বিলম্বিত বর্ষায় ধস নামতে শুরু করেছে পাহাড়ি এলাকায়, নদীর জল বিপদসীমার উপরে
মৌসুমী বায়ু বিদায় নিয়েছে আগেই। কিন্তু বর্ষা বিদায় বিলম্বিত হয়েছে জোড়া নিম্নচাপের কারণে। তার জেরে কোজাগরি লক্ষ্মীপুজোর রাতেও দুর্যোগের পূর্বাভাস রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও আকাশ ভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ব্যাপক বৃষ্টির জেরে ধস নেমেছে পাহাড়ি এলাকায়। একইসঙ্গে পাহাড়ি নদীও উত্তাল হতে শুরু করেছে।

পাহাড়ি রাস্তায় ধস, জল বাড়ছে পাহাড়ি নদী তিস্তার
দার্জিলিং, কালিম্পং, গরুবাথান মতো বেশ কিছু এলাকায় পাহাড়ি রাস্তায় ধস নেমে যান চলাচল থমকে গিয়েছে। রিম্বিকের পালমাজুয়া ব্রিজের কাছে ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে জল বাড়ছে পাহাড়ি নদী তিস্তার। তিস্তার জল এখনই লকগেটের উপর দিয়ে বইছে।

পাহাড়ের পাশাপাশি তরাই-ডুয়ার্সেও নাগাড়ে বৃষ্টি
কালিম্পং ও লাভায় একাধিক জায়গায় রাস্তা ভেঙেছে। এমনকী বাড়ি ভাঙার খবরও মিলেছে। তাকদায় একটি বাড়ি ভেঙেছে। সিকিমে ধসের জেরে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে একটি গাড়ি। পাথরের ধাক্কায় গাড়ি খাদে গিয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন যাত্রীরা। পাহাড়ের পাশাপাশি তরাই-ডুয়ার্সেও নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। বৃষ্টি চলছে সমতলেও।

পর্যটক আটকে পড়েছেন ভূমিধসে
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোকে থেকে সিঙ্গল বাজার সড়কে ভূমিধস নেমেছে। রিম্বিক সড়কের উপর ক্ষতিগ্রস্ত লোহার সেতু বৃষ্টি কমলেই মেরামত হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া সুখিয়াপখরি থেকে মানেভঞ্জনের রাস্তাও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানেভঞ্জন ও সান্দাকাফুতেও বেশ কিছু পর্যটক আটকে পড়েছেন।

আলিপুর হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস
এদিন আলিপুর হাওয়া অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্য থেকে বর্ষা বিদায় নেবে লক্ষ্মীপুজোর পরই। সেইসঙ্গে শুরু হয়ে যাবে প্রাক-শীত পর্ব। ২২ অক্টোবর থেকে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া পরিষ্কার হয়ে যাবে। মেঘ কেটে ঝকঝকে রোদের দেখা মিলবে। আর তারপরই রাতের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যাবে। ফলে শীত শীত ভাব শুরু হয়ে যাবে কার্তিক মাস থেকেই।

বৃষ্টি চলতেই থাকলে বিপদ আরও বাড়বে
হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গে আপাতত বৃষ্টি চলছে। ৪৮ ঘন্টা পর থেকে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির প্রকোপ কমতে থাকলেও, হিমালয় সংলগ্ন পাঁচ জেলা দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে মাঝে মধ্যে কয়েক পশলা করে বৃষ্টি চলতে থাকবে। উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। ধস নামতে শুরু করেছে রাস্তায়। বৃষ্টি চলতেই থাকলে বিপদ আরও বাড়বে।

শীতের আমেজ শুরু হয়ে যাবে অক্টোবরের শেষ থেকেই
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, তবে ২২ অক্টোবরের পর থেকে স্বাভাবিক হতে শুরু করবে সামগ্রিক পরিস্থিতি। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রেও ২২ তারিখের পর থেকে রাতের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি পর্যন্ত কমবে। উত্তর-পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে তাপমাত্রা কমবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এবার শীতের আমেজ শুরু হয়ে যাবে অক্টোবরের শেষ থেকেই।