একা কুম্ভ রক্ষা
১৫তম ওভারে মহম্মদ সিরাজ দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে আউট করেছিলেন ডম সিবলি ও হাসিব হামিদকে। প্রথম ইনিংসে ভারত ৩৬৪ রান তোলার পর ১৪.৩ ওভারে ২৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে দল যখন বেকায়দায় তখন ব্যাট হাতে লর্ডসে প্রবেশ অধিনায়ক জো রুটের। এরপর ররি বার্নসকে সঙ্গী করে দলের রান একশো পার করেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ওঠে ৮৫ রান। ১০৮ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ার পর গতকাল দিনের শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১১৯। জো রুট ৪৮ ও জনি বেয়ারস্টো ৬ রানে ক্রিজে ছিলেন। আজ টেস্টের তৃতীয় দিনে প্রথম সেশনে ভারতীয় বোলাররা একটিও উইকেট তুলতে পারেননি। চলতি সিরিজে কোনও সেশনে ইংল্যান্ড একটিও উইকেট হারায়নি এমন ঘটনা হল এদিনই প্রথম। ফলে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ২১৬। রুট ৮৯ ও জনি বেয়ারস্টো ৫১ রানে ক্রিজে ছিলেন। লর্ডস টেস্ট নিয়ে চলতি বছর বেয়ারস্টোর সঙ্গে রুট তৃতীয়বার একশোর বেশি রানের পার্টনারশিপ গ়লেন। গলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দুটি টেস্টের পর ভারতের বিরুদ্ধে লর্ডসে। চলতি বছর পাঁচটি একশো বা তার বেশি রানের পার্টনারশিপ-সহ টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রথম ১৫টি বড় পার্টনারশিপে একজনের নাম কমন। অধিনায়ক জো রুট। চেন্নাই টেস্টে ডম সিবলিকে নিয়ে ২০০ রান যোগ করেছিলেন, সেটাই সেরা। ভারতের বিরুদ্ধে রুটের শতরানের পার্টনারশিপ তিনটি, সিবলি, স্টোকস ও লরেন্সকে নিয়ে।
|
পরপর শতরান
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর ৭৮.৪ ওভারে জনি বেয়ারস্টো মহম্মদ সিরাজের বলে বিরাট কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ১০৭ বলে ৫৭ রান করে আউট হন বেয়ারস্টো, মেরেছেন সাতটি চার। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১২১ রান যোগ করে দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে যান বেয়ারস্টো ও রুট। ৮০.১ ওভারে নতুন বল নেয় ভারত। যদিও তাতেও অবিচল থাকেন ইন-ফর্ম জো রুট। কেরিয়ারের ২২তম টেস্ট শতরান তিনি পূর্ণ করেন ২০০ বল খেলে, ৯টি বাউন্ডারির সাহায্যে। ২০২১ সালে এটি তাঁর পঞ্চম টেস্ট শতরান। ভারতের বিরুদ্ধে সপ্তম টেস্ট শতরান। এ ছাড়া ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে তাঁর ১০টি অর্ধশতরান রয়েছে টেস্টে। উল্লেখ্য, ট্রেন্ট ব্রিজে শতরানটি ছিল ২০১৮ সালের পর দেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট শতরান।
স্বপ্নের ফর্মে
গতকাল রুট যখন ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন টেস্ট কেরিয়ারের নয় হাজার রান পূর্ণ করতে তাঁর দরকার ছিল ৬৫ রান। শতরান পূর্ণ করার পর সেই মাইলস্টোনও পেরিয়ে যান রুট। ২০২১ সালে তিনি রয়েছেন স্বপ্নের ফর্মে। এই নিয়ে ১০টি টেস্ট খেলছেন, তার পাঁচটিতেই শতরান। গলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে প্রথম ইনিংসেই করেছিলেন ২২৮ রান, দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১। গলে দ্বিতীয় টেস্টে করেন ১৮৬ ও ১১। চেন্নাইয়ে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসেই হাঁকান ২১৮। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪০। তারপর ভারতের বিরুদ্ধে ওই সিরিজে তাঁর রান ছিল যথাক্রমে ৪০, ৬, ৩৩, ১৭, ১৯, ৫ ও ৩০। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে লর্ডস ও বার্মিংহ্যাম টেস্টে চার ইনিসে তাঁর রান ছিল যথাক্রমে ৪২, ৪০, ৪ ও ১১। ট্রেন্ট ব্রিজে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে ৬৪ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১০৯ রান। দলের বাকিরা ব্যাট হাতে সফল না হলেও মুখরক্ষা করে ম্যাচের সেরাও হন রুট। ট্রেন্ট ব্রিজে যেখানে শেষ করেছিলেন, লর্ডসে সেখান থেকেই যেন শুরু করেছেন।
চাপে ভারত
জস বাটলার ইশান্ত শর্মার সঙ্গে বোল্ড হয়েছেন ব্যক্তিগত ২৩ রানে। ২৮৩ রানে পঞ্চম উইকেট পড়ে ইংল্যান্ডের। এরপর জো রুট ও মঈন আলির জুটিতে ৫০-এর বেশি রান উঠেছে। এই জুটিতে ভর করে ইংল্যান্ড পেরিয়ে গিয়েছে ৩০০ রানের গণ্ডিও। যেভাবে ইংল্যান্ড ব্যাটিং চালিয়ে যাচ্ছে রুটের নেতৃত্বে তাতে প্রথম ইনিংসে ভারতের পিছিয়ে পড়া সময়ের অপেক্ষা। ভারতীয় দল স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে মিস করবে বলে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা যেমনটা মনে করছিলেন পরিস্থিতি সেদিকেই এগোচ্ছে। রবীন্দ্র ১৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২৭ রান দিয়ে একটিও উইকেট পাননি। সিরাজের ঝুলিতেই এসেছে তিনটি উইকেট। জসপ্রীত বুমরাহ ২০ ওভার হাত ঘুরিয়ে উইকেট পাননি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন ইশান্ত শর্মা ও মহম্মদ শামি। ইংল্যান্ড আজ প্রথম সেশনে তোলে ৯৭ রান, কোনও উইকেট না হারিয়ে। দ্বিতীয় সেশনে উঠেছে ৯৮ রান, দুটি উইকেট হারিয়ে। সবচেয়ে বড় কথা অপরাজিত রয়েছেন জো রুট। চা বিরতিতে ইংল্যান্ডের স্কোর ৫ উইকেটে ৩১৪। মঈন আলি ২০ রানে ক্রিজে রয়েছেন। রুট অপরাজিত ২৩৭ বলে ১৩২ রানে। মেরেছেন ১২টি বাউন্ডারি।