কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে সিবিআই তদন্তের কথা বলার পর থেকেই রাজ্যের শাসক দলের উদ্দেশ্যে আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধীরা। পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে উদ্যোগ প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই ও SIT এর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে৷ এই বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে একহাত নিলেন সিপিএমের শীর্ষনেতা সুজন চক্রবর্তী।
হাইকোর্টের রায় নিয়ে বলতে গিয়ে সুজনবাবু বলেন, 'সবচেয়ে মজার বিষয় ভোট চলাকালীন ও তার পরে রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে যখন অভিযোগ জানানো হয়েছিল তখন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পাল্টা মানহানির মামলা করতে চেয়েছিলেন। কোর্ট সেই মামলা গ্রহণ না করে বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতো নেতারা প্রকাশ্যে বলেন, বিরোধীদের সাপের মতো পিটিয়ে মারতে হবে। তথচ তার বিরুদ্ধে কোর্টে কোনও অভিযোগ হয় না। এতেই বোঝা যায় আমাদের রাজ্যের অবস্থা কীরকম! এদের মানহানির মামলা করতে লজ্জাও করে না৷
এরপর সুজন বাবু আরও বলেন, কোর্টের (কলকাতা হাইকোর্টের) এই রায়কে আমি স্বাগত জানাচ্ছি৷ কোর্ট ক্ষতিপূরণের কথা বলেছে সেটাও ভালো বিষয়৷ কিন্তু সব ক্ষতির তো আর ক্ষতিপূরণ হয় না। সেক্ষেত্রে কোর্ট কী করবে আমি জানি না৷ তবে তাও এই ক্ষতিপূরণের বিষয়টি, কোর্টের এই মানসিকতা যথেষ্ট সদর্থক।
কোর্টের এই রায়ে রাজ্যের বিরোধী রাজনীতির লোকরা কি ন্যায় বিচার পাবেন? এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সুজন বাবু বলেন, দেখুন আমরা ২০১৮ র পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০১৫ র পৌর নির্বাচন দেখেছি কী ভয়ঙ্কর অবাস্থা ছিল৷ সে পশ্চিমবঙ্গ হোক কিংবা উত্তরপ্রদেশ, তৃণমূল হোক কিংবা বিজেপি, শাসকদল যে অত্যাচার চালাচ্ছে, মানুষের কন্ঠরোধ করতে চাইছে মানুষের সামনে আইনের উপর ভরসা রাখাই একমাত্র পথ।
এরপর কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে সুজনবাবু বলেন, এই রায়ে রাজ্যের হিংসার চেহারাটা স্পষ্ট। এমনকি রাজ্য সরকারের ডিজি যে রিপোর্ট দিয়েছে সেটাতেও স্পষ্ট যে রাজ্যে কোন পরিস্থিতিতে রয়েছেন বিরোধীরা৷ এরপর কেন্দ্রীয় হিউম্যান রাইটস কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগকেও উড়িয়ে দিয়ে সুজনবাবু বলেন ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই রায় এসেছে৷
তবে শুধু সুজন চক্রবর্তী নন, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুও এই ইস্যুতে তৃণমূলকে একহাত নেন। হাইকোর্টের রায় নিয়ে সায়ন্তন বলেন, দেখুন রাজ্যে যে অরাজকতার পরিবেশ রয়েছে সেটা স্পষ্ট৷ বিরোধীদের উপর যে অত্যাচার চলছে, বিজেপি কর্মীদের খুন করা হচ্ছে তা কার্যত কোর্টের রায়ে স্পষ্ট৷ আমরা এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি৷ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই রায় দিয়েছেন যে পাঁচজন বিচারপতি তাঁরা সবাই সহমত ছিলেন রাজ্যে শাসকদলের খুনের রাজনীতি নিয়ে৷ এটাই স্পষ্ট করে কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে রাজ্যে তৃণমূলের শাসন।