দেবেগৌড়ার বাসভবনে গিয়ে আলোচনা সারেন ডেরেক
সম্প্রতি কর্ণাটকে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন ও জেডিএস সুপ্রিমো দেবেগৌড়ার সঙ্গে বৈঠক হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়ার বাসভবনে গিয়ে আলোচনা সারেন ডেরেক। তাতেই জল্পনা পারদ চড়েছে যে, তৃণমূল এবার দক্ষিণ ভারতে সঙ্গী খুঁজতে গিয়েছে। উত্তর-পূর্বে অসম-ত্রিপুরার পাশাপাশি তৃণমূলের নজরে দক্ষিণ ভারতও।
বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে মিত্রশক্তিকে সম্বলিত করাই লক্ষ্য
রাজনৈতিক মহল মনে করছে ডেরেক-দেবেগৌড়া বৈঠকের দুটি আঙ্গিক রয়েছে। এক কর্ণাটকের নির্বাচন সামনেই। সেই নির্বাচনের আগে যদি দক্ষিণের রাজ্যে খাতা খোলা যায়। আর দুই, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার জন্য মিত্রশক্তিকে সম্বলিত করাও এই বৈঠকের কারণ হতে পারে।
দিল্লিতে দরবার মমতার বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের এখনও তিন বছর বাকি প্রায়। এখন থেকেই জোটের সলতে পাকানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দিল্লিতে দরবার করে বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে একের পর এক বৈঠক করেছেন। কংগ্রেসও তৃণমূলের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে জোট-গড়ার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে।
তৃণমূল চাইছে কর্ণাটক ও কেরলেও ঘাঁটি গাড়তে
রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে, উত্তর-পূর্ব ভারতের দু-তিনটি রাজ্যের পাশাপাশি দক্ষিণের অন্তত দুটি রাজ্যে তৃণমূল পাখির চোখ করেছে। তৃণমূল চাইছে কর্ণাটক ও কেরলেও ঘাঁটি গাড়তে। বামশাসিত কেরলে তৃণমূল সংগঠন গড়ে তুলতে উৎসাহী। সেইসঙ্গে কর্ণাটকেও তাঁরা জোটসঙ্গী পেয়ে সংগঠন বিস্তারে ইচ্ছুক।
|
ডেরেক দেবেগৌড়ার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন অভিষেকের
মঙ্গলবার দিল্লিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়ার সঙ্গে ডেরেকের দীর্ঘ বৈঠক ঘিরে জল্পনার পারদ চড়ে। এই বৈঠক থেকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন দেবেগৌড়ার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তা থেকেই স্পষ্ট হতে শুরু করেছে তৃণমূল দক্ষিণের রা্জ্যেও সংগঠন বিস্তারের চেষ্টায় রয়েছে।
দক্ষিণের রাজ্যে ক্ষমতা মতো জোটসঙ্গী খুঁজছে তৃণমূল
তৃণমূল চাইছে দক্ষিণের রাজ্যে নিজেদের ক্ষমতা মতো জোটসঙ্গী খুঁজে নিতে। কোনও আঞ্চলিক দল বা মঞ্চকে তারা বেছে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। সেইমতোই কর্ণাটকে আঞ্চলিক দল জেডিএস। তাঁদের হাত ধরে পথ চলতে চাইছে তৃণমূল। আর বৈঠক যে অনেকটাই ফলপ্রসূ তার প্রমাণও মিলেছে এবার।
|
দেবেগৌড়া টুইট-বার্তা জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছে আরও
ডেরেকের সঙ্গে বৈঠকের পর দেবেগৌড়া টুইট করে যে বার্তা দিয়েছেন, তা তৃণমূলের পক্ষে আশাব্যাঞ্জক বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কেননা টুইট দেবেগৌড়া লিখেছেন- আমার বন্ধু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন আমার থেকে বয়সে অনেকটা নবীন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন। আমাদের মধ্যে ইতিবাচক ভাবনার আদান-প্রদান হয়েছে। তাঁর এই টুইটের পর জাতীয় রাজনীতিতেও আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলকে নিয়ে।
তৃণমূল দক্ষিণ ভারতেও নজর দিতে শুরু করছে
এই মর্মেই আলোচনা চলছে যে, দেশের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির পাশাপাশি তৃণমূল দক্ষিণ ভারতেও নজর দিতে শুরু করছে। দক্ষিণের প্রবীণ রাজনীতিক দেবগৌড়ার পরামর্শ ও সহযোগিতা চেয়ে বৈঠকই জল্পনার পারদ চড়েছ। এর আগে কেরলে প্রতিটি জেলা কমিটি ও ব্লক কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছে তৃণমূল। সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে এক বছরের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে তৃণমূল। আর দক্ষিণেরই আর এক রাজ্য কর্ণাটকে জোট সঙ্গী খুঁজতে তৎপর হয়েছেন ডেরেক-অভিষেকরা।
উত্তর-পূর্বের যে তিন রাজ্যে পাখির চোখ তৃণমূলের
এদিকে উত্তর-পূর্বের অন্তত তিনটি রাজ্যকে এখনই টার্গেট করেছে তৃণমূল। ত্রিপুরা, অসম ও মণিপুর। ত্রিপুরায় তৃণমূল একটা সময়ে প্রধান বিরোধী দল হয়েছিল। আর মণিপুরে তৃণমূলের একজন নির্বাচিত বিধায়কও ছিলেন। সেইসঙ্গে অসমেও তৃণমূল সংগঠন বিস্তারের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। ত্রিপুরা দিয়েই শুরু হয়েছে সংগঠন বিস্তারের যাত্রা। কেননা ত্রিপুরায় ২০১৬ সাল থেকেই তৃণমূল সংগঠন বিস্তারের তোড়জোড় শুরু করেছিল। কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল ত্রিপুরার প্রধান বিরোধী দলে রূপান্তরিত হয়েছিল তখন। সেই সংগঠনের প্রায় পুরোটাই বিজেপিতে মিশে যায়। এখন আবার শূন্য থেকে শুরু করেছে তৃণমূল। তারা তরতরিয়ে বাড়ার চেষ্টা করছে ত্রিপুরায়।