বন্য ঘোড়াদের দম্ভ ও পরিযায়ী পাখিদের কলতানে উদ্ভাসিত ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যান

বন-জঙ্গলে ভরা অসম বরাবরই পর্যটকদের আকর্ষণের স্থল। করোনা ভাইরাসের প্রভাব কিছুটা লাঘব হলেই পুজোর মরসুমে কাজিরাঙা থেকে মাজুলির টানে প্রতিবেশী রাজ্যে পাড়ি জমাতে শুরু করবেন বাঙালি পর্যটকরা। তাঁদের আকর্ষণের পিছনে থাকবে বিপুল বৈচিত্র। গতে বাঁধা ভ্রমণসূচির বাইরে গিয়ে অন্যভাবে পরিকল্পনা করা শুরু করেবেন ট্রাভেল এজেন্টরাও। করোনা ভাইরাসের আবহে ফাঁকায় ফাঁকায় ঘুরে দেখা যায়, এমন জায়গার তালিকায় থাকা ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যানেও বাড়তে ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড়। কারণটা জেনে নেওয়া যাক।

অবস্থিতি

ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যান অসমের পর্যটন স্থানগুলির মধ্যে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। রাজ্যের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত এই বনানী ব্রহ্মপুত্র নদের দক্ষিণ পারে অবস্থিত। অন্য পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে লোহিত নদী। অসমের ডিব্রুগড় ও তিনসুকিয়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যানের বিস্তার। যেখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য অকৃত্রিম। শহুরে কোলাহল থেকে দুই-চার দিনের বিরাম নেওয়ার আদর্শ ঠিকানা হতে পারে অসমের এই অঞ্চল।

কীভাবে যাবেন

অনেকে গুয়াহাটি নেমে সেখান থেকে সড়কপথে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যানে পৌঁছন। কেউ আবার সরাসরি পৌঁছে যান ডিব্রুগড়। সেখান থেকেও এই পৌঁছনোর মাধ্যম পাওয়া যায়। তাতে সময়ের ব্যবধান কিছুটা হলেও লাঘব হয়।

ইতিহাস ও নামের বুৎপত্তি

১৮৯০ সালে জীব বৈচিত্রের এই স্থানকে ডিব্রু সংরক্ষিত বনের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। ১৯২০ সালে তাতে আরও এলাকা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। ১৯২৯ সালে শইখোয়া সংরক্ষিত বনের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৩৩ সালে তাতে আরও এলাকা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। দুই বনের ৬৫০ স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকাকে ১৯৮৬ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে আরও ৩৪০ স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকাকে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে ডিব্রু-শইখোয়া বায়েস্পিয়ারকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৩৪০ স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকাকে জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। ডিব্রু নদীর উত্তর পারের সীমানায় আবৃত এবং ডিব্রু-শইখোয়া ঘাটের ওপর অবস্থিত হওয়ার কারণে এই অরণ্যের নামকরণও সেই অনুযায়ী করা হয়।

প্রাণী বৈচিত্র্য

ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যানের সিংহভাগ অংশই জলে বেষ্টিত। যেখানে শোনা যায় নানা প্রজাতির কলতান। হাঁস, পেঁচা, ঈগল, পায়রা, পেলিকান ছাড়াও এখানে বিভিন্ন সময়ে নানা প্রজাতির পাখিরা ভিড় জমায়। বাংলার বাঘ, মেঘলা চিতবাঘ, হরিণ, স্লো লরিস, বুনো মোষ, বুনো কুকুর, হাতির পাল দেখতে এই অরণ্যে ভিড় জমান পর্যটকরা। কপাল ভাল থাকলে জলে মিলতে পারে ডলফিনের দেখা। আর আছে বুনো ঘোড়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সেনাবাহিনীর পোষ্য খচ্চর ও ঘোড়া এই অরন্যে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তাদের উত্তর পুরুষরা এই জঙ্গলের অন্যতম আকর্ষণ। ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যানে নৌকা বিহারের ব্যবস্থা রয়েছে। উদ্যানের ভিতরে রয়েছে থাকার ব্যবস্থাও। অনেকে বনের নিকট হোটেলও বুক করে থাকেন।

প্রতীকী ছবি

খবরের ডেইলি ডোজ, কলকাতা, বাংলা, দেশ-বিদেশ, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা, ব্যবসা, জ্যোতিষ - সব আপডেট দেখুন বাংলায়। ডাউনলোড Bengali Oneindia

{quiz_673}

More TRAVEL News  

Read more about:
English summary
Dibru-Saikhowa National Park is the main attarction of Assam