অত সহজ নয়!
'একটি দেশকে আইনের শাসন মানতে হবে। হিংসার শাসন নয়। আফগানিস্তান অনেক বড় দেশ পাকিস্তানের গ্রাসের পক্ষে বা তালিবানের শাসনের পক্ষে। ইতিহাস এমনভাবে লিখতে দেবেন না যেখানে লেখা থাকবে, যে সন্ত্রাসীরা রাজত্ব করে গিয়েছে আপনার ভূমি', সোজাসুজি এই ভাষায় দেশবাসীকে জাগ্রত করে আমরুল্লাহর দাবি কোনও মতে লড়াই জিইয়ে রেখে তালিবান মুক্ত করতে হবে আফগানিস্তান। ১৫ অগাস্ট যখন কাবুল পতন হয়, তখন সেদেসের প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি পতদ্যাগ করে পালিয়ে যান। তবে দেশের মাটি ছাড়েননি ভাইস প্রেসিডেন্ট সালেহ। মাটি কামড়ে লড়াই করছেন তিনি।
পাঁচ সিংহের এলাকা পাঞ্জশিরের অন্যতম 'যোদ্ধা'
আমরুল্লাহ সালেহ বাহিনী আফগানিস্তানের উত্তর প্রান্তের পাঞ্জশিরে তালিবান ঢুকতে চেয়েও পারেনি। চরমভাবে সালেহর যোদ্ধাদের কাছে পরাস্ত হয় তারা। এদিকে, এককালে তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন উপজাতি নেতা আহমেদ শাহ মাসুদ। তাঁকে আল কায়দা খুন করলেও দমেননি তাঁর ছেলে আহমেদ মাসুদ। এই আহমেদ মাসুদের বাহিনীর সঙ্গে আমরুল্লাহর বাহিনী যোগ দিয়ে এক যোগে তালিবান দমন করছে। যার উদাহরণ পাঞ্জশির।
বীর দর্পে ঘোষণা
যে দিন আফগানিস্তান কার্যত তালিবানের কাছে পর্যুদস্ত হয়, সেই দিনই আমরপল্লাহ জানিয়েছেন , দেশের প্রেসিডেন্ট দেশের মাটি ছেড়ে পালিয়ে গেলে , তাঁর ডেপুটিই দেশের কেয়াকটেকার প্রেসিডেন্ট হন। আর সেই মতো তিনিই আফগানিস্তানের কেয়ার টেকার প্রেসিডেন্ট। কারণ তিনি এখনও দেশ আগলে , দেশের মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন তালিবানকে হঠাতে। সদর্পে তিনি জানিয়েছেন, 'যুদ্ধ শেষ হয়নি'।
কে আমরুল্লাহ সালেহ?
এক কালে আফগানিস্তানের গুপ্তটর হিসাবে বহুদিন ধরে দেশসেবা করেছেন সালেহ। ১৯৭২ সালে তািনি পাঞ্জশিরের তাজাক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। খুব কম বয়সেই তিনি পিতা মাতা হারা হন। যোগ দেন আহমেদ শাহ মোসাদের বাহিনীতে। বদ্ধ পরিকর হন তিনি তালিবানকে হঠাবেন।
বোনের নির্যাতনের প্রতিশোধই লক্ষ্য!
শোনা যায়, সালেহর বোনকে ১৯৯৬ সালে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর নাররকীয় অত্যাচার করে। তারপর বোনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনা কার্যত প্রতিশোদ স্পৃহা বাড়িয়ে দেয় সালেহর মধ্যে। আমেরিকায় ৯/১১ এর হানা পর্যন্ত আহমেদ শাহর বিশ্বস্ত গুপ্তচর হয়ে কাজ করেন সালেহ। সেদেশের মাসুদের নর্দান অ্যালায়েন্সের হয়ে গোয়েন্দাদের তথ্য সরবরাহ ও সিআইএর কাছে বহু তথ্য সরবরাহ করেছেন সালেহ। ফলে আফগান প্রান্তরে তালিবান যদি পেশীশক্তিতে সমর্থ হয়, তাহলে যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শিতার অন্যন্য ক্ষমতা রয়েছে সালেহর। ২০০৪ সালে তিনি আফগান গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান নিযুক্ত হন। তালিবানদের জন্যও যেমন তাঁর মনে রয়েছে ক্ষোভ, তেমনই পাকিস্তানের প্রতিও রয়েছে আক্রোশ। একজন গুপ্তচর থেকে । যেমন তিনি দেশের রাজনৈতিক নেতা হয়েছেন, তেমনই দেশের খারাপ সময়ে তিনি ফের একবার যোদ্ধা হিসাবে শক্রুর দমনে অস্ত্র ধরতে ছাড়েননি।