পা বাড়ালেই রামনাবাগানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অকৃত্রিম, জীব বৈচিত্রই এর সম্পদ
জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো যাদের নেশা, তাদের কাছে হটস্পট হতে পারে রামনাবগান অভয়ারণ্য। বন্যপ্রাণীদের নানা মুহূর্তের ছবি যারা ক্যামেরাবন্দি করতে ভালোবাসেন, তাঁরাও ঢুঁ মারতে পারেন এই বনে। অকৃত্রিম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের বুকে বসে এক বুক দম নেন। আরাম পাবেন। সঙ্গে সময় যে কীভাবে কেটে যাবে তা টেরই পাবেন না। হারিয়ে যাবেন নিঃস্তব্ধতায়। জীব বৈচিত্রে ভরে যাবে মন ও প্রাণ। সেই রামনাবাগান বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভ্রমণ পিপাসু বাঙালির কাছে এক বেলার দারুণ আউটিং হতে পারে। ফলে দেরি না করে তৈরি করে ফেলুন পরিকল্পনা। উৎসবের মরসুমে হাওয়া বদলের আদর্শ ঠিকানা হতে পারে বর্ধমানের এই অভয়ারণ্য।

ইতিহাস
১৪.৩১ হেক্টরের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা রামনাবাগান বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ১৯৬০ সালে সংরক্ষিত জঙ্গলের সরকারি স্বীকৃতি পেয়েছিল। ১৯৭৮ সালে এই অরণ্যে ৬টি হরিণকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। তারপরই এই স্থানকে অভয়ারণ্যের তরজা দিয়েছিল প্রশাসন। শাল, সেগুন, পিয়ালের বনে ঘুরে বেড়ায় নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও পাখি। যা দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ।

অবস্থান
রাজ্যের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও বর্ধিষ্ণু জেলা বর্ধমানের গর্ব হিসেবে চিহ্নিত হয় রামনাবাগান বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য। বর্ধমান স্টেশন থেকে চার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই নিরিবিলি বনভূমি। বর্ধমান থেকে দুর্গাপুরমুখী জিটি রোড বা দুই নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ৫০ মিটার এগোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই রামনাবাগান অভয়ারণ্যে।

পৌঁছনোর পথ
কলকাতা থেকে ট্রেন ধরে পৌঁছে যান বর্ধমান। স্টেশন থেকে দুর্গাপুরগামী বাসে উঠে পড়ুন। নামতে হবে গোলাপবাগ মোড়। সেখান থেকে থেকে সুকুমার সেন রোড ধরে খানিকটা এগোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় রামনাবাগান অভয়ারণ্য। কলকাতা, দুর্গাপুর, আসানসোল থেকে বহু মানুষ প্রাইভেট গাড়িতে এক বেলার জন্য ঘুরে যান এই বন। কলকাতা থেকে অনেকে বাসে করেও গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করেন।

দেখার আছে কী
১৯৮৮ সালে এই অভয়ারণ্যে ২৭টি চিত্রা হরিণের পাশাপাশি আটটি মায়া ও একটি কৃষ্ণসার হরিণও ছিল। বর্তমানে তাদের সম্মিলিত সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬০। তার মধ্যে চিত্রা হরিণের সংখ্যা ৫০। রামনাবাগান অভয়ারণ্যে ঘুরে বেড়ায় চিতা ও ভাল্লুক। নোনাজলে নড়েচড়ে বেড়ানো কুমীর এই স্থানের অন্যতম আকর্ষণ। বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ, হাঁস এবং পরিযায়ী পাখিদের ভিড় ও তাদের কলতান পর্যটকদের মন ভালো করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

থাকার জায়গা
রামনাবাগান অভয়ারণ্যের আশেপাশে থাকার তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। সাধারণত বর্ধমান কিংবা দুর্গাপুরে এক রাত থেকে এক বেলার জন্য এই অভয়ারণ্যে ঢুঁ মারেন পর্যটকরা।