ট্রায়ালের রিপোর্ট পাওয়া যাবে শীঘ্রই
সর্বভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির ডিরেক্টর প্রিয়া আব্রাহাম জানিয়েছেন, তিনি আশা করছেন শিশুদের ওপরে কোভ্যাক্সিনের ট্রায়ালের রিপোর্ট শীঘ্রই প্রকাশিত হবে। এরপর সেই রিপোর্ট নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সামনে রাখা হবে। সেক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর কিংবা তার পরে শিশুদের জন্য করোনার ভ্যাকসিন এসে পড়বে। পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির ডিরেক্টর এই কথা বলেছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ওটিটি চ্যানেল ইন্ডিয়া সায়েন্সের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে।
কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোভ্যাস্কিন তৈরি করেছে আইসিএমআর এবং হায়দরাবাদের ভ্যাকসিন প্রস্তুত কারক সংস্থা ভারত বায়োটেক। যা দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম ভ্যাকসিন। এখনও পর্যন্ত দেশে National Covid-19 immunisation programme-এর অন্তর্ভুক্ত যে তিনটি ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে, তার মধ্যে কোভ্যাক্সিন হল অন্যতম। এছাড়াও বাকি দুটি হল সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড এবং রাশিয়ার স্পুটনিক ভি।
ডিজিসিআই আগেই অনুমতি দিয়েছে
জানুয়ারি মাসেই ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার তরফে দেশে কোভ্যাক্সিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যা এখনও শিশুদের জন্য ব্যবহারের অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে যদি অনুমতি মেলে তাহলে জাইডাস ক্যাডিলার জাইকভ-ডিও দেশে শিশুদের দেওয়া হতে পারে। যা এখন ডিজিসিআই-এর অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে।
পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির ডিরেক্টর প্রিয়া আব্রাহাম জানিয়েছেন, জাইডাস ক্যাডিলার ভ্যাকসিনের ট্রায়ালও চলছে। অনুমতি পাওয়ার পরে যা শিশুদের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
বুস্টার ডোজ নিয়ে গবেষণা
তিনি আরও বলেছেন, ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ নিয়ে বিদেশে গবেষণা চলছে। সেখানে অন্তত সাতটি ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে। তবে সেই কাজ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বন্ধ রাখতে বলেছে। কেননা এখনও অনেক দেশ ভ্যাকসিনেশনে পিছিয়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে উচ্চ আয় এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলির মধ্যে বড় ব্যবধান তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে তিনি মনে করেন ভবিষ্যতে বুস্টার ডোজের জন্য অনুমতি দেওয়া হবে।
আব্রাহাম বলেছেন, দুটি ভ্যাকসিনের মিশিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে কোনও উদ্বেগ নেই। দুটি ভিন্ন ভ্যাকসিনের দুটি করে ডোজ মানুষ নিয়েছেন। তারা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিতে দেখেছেন, যেসব রোগীরা দুটো বিভিন্ন ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাঁরা সুস্থই রয়েছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে আলাদা করে কোনও প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এছাড়াও তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও খানিকটা বেশিই। তিনি আরও বলেছেন, এব্যাপারে গবেষণা চলছে, বিস্তারিত দিন কয়েকের মধ্যে পাওয়া যাবে।
ভ্যাকসিন কাজ করছে ভাইরাসের বিরুদ্ধে
পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির ডিরেক্টর প্রিয়া আব্রাহাম জানিয়েছেন, গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভ্যাকসিন নিতে হবে। যা বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করছে, তা গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। কেননাা যাঁরা ভ্যাকসিন নিয়েছে, তাঁদের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। তবে তিনি জানিয়েছেন, অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা কোনও কোনও ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে কম বলেও দেখা গিয়েছে। তবে ভ্যাকসিন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। কোনও কোনও ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কমে গেলেও তা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করছে। এক্ষেত্রে মৃত্যু থেকে রক্ষা পাচ্ছেন রোগীরা কিংবা হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে না। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য বলে জানিয়েছেন পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির ডিরেক্টর। সেই কারণে ভ্যাকসিন নিতে কোনও দ্বিধা করা উচিত নয় বলেও মনে করেন তিনি।
এর আগে এইমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়াও বলেছিলেন, শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হতে পারে সেপ্টেম্বর থেকে। তিনি বলেছিলেন ফাইজার, ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন এবং জাইডাসের ভ্যাকসিন শিশুদের জন্য পাওয়া যেতে পারে।