নারী স্বাধীনতা ইসলাম আইন মেনেই, লক্ষ্মণ রেখা টেনে দিল তালিবানরা, সংবাদ মাধ্যমকে কড়া বার্তা

অবশেষে নারী স্বাধীনতা নিয়ে সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল তালিবানরা। একেবারে সাংবাদিক বৈঠক করে তালিবানদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আফগানিস্তানে নারী স্বাধীনতা ততটাই যতটা ইসলামে রয়েছে। সাংবািদক বৈঠকে তালিবানদের মুখপাত্র জুবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, মার্কিন শাসন থেকে আফগানবাসীকে মুক্ত করার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশের সংবাদ মাধ্যমকে কড়া বার্চা দিয়ে তালিবানরা জানিয়েছেন, দেশ বিরোধী কোনও খবর করা যাবে না।

প্রশ্নের মুখে নারী স্বাধীনতা

তালিবানরা আফগানিস্তান দখল নিতেই ২০ বছর আগের ভয়াবহ স্মৃতি তাড়া করে বেড়াচ্ছিল গোটা দেশকে। ফের বোরখার ছায়ায় চলে যেতে হবে নারীদের। বাড়ির বাইরে বেরোন বন্ধ। কাজ বন্ধ। পা দেখা যাবে না এমন পোশাকে সবসময় নিজেদের ঢেকে রাখতে হবে। আর পড়াশোনা চাকরি সে তো শিকেয় উঠবে। তার উপরে অত্যাচারের পারদ চড়বে। ভয়ঙ্কর দিনের দিকে তাকিয়ে শিউরে উঠছিলেন আফগানিস্তানের নারীরা। ২০ বছর আগের ভয়ঙ্কর সেই পরিস্থিতির মধ্যে আর পড়তে চাইছিলেন না তাঁরা। ভয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে আফগানিস্তানে।

নারী স্বাধীনতা নিয়ে বার্তা

এবার তালিবানরা আফগানিস্তান দখলে নিতেই একটু অন্য সুরে কথা বলতে শুরু করে। তারা নারী স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হবে না বলে বার্তা দিতে শুরু করে। তবে তাঁদের এই বার্তায় তেমন আশ্বস্ত ছিলেন না কেউই। শেষে দেশের মহিলা চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তাঁরা। এবং তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তালিবানরা। তারপরেই সাংবাদিক বৈঠক করে তালিবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়। আর নারী স্বাধীনতা তারা ততটাই সুরক্ষিত রাখবেন যতটা ইসলাম বলে। অর্থাৎ ইসলামে নারী স্বাধীনতা নিয়ে যা বলা হয়েছে সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন তালিবানদের মুখপাত্র।

সংবাদ মাধ্যমকে কড়া বার্তা

তালিবানের শাসনে দেশ চলে যাওয়ার পরেও সেদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলি কাজ করে যাচ্ছিল। কাবুল সহ দেেশর পরিস্থিতির তারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরছিল। তালিবান নেতাদের ইন্টারভিউ পর্যন্ত সম্প্রচার করেছে সংবাদ মাধ্যমগুলি। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে তালিবান মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমগুলিকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তাঁরা যেন কোনও ভাবেই দেশ বিরোধী খবর সম্প্রচার না করেন। সেটা তালিবানরা বরদাস্ত করবে না। দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনও খবর প্রকাশ করা যাবে না বলে জানিয়েছে তারা।

বাইরের দেশকে আশ্বাস তালিবানদের

প্রতিবেশি রাষ্ট্র যারা তালিবান শাসনের ভয়ে ছিল তাদের আশ্বস্ত করে তালিবানরা জানিয়েছে আফগান ভূমিকে তারা কিছুতে প্রতিবেশি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে না। তাই গোটা বিশ্বের উচিত তাঁদের সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া। কাবুলের সব দেশের দূতাবাসের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে বলে জানিতেছে তালিবানরা। দেশের ভেতরে এবং বাইরে কোনও রকম শত্রুতা তারা আর চাইছে না বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছে। যাঁরা মার্কিন সেনাসঙ্গে কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। এমনকী সেই সব সেনাদের বাড়িতেও কেউ তল্লাশি চালাবে না বলে আশ্বস্ত করেছে তালিবানরা।

বদলে গিয়েছে তালিবানরা

২০ বছর আগে যে তালিবান ছিল সেই তালিবান আর নেই বলে দাবি করা হয়েছে। মুসলিম বলে তাঁদের নীতি এবং আদর্শ এক থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিন্তাভাবনা বদলেছে। তাই নব্বইয়ের দশকের তালিবানদের সঙ্গে এখনকার তালিবানদের মিলিয়ে দিলে চলবে না। আফগানিস্তানকে তাঁরা আর পোস্ত আর অফিম চাষের ভূমি হতে দেবে না। যাঁরা আফগানিস্তানকে এই কাজে ব্যবহার করেছে এতদিন তাঁরা অন্য জায়গা খুঁজে নিক বলে হুঁশিয়ার করেছে তালিবান মুখপাত্র।

More TALIBAN News  

Read more about:
English summary
Talibans on Women rights
Story first published: Tuesday, August 17, 2021, 22:50 [IST]