ICC T20 বিশ্বকাপে বিরাটের প্রধান অস্ত্র কোন দুই ক্রিকেটার? কী বলছেন ২০০৭-এর চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যরা?
টি ২০ বিশ্বকাপে রবিবার সুপার টুয়েলভে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়েই অভিযান শুরু করবে ভারত। ২০০৭ সালের পর ভারত টি ২০ বিশ্বকাপ জেতেনি। বিরাট কোহলি অধিনায়ক হিসেবে আবার সিনিয়র পর্যায়ে কোনও আইসিসি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন করাতে পারেননি ভারতকে। এবারের টি ২০ বিশ্বকাপের পর বিরাট টি ২০ অধিনায়কত্ব ছাড়ছেন। তিনি নিজেই যেমন স্বাভাবিকভাবেই কাপ জিততে মরিয়া থাকবেন, তেমনই স্টিভ স্মিথ-সহ অনেকেই বলছেন ভারত এবারের বিশ্বকাপ জয়ের ফেভারিট। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে সহজেই হারিয়েছে বিরাটের দল। তবে মূল অভিযানে নামার আগে নিশ্চিতভাবেই ভারতীয় শিবির আত্মতুষ্টিকে দূরে রাখতে চাইবে।

টি ২০ বিশ্বকাপ কিংবা ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বরাবরই অপরাজেয় থেকেছে ভারত। ২০০৭ সালের টি ২০ বিশ্বকাপে প্রথম সাক্ষাতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ টাই হয়, শেষে বোল আউটে ভারত ৩-০ ব্যবধানে জেতে। ভারত যে মাত্র একবারই টি ২০ বিশ্বকাপ জিতেছে সেটি ২০০৭ সালেই, পাকিস্তানকে হারিয়ে। সেই বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যরা এবার ভারতের কাপ জয়ের ভালোই সম্ভাবনা দেখছেন। স্টার স্পোর্টসের এক অনুষ্ঠানে ইরফান পাঠান বলেছেন, ২০০৭ সালে ভারত যে টি ২০ বিশ্বকাপ জিততে পারে সেই প্রত্যাশা কারও ছিল না। কিন্তু এবার যে দল নিয়ে ভারত টি ২০ বিশ্বকাপ অভিযানে গিয়েছে সেই দলকে ঘিরে কিন্তু সমর্থকদের বিপুল প্রত্যাশা রয়েছে। ২০০৭ সালের টি ২০ বিশ্বকাপ যখন আমরা খেলতে গিয়েছিলাম তখন নতুন ফরম্যাটে আমাদের সেই অর্থে খুব বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও ছিল না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। এখন ক্রিকেটাররা আইপিএল-সহ প্রচুর টি ২০ ম্যাচ খেলছেন, টি ২০ ফরম্যাট নিয়ে প্রচুর আলাপ-আলোচনা তাঁরা করে থাকেন নিজেদের মধ্যে। ২০০৭ সালে সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। এখন তা রয়েছে। ফলে পারফরম্যান্স নিয়ে যেমন নানা কথাবার্তা চলতে থাকে, তেমন মিমও ছড়িয়ে পড়ে প্রচুর। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা ভালোভাবেই ওয়াকিবহাল তাঁদের উপর কতটা প্রত্যাশা রয়েছে সমর্থকদের, আর তা কীভাবে সামলাতে হবে।

২০০৭ টি ২০ বিশ্বকাপজয়ী দলের অপর সদস্য তথা কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকও পাঠানের সঙ্গে সহমত। তিনি বলেন, চাপ সামলানোর পরিস্থিতি ও পদ্ধতি এখন আগের চেয়ে অনেক আলাদা। তবে ২০০৭ সালের টি ২০ বিশ্বকাপের সঙ্গে এখনকার টি ২০ বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় তফাত হল এখন ক্রিকেটাররা আইপিএল খেলে বিপুল অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন। তাঁরা অনেক উত্তেজক ম্যাচ খেলেছেন আইপিএলে, অত্যন্ত চাপের মুখে নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন। আইপিএলের ম্যাচের চাপ যাঁরা সামাল দিয়েছেন তাঁদের আর কোনও চাপ সামাল দিতে সমস্যাই হবে না।

এবারের টি ২০ বিশ্বকাপে বিরাট কোহলির দলের এক্স ফ্যাক্টর কে হতে পারেন সেই প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগই দুজনকে বেছে নিয়েছেন। রোহিত শর্মা ও জসপ্রীত বুমরাহ। গৌতম গম্ভীর ও আরপি সিং দুজনেই যেমন শুধু বুমরাহর কথা উল্লেখ করেছেন। হরভজন সিং বলেছেন, একজনকে বেছে নিতে হলে আমি রোহিত শর্মার নামই বলব। রোহিতের হাতেই থাকবে ভারতের সাফল্যের চাবিকাঠি। দীনেশ কার্তিক আবার আস্থা রাখছেন হার্দিক পাণ্ডিয়া ও বরুণ চক্রবর্তীর উপর। তাঁর কথায়, এই দুজনই টি ২০ বিশ্বকাপে ফারাক গড়ে দেবেন। অজিত আগরকারের মতে, রোহিত ভারতের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন। বল হাতে জসপ্রীত বুমরাহও। ইরফান পাঠান জসপ্রীত বুমরাহ ও তাঁর সঙ্গে অন্য প্রান্ত থেকে যিনি বোলিং করবেন তাঁকেই দলের সাফল্যের চাবিকাঠি বলে মনে করছেন। পাঠানের কথায়, শেষ ওভারগুলিতে যাঁরা বল করবেন তাঁদের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।