পাকিস্তানকে দোষারোপ
প্রসঙ্গত, তালিবানরা কাবুল দখল নেওয়ার পর দেশ ছাড়েন আরিয়ানা। কিন্তু তিনি কোথায় রয়েছেন তা গোপনে রেখে সংবাদ মাধ্যমদের সঙ্গে ভিডিও বার্তায় কথা বলার সময় তিনি জানান যে এমন প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে পাকিস্তানরাই ক্ষমতায়ন করেছে তালিবানদের। ভিডিওতে বলেন আরিয়ানা সঈদ বলেন, ‘আমি পাকিস্তানকে দোষারোপ করছি। বছরের পর বছর ধরে আমরা ভিডিওতে দেখেছি এবং প্রমাণ পেয়েছি যে তালিবানদের ক্ষমতায়ন করেছে পাকিস্তান। আমাদের দেশের সরকার যখনই কোনও তালিবানের পরিচয় খতিয়ে দেখেছে, তখনই দেখা গেছে ওই ব্যক্তি একজন পাকিস্তানি। এজন্য আমি পাকিস্তানকেই দোষ দেব। আশা রাখি ওরা ফিরে যাবে এবং আফগানিস্তানের রাজনীতিতে আর হস্তক্ষেপ করবে না।' তালিবান সন্ত্রাসবাদীদের পাকিস্তান নির্দেশ দিচ্ছে ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলেও দাবি করেন আরিয়ানা।
পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ পাচ্ছে তালিবানরা
আরিয়ানা এও বলেন, ‘তালিবানদের নির্দেশ দিচ্ছে পাকিস্তান, তাদের ভিত পাকিস্তানে যেখান থেকে তারা প্রশিক্ষণ পাচ্ছে। আমি আশা রাখব আন্তর্জাতিক কমিউনিটি, প্রথমে পাকিস্তানকে আর্থিক সহযোগিতা করা বন্ধ করে দিন এবং তালিবানকে অর্থ দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে।' আরিয়ানা আর্জি জানিয়েছেন যে আন্তর্জাতিক কমিউনিটি যেন বসে আলোচনা করে এবং আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সমাধান সূত্র বের করে। তাঁর কথায়, ‘আশা করি ওরা পাকিস্তানের উপর চাপ তৈরি করতে পারবে। বিশ্বাস করি, আফগানিস্তানের এই অবস্থার মূলে পাকিস্তান।'
ভারতের প্রশংসায় আরিয়ানা
তবে এর পাশাপাশি আরিয়ানা সঈদ ভারত সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ভারতকে আফগানিস্তানের সত্যিকারের বন্ধু বলে অ্যাখা দেন। তিনি বলেন, ‘ভারত সবসময় আমাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করে এসেছে। তারা আমাদের সত্যিকারের বন্ধু, ভারত আমাদের জনগণ, এমনকি শরণার্থীদের প্রতি খুব সহায়ক এবং সদয়। আমি আফগানিস্তানের তরফে ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই এবং ধন্যবাদ জানাতে চাই।'
মহিলাদের স্বাধীনতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ
আরিয়ানা আরও জানান, তালিবানদের রাজত্বে নারীরাই সবথেকে বেশি অরক্ষিত। মহিলাদের রাস্তায় বের হওয়ার স্বাধীনতাও কেড়ে নেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এই পপ তারকা। তিনি আরও বলেন, ‘আপাতত দেশের বাইরে থেকেই কাজ করতে চাই।' তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের বাইরেও আমার অসংখ্য অনুরাগী রয়েছেন। আমি গান থামাব না। আফগানিস্তানের মানুষদের উৎসর্গ করেই সঙ্গীতচর্চা চালিয়ে যাব আমি।'
নির্ভীক ও দুঃসাহসী আরিয়ানা
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ট্যাবু ভেঙে হিজাব না পরে স্টেডিয়ামে গান গেয়েছিলেন আরিয়ানা সঈদ। কিন্তু তালিবান শাসনে এখন সবই নিষিদ্ধ। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আরিয়ানা আফগান মহিলাদের হয়ে নিজের সুর চড়িয়েছেন। তিনি বরাবরই ছিলেন নির্ভীক প্রকৃতির। আফগানিস্তানের মতো দেশেও তিনি খোলামেলা পোশাকে ঘুরতেন। বর্তমানে তিনি দেশছাড়া হলেও আফগানিস্তানের মানুষদের জন্য তিনি আওয়াজ তুলবেন। তাঁর কথায়, ‘আমি আমার বক্তব্য প্রচার করবই। আফগানিস্তান ও আফগানদের জন্য কী করা যায়, তা দেখছি।'