড় থেকে বৃষ্টির ধারা নেমে তাদের উঠোন পর্যন্ত আসার সেই দৃশ্য উৎসাহ ভরে হোয়াটস্যাপ কলের মাধ্যমে এক নিকট আত্মীয়কে দেখিয়েওছিলেন।

কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর যখন বৃষ্টি না কমে আরও বাড়তে থাকে তখন ফৌজিয়া ভয়ে আাবারও ফোন করে তাঁর আত্মীয়কে, তাদের অবস্থা জানাতে৷ । ফৌজিয়ার কতাবার্তার মাঝেই একটি ভয়ঙ্কর জোরে আওয়াজা শুনতে পান ফোনের ওপারে থাকা ফৌজিয়ার আত্মীয়! তাঁরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ঠিক যেন বিশাল একটা পাথর পাহাড় থেকে ভেঙে জলে এসে পড়ল৷ এই শব্দেরই কয়েক সেকেন্ড পরে ফৌজিয়ার পক্ষ থেকে কলটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এরপর ফৌজিয়ার আত্মীয়রা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন কেরলে পাহাড়ের কোলে ফৌজিয়াদের বাড়িটির কোনও অস্তিত্বই নেই৷ পুরো বাড়ি বন্যায় ভেসে গিয়েছে! ফৌজিয়া, তার দুই সন্তান আমীন (১০) এবং আমনা (৭) এবং তার ভাইয়ের সন্তান আফসারা (৮) এবং আফিয়ান (৪) এই বিধ্বলসী বন্যার ঘটনায় নিহত হয়েছে। পরে বৃষ্টি থামতে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরূ ধ্বংসাবশেষ খুঁড়ে দুটি শিশুর দেহাবশেষ পান। শিশুদুটির মৃতদেহ দেখে মনে হয়েছে যেন তারা একে অপরকে শেষের দিকে জড়িয়ে ধরেছিল!
উদ্ধারকারী দলের এক সদস্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এটি এমন একটি দৃশ্য যা আমরা কখনই ভুলতে পারবো না। মৃতদেহগুলো বের করার সময় আমরা খুব কষ্ট অনুভব করেছি। একজন উদ্ধারকারী কর্মী একটি স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেন।