করোনা পরিস্থিতি ও দেশ
গতকাল দেশে করোনা আক্রান্তের দৈনিক অঙ্ক ছুঁয়েছিল ৩৭,০৭৭,৭০৬ জন। তার আগে মঙ্গলবার দেশে করোনা আক্রান্তের দৈনিক অঙ্ক ছুঁয়েছে ২৮ হাজারের সামান্য বেশি কিছুটা অঙ্ক। তবে মঙ্গলবারই কেন্দ্র সতর্কতরা সঙ্গে জানিয়েদিয়েছিল যে দেশে করোনার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা নিম্নমুখী হলেও দেশে হু হু করে বাড়ছে আর ভ্যালু। করোনা আর ভ্যালু বেড়ে যাওয়া মানেই হল , দেশে ক্রমাগত একজন রোগী থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার গড় হার বাড়তে শুরু করেছে। আর তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ দেখিয়ে দিল কেরল ও মহারাষ্ট্র। এদিকে, আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক যে রিপোর্ট পেশ করেছে , তাতে দেখা গিয়েছে করোনার জেরে দেশে শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪১,১৯৫ জন। গতকালের ৩৭ হাজারের ঘর থেকে যেভাবে হু হু করে আক্রান্তের সংখ্যা আজ বেড়েছে তাতে উদ্বেগ বাড়ছে।
তৃতীয় স্রোতের আশঙ্কার মাঝে মৃতের সংখ্যা
একদিকে দেশে অগাস্ট থেকেই তৃতীয় স্রোত আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে, শেষ একদিনে করোনার জেরে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন ৪১ হাজারের ঘরে রয়েছে, তেমনই দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা এর জেরে হয়েছে ৪৯০ জন। এদিনও কার্যত দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৫০০ জনের নিচে রয়েছে। দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩২.০৮ মিলিয়নে। মৃতের সংখ্যা মোট দাঁড়িয়েছে ৪২৯, ৬৬৯ জনে। দেশে করোনায় মৃতের হার দ্বিতীয় স্রোতের তুলনায় কম হলেও , তার আধিক্য নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এদিকে , অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা মোট আক্রান্তের ১.২১ শতাংশ নেমেছে। বৃহস্পতিবারের রিপোর্টে বলা হয়েছে করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন ৩১,২৬০,০৫০ জন।
শেষ ৫ দিন বেঙ্গালুরুতে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে
উল্লেখ্য, শেষ ৫ দিনে বেঙ্গালুরুতে হু হু করে শিশুদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দেখা গিয়েছে। দেখা গিয়েয়েছে তৃতীয় স্রোতের আশঙ্কার মাঝে করোনা আক্রান্ত হয়েছে বেঙ্গালুরুর ২৪২ জন শিশু। বেশিরভাগের বয়সই এঁদের মধ্যে ৯ বছরের আশপাশে। একদিকে করোনার বাড়বাড়ন্ত, অন্যদিকে কেরল থেকে মহারাষ্ট্র জুড়ে জিকার উপদ্রব বাড়তে থাকায় ত্রস্ত কর্ণাটক। সেখানে করোনা ইস্যুতে কেরল ও মহারাষ্ট্র সীমান্ত সিল করে দিয়েছে কর্ণাটক। কর্ণাটকের বিভিন্ন জেলায় রাতের কার্ফু জারি রয়েছে। শোনা যাচ্ছে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে বার ১৬ অগাস্ট থেকে সেখানে নতুন করে আংশিক লকডাউনের দিকে যেতে পারে সরকার। এই পরিস্থিতিতে সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে করোনার টিকাকরণ বাড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
সুস্থতার হার ও করোনার প্রভাব
করোনার জেরে সুস্থতার হার দেশে ৯৭.৪৫ শতাংশ। এদিন দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৩৮৭৯৮৭জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সেরে উঠেছেন ৩১,২৬০,০৫০ জন। এদিকে , গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে করোনার জেরে বহু জায়গায় আক্রান্ত দের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে বুদ্ধিমত্তা। যা নিঃসন্দেহে একটি ভয়াবহ বিষয়। করোনা আক্রমণের ফলে যাঁদের শ্বাস প্রশ্বাসে গুরুতর প্রভাব পড়ছে তাঁদের ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটছে বলে জানিয়েছে দ্যা ল্যানসেটের ই ক্লিনিক্যাল মেডিসিন জার্নাল।
খুলছে বাজার দোকান!
এদিকে, করোনার ধাক্কায় বহু রাজ্যে বিপর্যস্ত হতে শুরু করে দিয়েছে অর্থনীতি। এদিকে, সেই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশে শনিবারের লকডাউন কাটিয়ে সেখানে সপ্তাহান্তে শনিবার বাজার দোকান খোলার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে, সেপ্টেম্বর থেকে সেরাজ্যে স্কুল খোলা নিয়েও চিন্তা ভাবনায় সরকার। এদিকে, করোনা বিধ্বস্ত মহারাষ্ট্রে রাত ১০ পর্যন্ত দোকান ও রেস্তোরাঁ খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে। এদিকে উত্তর প্রদেশে যে সরকারের তরফে যে গাইডলাইন প্রকাশিত করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে সমস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কাজ করবে সকাল ৬ টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত, তবে তা হবে সোমবার থেকে শুক্রবার। এদিকে, এর আগে শনিবার ও রবিবার সমস্ত দোকানপাট উত্তরপ্রদেশে বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছিল। এদিকে, তার পর সাম্প্রতিক নিয়মে জানানো হয়েছে যে শনিবার দোকানপাট সেখানে খোলা থাকবে। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৭০০। রাজ্যে করোনা সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮, ২৫৮। এদিন মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।