চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে নতুন চমৎকার, মানুষের শরীরে বসল শুয়োরের কিডনি
পশুদের অঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপন নিয়ে মানুষের গবেষণা দীর্ঘিদিনের। এমনকী পুরাণেও এ নিয়ে কত কথকথা রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এর সফল বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এদিকে শুয়োরের হৃৎপিণ্ড, কিডনি, মানবদেহে প্রতিস্থাপন নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই নানা গবেষণা চালাচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা। এমনকী সফতলতাও যে খুব বেশি দূর নেই তাও শোন গিয়েছিল কয়েক বছর আগে।

কিন্তু এবার অসাধ্য সাধন করে ফেললেন নিউ ইয়র্কের বিজ্ঞানীরা। মানুষের শরীরে বসল শুয়োরের কিডনি। এমনকী তা কাজও করছে দুর্দান্ত ভাবে। এ-ও কি সম্ভব? ধাঁধার মতো লাগছে তো? কিন্তু মার্কিনি ডাক্তারদের দৌলতে সম্প্রতি এই অসাধ্যসাধনও সম্ভব হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এই প্রথম শুয়োরের শরীর থেকে কিডনি বসল মানুষের শরীরে। এমমকী অস্ত্রোপচারও ১০০ শতাংশই সফল হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, ব্রেন ডেথ হয়ে যাওয়া এক ব্যক্তির শরীরে যুক্ত করা হয়েছে ওই কিডনিকে। প্রতিস্থাপনের পর সাময়িক জটিলতা বাদে সেটি দুর্দান্ত ভাবে কাজও শুরু করেছে বলে জানা যাচ্ছে। নিউইয়র্ক ল্যানগন হেলথে ৫৪ বছরের ব্রেন ডেথ হয়ে যাওয়া এক রোগীর শরীরে এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আর তাতেই সাড়া পড়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে।
এদিকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পর এবার হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন নিয়েও বড় আশার আলো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে বলে মত গবেষক দলের। এদিকে ব্রিটেনে প্রথম সফল হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনটি করেছিলেন স্যার টেরেন্স ইংলিশ। তিনি সাম্প্রতিককালে দাবি করেছিলেন “মানবশরীর যদি শুয়োরের কিডনি সফল ভাবে ও কোনও ধরনের ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই গ্রহণ করে, তা হলে হৃৎপিণ্ডের ক্ষেত্রেও কয়েক বছরের মধ্যেই এ ধরনের প্রতিস্থাপন করে ফেলা সম্ভব হবে। আর তা হবে চিকিত্সা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।”
এদিকে পশু শরীর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়াকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় জেনোট্রান্সপ্লানটেশন। এমতাবস্থায় পৃথিবীর প্রথম জেনোট্রান্সপ্লানটেশন সফল হওয়ায় চিকিত্সাবিজ্ঞানের জগতে যে একটা নতুন দিগন্ত খুলতে চলেছে তা আর বলা অপেক্ষা রাখে না। নিউইয়র্ক ল্যানগন হেলথে প্রতিস্থাপন ইউনিটের ডাইরেক্টর ডাঃ রবার্ট ডোরি সেগভে এই প্রসঙ্গে বলে, বর্তমানে নাকি শুয়োরের শরীরে হাকর্ট, কিডনি, ফুসফুসের মতো অঙ্গের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রক্রিয়ায়। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে নতুন আশার আলো। খুব দ্রুত হার্ট প্রতিস্থাপনও করা হবে বলে তিনি জানান।