আফগান ক্রিকেট বোর্ডে তালিবানরা
এদিনই আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করছে। যাতে দেখা যাচ্ছে আফগানিস্তানের প্রাক্তন জাতীয় দলের ক্রিকেটার আবদুল্লাহ মাজারিকে সঙ্গে নিয়ে তালিবানরা পৌঁছে গিয়েছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সদর দফতরে। তা দেখে অনেকে মজা করে লিখছেন, এটা আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড, নাকি তালিবান ক্রিকেট বোর্ড? যদিও আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সিইও অবশ্য আগাগোড়া দাবি করে এসেছেন, তালিবানরা ক্রিকেট-অনুরাগী, তাই ক্রিকেট চলবে আপন পথেই। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে তালিবান সরকার প্রথমে অন্য খেলাধুলোর সঙ্গে ক্রিকেট খেলার অনুমতি না দিলেও ২০০০ সালে নিজেদের অবস্থান পাল্টায় আফগানিস্তান যাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বীকৃতি লাভ করে সেজন্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে সমর্থনের আর্জিও জানানো হয়েছিল। পাকিস্তানে শরণার্থী শিবিরে থাকাকালীন আফগানরা ক্রিকেটে দক্ষ হয়ে ওঠেন। তিন ফরম্যাটেই খেলার স্বীকৃতি রয়েছে আফগানিস্তানের। ১২ বছরের মধ্যেই নিজেদের খেলাকে উন্নত জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি রশিদ খানরা বিশ্বের সেরা দশজনেও ঠাঁই পেয়েছেন। যদিও তালিবান জমানায় মহিলা ক্রিকেট বা ফুটবলের সামনে রয়েছে শুধুই অনিশ্চয়তা।
ছবি- টুইটার
|
ক্রিকেটে সবুজ সঙ্কেত?
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সূত্রে খবর, তালিবানরা রশিদ খানদের শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তাই জানিয়েছে, সূচি মেনেই হবে শ্রীলঙ্কা সফর। পিসিবি-র কাছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে ইতিমধ্যেই আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, তালিবানরা ক্রিকেট চালিয়ে নিয়ে যেতে আপত্তি জানায়নি। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট ২৪ অগাস্ট শেষ হলেই শ্রীলঙ্কার মাটিতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করবে পিসিবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে তালিবানদের উপস্থিতির ছবি ঘোরাফেরার মধ্যেই আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের টুইটার হ্যান্ডলে স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেট সংক্রান্ত নানা পোস্ট করা হচ্ছে। স্থানীয় ক্রিকেট লিগে দল গঠন সংক্রান্ত একটি পোস্টও এদিন করা হয়েছে।
আশাবাদী পিসিবি
জানা গিয়েছে, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান-সহ আফগানিস্তানের যে সব ক্রিকেটার ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে ক্রিকেট লিগ খেলতে রয়েছেন তাঁদের বাদ দিয়ে বাকিরা কাবুলে অনুশীলন করছেন। লাহোরে ২১ থেকে ২৮ অগাস্ট অবধি পাকিস্তানও একদিনের সিরিজের জন্য শিবির আয়োজন করবে। ২৯ অগাস্ট পাকিস্তান দল শ্রীলঙ্কা রওনা হবে। মনে করা হচ্ছে, বিশ্বের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ক্রিকেটকে বেছে নিচ্ছে তালিবানরা। যদিও মহিলা ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় রয়েছেই। এই প্রথম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে আফগানিস্তান। তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজের আয়োজক দেশ হিসেবে। শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত এই সিরিজে আফগানিস্তানের ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে শ্রীলঙ্কারই প্রাক্তন আবিষ্কা গুণবর্ধনেকে। ১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর হাম্বানটোটায় ম্যাচগুলি হওয়ার কথা। এই সিরিজ ২০২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠানে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের লিগেরও অঙ্গ হতে চলেছে।
উদ্বিগ্ন নিউজিল্যান্ড
আফগানিস্তানের দখল তালিবানরা নেওয়ায় যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তাতে উদ্বিগ্ন নিউজিল্যান্ডও। সে কারণে পাকিস্তান সফরে যাওয়া নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন নিউজিল্যান্ডের কয়েকজন ক্রিকেটার। তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিক ও পাঁচটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নিউজিল্যান্ডের ইসলামাবাদ পৌঁছানোর কথা ১১ সেপ্টেম্বর। রাওয়ালপিন্ডি ও লাহোরে সিরিজ চলবে ৩ অক্টোবর অবধি। এই অবস্থায় চলতি সপ্তাহেই নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট আধিকারিকরা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও বিশেষজ্ঞ রেগ ডিকাসনকে পাকিস্তানে পাঠাচ্ছে। তিনি নিরাপত্তা ও কোভিড পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যে রিপোর্ট দেবেন তার উপরই নির্ভর করবে নিউজিল্যান্ডের পাকিস্তান সফর। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় দেখতে বাংলাদেশেও একজন প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছে কেন উইলিয়ামসনদের ক্রিকেট বোর্ড। নিউজিল্যান্ডের অনেকেই আইপিএল খেলবেন। ফলে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সফরে এমনিতেই দ্বিতীয় সারির দল খেলবে। তারপরও সে দেশের বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, যদি কেউ সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে যেতে না চান তাহলে কোনও সমস্যা নেই। তিনি নির্দ্বিধায় সরে দাঁড়াতেই পারেন।