ভারতীয় উপমহাদেশ খরাপ্রবণ হয়ে উঠবে, বাড়বে তাপপ্রবাহ
সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্মহাদেশীয় প্যানেল বা আইপিসিসি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, আগামী কয়েক দশক ভারতীয় উপমহাদেশ খরাপ্রবণ হয়ে উঠবে। বাড়বে তাপপ্রবাহ। সেইসঙ্গে বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপও বাড়বে বলে জানিয়েছেন ওই জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্মহাদেশীয় প্যানেলের বিশেষজ্ঞরা।
গোটা ২১ শতাব্দীজুড়েই তাপপ্রবাহ ও খরার প্রবণতা
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্মহাদেশীয় প্যানেল জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটি গবেষণা করে। ক্লাইমেট চেঞ্জ ২০২১ : দ্য ফিজিক্যাল সায়েন্স বেসিস' শীর্ষক একটি মূল্যায়নে জানানো হয়েছে, গোটা ২১ শতাব্দীজুড়েই তাপপ্রবাহ ও খরার প্রবণতা বেশি হবে। বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে ১৯৫টি দেশের সহযোগিতায় এই রিপোর্ট পেশ করা হচ্ছে।
গ্রীষ্মে তাপমাত্রা যে হারে বাড়ছে, শীতে ততটা কমছে না
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্মহাদেশীয় প্যানেলের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে যে পরিমাণ ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়েছিল ভারতীয় উপমহাদেশে, তার থেকে অনেক বেশি বাড়ছে বর্তমানে। গ্রীষ্মে সর্বাধিক তাপমাত্রা দিন দিন বাড়লেও, শীতে সর্বানিম্ন তাপমাত্রা ততটা কমছে না। এই প্রবণতাই আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
এক দশক আগেই পৃথিবীর তাপমাত্রা দু ডিগ্রি বেড়ে যাবে
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখন এমনই ধারা চলবে। অর্থাৎ গরমে গরম বেশি, কিন্তু শীতে বেশি শীত নয়। বিশ্ব উষ্ণায়নই এর জন্য দায়ী। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্মহাদেশীয় প্যানেলের রিপোর্ট পেশ করে বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি গুতালেজ বলেন, যেভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি হচ্ছে, বিশ্ব উষ্ণায়ন যে চরম রূপ ধারণ করছে, তাতে এক দশক আগেই পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রায় দু ডিগ্রি বেড়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিল ২০৪০-এ দু-ডিগ্রি বাড়বে তাপমাত্রা।
২০৩০ সালে দেড় ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়বেই
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থাৎ আর ৯ বছরের মধ্যে অন্তত দেড় ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়বেই। ফলে বিপদ যে বাড়ছে প্রতি মূহূর্তে, তা বলাই যায়। যে হারে তাপপ্রবাহ বাড়ছে, তাতে আশঙ্কার কালো মেঘ ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৫০ সালের পর থেকেই ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে। অর্থাৎ ৭০ বছরেরও বেশি সময় জলবায়ু পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। তার ফলে ২০৩০ সালে দেড় ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়বেই।
মানুষ ৭০ বছর ধরে সাবধান হয়নি
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন আর বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলেই তাপপ্রবাহ বাড়ছে। আর খরাপ্রবণ হয়ে উঠছে বিশ্ব। যতদিন যাবে, পৃথিবী বিপদের মুখে চলে যাবে। মানুষ ৭০ বছর ধরে সাবধান হয়নি। তাই পৃথিবী বিপদসঙ্কুল হয়ে যাচ্ছে। এখনও যদি মানুষের সচেতনতা না ফেরে তবে মহাবিপদ আসন্ন।