ত্রিপুরা-জয়ের টিম তৈরি করে ফেললেন মমতা, ২০২৩-এ কার নেতৃত্বে লড়বে তৃণমূল
বাংলায় বিজেপিকে পর্যুদস্ত করার পর ত্রিপুরার দিকে নজর দিয়েছে তৃণমূল। ২০১৬ সালের পর ২০২১-এও ত্রিপুরা দখলকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে মমতার দল। ২০১৬ সালে গড়া রাজ্য কমিটি ত্রিপুরাতে ছিলই, শুধু তাঁর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়েছিল। একেবারে মুছে যায়নি। তবু এবার নতুন করে রাজ্য কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু রাজ্য কমিটি গঠন না করে, রাজ্য স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করল তৃণমূল।

রাজ্য দখলের টার্গেট, ত্রিপুরায় পা তৃণমূলের
বাংলায় একুশের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তৃণমূলের। তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েই ঘোষণা করেন, তাঁর পাখির চোখ ভিনরাজ্যে দলের সংগঠন বিস্তার করা। আক্ষরিক অর্থে দলকে সর্বভারতীয় করে তোলাই তাঁর মূল উদ্দেশ্য। সেইসঙ্গে যে রাজ্যে তাঁরা পা রাখবেন, সেই রাজ্য দখলের টার্গেটই মূল উদ্দেশ্য হবে বলে জানান তিনি। আর তা করেই ছাড়বেন তাঁরা।

ত্রিপুরায় সংগঠন বিস্তারের লক্ষ্যে তৃণমূল
এই পরিস্থিতিতে বাংলা জয়ের পরই প্রথম টার্গেট করা হয় ত্রিপুরাকে। ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের টিম আইপ্যাককে পাঠিয়ে সমীক্ষা করানো থেকেই বিজেপির সঙ্গে দ্বন্দ্বের শুরু। তা সত্ত্বেও ত্রিপুরায় সংগঠন বিস্তারের কাজে অনেকটাই এগিয়ে যায়। ত্রিপুরায় পা রাখার আগে পর্যন্ত আশিসলাল সিংহ ছিলেন ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। তবে তাঁর ক্ষমতা বর্তমানে খর্ব হয়েছে।

কংগ্রেস ভাঙিয়ে তৃণমূল বাড়ছে, এখনও আঁচড় পড়েনি বিজেপিতে
২০২১-এর জুলাই মাস থেকে ত্রিপুরায় সংগঠন বিস্তার শুরু করে তৃণমূল। তারপরই কংগ্রেস ভাঙিয়ে তৃণমূল বাড়তে শুরু করে। এখনও পর্যন্ত ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃ্ত্বে আঁচড়ও কাটতে পারেনি তৃণমূল। নিচুতলায় বিজেপিকে ভাঙছে তৃণমূল। আর উপরতলায় কংগ্রেসকে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে যাওয়া নেতারা কোন পথে পা বাড়ায় তা-ই দেখার। তাঁরা যদি বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে আসে, তবে বিজেপির সংগঠন ভেঙে পড়বে ত্রিপুরায়, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

ত্রিপুরা বিজয়ে তৃণমূলের টিম, কে থাকছেন নেতৃত্বে
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন শীঘ্রই নতুন রাজ্য কমিটি গঠন করা হবে ত্রিপুরায়। কিন্তু রাজ্য কমিটি গঠন না করে এখন শুধু রাজ্য স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়। মহালয়ার দিন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা ঘোষণা করলেন। পূর্ণাঙ্গ রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়নি। ফলে রাজ্য সভাপতি করা হয়নি কাউকে। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি করে আসা নেতা সুবল ভৌমিককে।

অসমের ভূমিকন্যা সুস্মিতা দেব ত্রিপুরার কমিটিতে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন ত্রিপুরা তৃণমূলের রাজ্য স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করেন। ১৯ জনকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। সুবল ভৌমিককে আহ্বায়ক করার পাশাপাশি কমিটিতে রাখা হয়েছে সুস্মিতা দেবকে। সুস্মিতা দেব অসমের ভূমিকন্যা। তাঁকে দলের ত্রিপুরা রাজ্য স্টিয়ারিং কমিটিতে রাখা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

‘রাজ্য সভাপতি’ আশিসলাল সিংহ, মধ্যমণি সুবল ভৌমিক
সুস্মিতা দেব ছাড়াও আরও পাঁচ মহিলাকে রাখা হয়েছে ত্রিপুরার স্টিয়ারিং কমিটিতে। সংখ্যালঘু, বাঙালি ও জনজাতিসহ সমস্ত গোষ্ঠীর প্রতিনিধিকেই রেখে কমিটি গড়েছে তৃণমূল। ত্রিপুরার সব জেলাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে রাখা হয়েছে পূর্বতন রাজ্য সভাপতি আশিসলাল সিংহকে। তবে তাঁকে আহ্বায়ক না করে করা হয়েছে সুবল ভৌমিককে। এখন তিনিই যে মধ্যমণি তার প্রমাণ মিলল নয়া কমিটি গঠনেও।