|
ভারতের অপশন
ইংল্যান্ডে এখন গ্রীষ্মকাল, শুষ্ক আবহাওয়া। লর্ডস টেস্ট বৃষ্টিতে ব্যাহত হবে না বলেও মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আটে শার্দুল ঠাকুরের পরিবর্তে কে আসতে পারেন সেটাই বড় প্রশ্ন। এমনিতে অটোমেটিক চয়েস রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্ট ক্রিকেটে বিশ্বের ২ নম্বর বোলার সব সময়ই ম্যাচ উইনার। ব্যাটসম্যান হিসেবেই নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন অনেকবার। কিন্তু অশ্বিনকে নিলে ভারতকে নামতে হবে তিন পেসারে। কেন না রবীন্দ্র জাদেজা নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছেন। আর পেসার শার্দুল ঠাকুরের জায়গায় যদি কোনও পেসার নেওয়া হয় সেক্ষেত্রে লড়াই ইশান্ত শর্মার সঙ্গে উমেশ যাদবের। ফিটনেস সমস্যায় ইশান্ত ট্রেন্ট ব্রিজে খেলতে না পারলেও এখন সেই সমস্যা নেই। তাছাড়া ২০১৪ সালে লর্ডসে শেষবার ভারত ইংল্যান্ডকে যে টেস্টে হারিয়েছিল সেই টেস্টে ইশান্ত দ্বিতীয় ইনিংসে সাত উইকেট নিয়েছিলেন। যদিও ২০১৮ সালে ভারতকে লর্ডসে ইনিংসে হারতে হয়েছিল জো রুটের দলের কাছে।
— BCCI (@BCCI) August 10, 2021 |
বিরাটের ইঙ্গিত
ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেছেন, সেরা ভারসাম্যের দল নিয়েই আমরা নামব। তবে শার্দুলের মতো একজন ক্রিকেটার না থাকলে আমাদের নিশ্চিতভাবেই ২০ উইকেট তোলার বিষয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। এমন কাউকে নেওয়া হবে না যিনি শুধু ব্যাট হাতে কিছু রান যোগ করতে পারেন। প্রথম টেস্টের দল নিয়ে আমরা সত্যিই স্বস্তিতে ছিলাম। উল্লেখ্য, ফর্মে থাকা রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে বসিয়ে শার্দুলকে ভারত খেলিয়েছিল ট্রেন্টব্রিজে। এ নিয়ে সমালোচনাও হয়। কিন্তু ভারত ২০ উইকেট তুলে ফেলতে সক্ষম হয়ে জয়ের দিকে এগোচ্ছিল চার পেসার, এক স্পিনার কম্বিনেশনে নেমেই। সেক্ষেত্রে বিরাট চার পেসারকেই সেরা কম্বিনেশন মনে করছেন বলে তাঁর এদিনের মন্তব্যকে ব্যাখ্যা করা শুরু হয়েছে।
ব্যাটিং নিয়ে
প্রথম টেস্টে বিরাট কোহলি নিজে এবং অজিঙ্ক রাহানে ও চেতেশ্বর পূজারা ব্যাট হাতে হতাশ করেছেন। বিরাট এদিন বলেন, এটা নিয়ে আমরা একেবারেই উদ্বিগ্ন নই। আমরা ব্যক্তিগত কিছু নিয়ে ভাবার পরিবর্তে দলগতভাবে কতটা শক্তিশালী হয়ে কিছু করতে পারি তা নিয়েই পরিকল্পনা করে থাকি। সেরা এবং সবচেয়ে শক্তি ব্যাটিং লাইন আপ যাতে দলের ভালো খেলার পক্ষে সহায়ক হয় সেদিকেই আমাদের ফোকাস থাকে। জাদেজা প্রথম টেস্টে ভালো ব্যাটিং করে সেই আত্মবিশ্বাস সম্বল করে দ্বিতীয় টেস্টে নামবেন, এতে আমাদের ব্যাটিং গভীরতাও বাড়বে। প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের কাছেই প্রতিটি ম্যাচ ভালো কিছু করে দেখানোর। আগের টেস্টে রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল খুব ভালো খেলেছেন। ব্যাটিং ইউনিট নিয়ে আমরা খুবই স্বস্তিদায়ক জায়গায় রয়েছি। এমনকী শার্দুল না খেলতে পারলেও ব্যাটিং গভীরতা কমবে বলে মনে করি না। পন্থের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ নিয়ে বিরাট বলেন, এটাই তাঁর স্বাভাবিক খেলা। আবার দলের প্রয়োজনে ম্যাচ বাঁচানোর মতো ব্যাটিং করে লম্বা ইনিংসও খেলতে পারেন ঋষভ। কোনও ম্যাচ ফিফটি-ফিফটি থাকলে সেই জায়গা থেকে ম্যাচ আমাদের দিকে আনতে পন্থের ব্যাটিং খুব কার্যকরী। সব সময়ই যে খুব ডিফেন্সিভ খেলতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। দলের ম্যানেজমেন্ট কী চাইছে সেই বার্তা সম্পর্কে পন্থ ওয়াকিবহাল থাকেন।
|
আশায় অশ্বিন
বিসিসিআইয়ের টুইটারে শেয়ার করা সাক্ষাতকারে রবিচন্দ্রন অশ্বিন জানিয়েছেন, প্রথম টেস্টের পর গোটা দল এটা বিশ্বাস করে যে আমরা সিরিজ জিততে পারি ইংল্যান্ডকে হারিয়ে। প্রথম টেস্টে ট্রেন্ট ব্রিজের পয়া মাঠে আরও একবার জেতার জায়গায় ছিল দল, কিন্তু বৃষ্টিতে জয় হাতছাড়া হওয়ায় গোটা শিবির কিছুটা হতাশ। লর্ডসে ২০১৪ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী অশ্বিন বলেন, উইকেট কিছুটা ড্যাম্প রয়েছে। তবে আমরা জেতার লক্ষ্যেই নামছি। লর্ডসের সেরা মুহূর্ত সম্পর্কে বলতে গিয়ে অশ্বিন বলেন, নিঃসন্দেহে এই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কপিল দেব বিশ্বকাপ যখন নিয়েছিলেন তখন আমি জন্মাইনি। তবে সেই মুহূর্ত বারেবারে দেখে গর্ব অনুভব করেছি। আর ভারতীয় ক্রিকেটকে অনেকটাই উঁচুতে পৌঁছে দিয়েছিল ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়, দাদার জার্সি ঘোরানো। এই মাঠেই ভারত ২০১৪ সালে টেস্ট জিতেছিল। অশ্বিনের কথাতেই পরিষ্কার, সুখস্মৃতিকে সম্বল করেই বিরাট-বাহিনী আরও এক নতুন অধ্যায় রচনা করতে চলেছে লর্ডসে।