|
সাড়াজাগানো উত্থান
অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্স করেছিলেন উন্মুক্ত চাঁদ। টাউন্সভিলে অনুষ্ঠিত ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৬ উইকেটে হারিয়ে অনূ্র্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জেতে চাঁদের নেতৃত্বাধীন ভারত। ফাইনালে ১৩০ বলে ১১১ রান করে অপরাজিত থেকে ম্যাচের সেরাও হয়েছিলেন উন্মুক্ত। সেই দলে থাকা হনুমা বিহারী এখন ভারতীয় টেস্ট দলের সঙ্গে রয়েছেন, দেশের হয়ে টেস্টও খেলেছেন। কিন্তু উন্মুক্ত চাঁদ ভারতীয় এ দলের হয়ে খেললেও সিনিয়র দলে জায়গা পাননি। এতে তিনি যে হতাশ তা তাঁর বিবৃতিতেও স্পষ্ট। যদিও ক্রিকেটে নিজের প্রতিভাকে মেলে ধরার সুযোগ দেওয়ার জন্য বিসিসিআইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন উন্মুক্ত।
|
উন্মুক্তের কেরিয়ার
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক হয় দিল্লির হয়ে ২০১০ সালে। তখন তিনি স্কুলের ছাত্র। গত বছর রঞ্জির এলিট গ্রুপ সি-তে উত্তরাখণ্ডের হয়ে দেরাদুনে হরিয়ানার বিরুদ্ধে শেষ প্রথম শ্রেণির খেলেছেন। ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে দিল্লির হয়ে শেষ টি ২০ খেলেছেন। ওই বছরই উত্তরাখণ্ডের হয়ে লিস্ট এ বা ৫০ ওভারের ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁকে দেখা গিয়েছে। ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল অবধি রাজস্থান রয়্যালস, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে ছিলেন। আইপিএলে ম্যাচ খেলেছেন ২১টি। রান ৩০০, সর্বাধিক ৫৮। ২০১৬ সালের আইপিএলে মাত্র একটিই ম্যাচ খেলেন। সবচেয়ে বেশি ৯টি ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৩-র আইপিএলে। রান করেছিলেন ১৫৮। ৬৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৮টি শতরান ও ১৬টি অর্ধশতরান-সহ ৩৩৭৯ রান রয়েছে চাঁদের, সর্বাধিক ১৫১। এই ১৫১ রানটি এসেছিল তাঁর চতুর্থ ম্যাচেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলেছেন ১২০টি, সাতটি শতরান ও ৩২টি অর্ধশতরান রয়েছে, রান করেছেন ৪৫০৫। টি ২০ খেলেছেন ৭৭টি, রান ১৫৬৫, সর্বাধিক ১২৫। টি ২০-তে তিনটি শতরান ও পাঁচটি অর্ধশতরান রয়েছে।
|
জাতীয় দলের দরজা খোলেনি
ভারতীয় এ দল বা বয়সভিত্তিক দলকে নেতৃত্ব দিলেও সিনিয়র দলে সুযোগ না পাওয়া নিশ্চিতভাবেই তাঁকে হতাশ করছিল। সুযোগের অপেক্ষায় থেকেও বঞ্চিত হতে হয়। আসলে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের মতো ক্রিকেটাররা থাকায় নিজের দাবিকে সেভাবে জোরালোও করতে পারেননি তিনি। আজ বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, প্রতি সকালে দেশের হয়ে খেলার জন্য নিজেকে আরও উন্নত করতে অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছি। সেই দেশকেই আর প্রতিনিধিত্ব করতে পারব না ভেবে কিছুক্ষণের জন্য হৃদস্পন্দন থেমে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয় আমার কেরিয়ারের সেরা মুহূর্ত, দেশকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারা সেরা অনুভূতিও। ভারতীয় এ দলকে দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিদেশীয় সিরিজে নেতৃত্ব দিয়েও জিতেছি। এগুলি মনের মণিকোঠায় থাকবে। উল্লেখ্য, ২০১৩ ও ২০১৫ সালে উন্মুক্ত চাঁদের নেতৃত্বে ভারত এ দল নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ সফরে সিরিজ জিতেছিল।
|
মিশন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
২০১৬ সালে দিল্লির ৫০ ওভারের দল থেকে বাদ পড়েন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলও ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর আর আইপিএলে দল পাননি। ২০১৯-২০ মরশুমে উত্তরাখণ্ডের হয়ে খেলতে গিয়েও হতাশ হন। সাত ম্যাচে ১৯৫ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্যলাভের আশা দেখছেন। গত কয়েক বছর ভালো সময় যায়নি, জাতীয় দলে কাঙ্ক্ষিত সুযোগও মেলেনি। সেই কারণেই এবার বড় পদক্ষেপ ২৮ বছর বয়সে ভারতীয় ক্রিকেটকে বিদায় জানানো। সেরা পর্যায়ে ক্রিকেট খেলতে চান। ক্রিকেট যেহেতু ইউনিভার্সাল গেম, তাই বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেই তিনি সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চান। জানা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা লক্ষ্য উন্মুক্ত চাঁদের।