বাদুড় এই রোগ বহন করে
হু জানিয়েছে, এই ভাইরাস, যা বাদুড় দ্বারা বহন করা হয় এবং ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যুর হার রয়েছে। দক্ষিণ গুয়েকডু প্রিফেকচারে ২ অগাস্ট মারা যাওয়া একজন রোগীর কাছ থেকে নেওয়া নমুনায় এই তথ্যটি পাওয়া গিয়েছে। আফ্রিকার হু-এর আঞ্চলিক পরিচালক ডঃ মাতশিদিসো মোতি মারবার্গ ভাইরাসের দ্বিতীয় প্রাদুর্ভাব ইবোলা ভাইরাসের অবসান ঘোষণার মাত্র ২ মাস পরে এটি নজরে আসে। যা গত বছর শুরু হয়েছিল এবং এই ভাইরাসের দ্বারা ১২ জন প্রাণ হারিয়েছিল। জেনেভায়, হু বলেছে যে এটি জাতীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে ‘উচ্চ' স্তরে বিবেচনা করা হচ্ছে, তবে বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের সংখ্যা অনেকটাই কম।
ইতিহাস
এই ভাইরাসের প্রথম মহামারি দেখা দেয় জার্মানি ও যুগোস্লোভিয়াতে, এই উভয় দেশেই মারবার্গ ভাইরাসে আক্রান্ত সবুজ বাঁদর নিয়ে আসা হয়েছিল। সেই সময় ৩১ জন আক্রান্ত রোরীগ মধ্যে মৃত্যুর হার ছিল ২৩ শতাংশ। সবচেয়ে খারাপ মহামারি দেখা যায় ২০০৫ সালে অ্যাঙ্গোলাতে, যেখানে ২৫১ জন আক্রান্ত হন এবং ৯০ শতাংশ মৃত্যুর হার ছিল। এই মহামারিটি দৃশ্যত একটি পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডে দূষিত ট্রান্সফিউশন সরঞ্জামের পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ইবোলার মতো এই রোগও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও দেহ পরিচালনার সময়ও সংক্রমণ ঘটতে পারে। এছাড়াও একটি রিপোর্টে যৌন মিলনের কারণেও সংক্রমণ হতে পারে বলে জানা গিয়েছিল। মারবার্গ ভাইরাস উগান্ডা, জিম্বাবুয়ে, কঙ্গো, কেনিয়া, অ্যাঙ্গোলাতে এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়েছিল। বাদুড় বসবাস করে এমন অনেক খনির গর্তের শ্রমিক এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল। প্রথম যখন এই ভাইরাস ছড়ায় তখন মৃত্যু হার ছিল শতকরা ২৫ ভাগ। কিন্তু ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০০ সালে কঙ্গোতে এই ভাইরাস শতকরা ৮০ ভাগ রোগীর মৃত্যু ঘটিয়েছিল।
কীভাবে এটা ছড়ায়
মারবার্গ ভাইরাস বহনকারী বাদুড়গুলি সাধারণত খনি বা খনি আবাসনের কলোনিতে বসবাস করে। একবার কোনও মানুষের শরীরে ধরা পড়লে তা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের যে কোনও তরল থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ১৯৬৭ সাল থেকে ১২টি প্রধান মারবার্গ প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, যার অধিকাংশ দক্ষিণ ও পূর্ব আফ্রিকাতে। এ বছর মারবার্গ ও ইবোলা উভয় রোগই দেখা গিয়েছে গিনির গুয়েকডু জেলায়, এটি লিবেরিয়া ও আইভোরি উপকূলের সীমান্তের কাছে অবস্থিত। ইতিহাসে বৃহত্তর ২০১৪-২০১৬ সালে ইবোলা মহামারির প্রথম কেসগুলি সনাক্ত হয় দক্ষি--পূর্ব গিনির বনাঞ্চলে।
উপসর্গ
এই নয়া ভাইরাসের রোগটি হঠাৎ করেই শুরু হয়। যার লক্ষণগুলির মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, রক্তবমি, পেশির ব্যাথা, রক্তপাত হওয়া বিভিন্ন অঙ্গ থেকে এবং অস্বস্তি সহ বিভিন্ন উপসর্গ উল্লেখিত। অনেক রোগীর সাত দিনের মধ্যে মারাত্মক রক্তক্ষরণ লক্ষণ দেখা দেয়। ভাইরাসের স্ট্রেন এবং কেস ম্যানেজমেন্টের উপর নির্ভর করে আগের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মৃত্যুর হার ২৪ শতাংশ থেকে ৮৮ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।
চিকিৎসা
কোন অনুমোদিত ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা নেই ইবোলা ও মারবার্গের। সিডিসি বলেছে, সহায়ক হাসপাতাল থেরাপি ব্যবহার করা উচিত, যার মধ্যে রয়েছে রোগীর তরল এবং ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা, অক্সিজেনের স্থিতি এবং রক্তচাপ বজায় রাখা, রক্তক্ষরণ এবং জমাট বাঁধার কারণগুলি প্রতিস্থাপন করা এবং যে কোনও জটিল সংক্রমণের চিকিৎসা।