এখন আর ভোট ব্যাঙ্কও নয়! বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপরে হামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে নিশানা তসলিমার

বাংলাদেশে (bangladesh) সংখ্যালঘুদের ওপরে হামলার অভিযোগ নিয়ে ফের একবার সরব হলেন দেশান্তরিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন (taslima nasrin)। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি সরব হয়েছেন, দিন দুয়েক আগে খুলনায় মন্দির এবং সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের ঘরবাড়ি, দোকানপাটের ওপর হামলা নিয়ে।

শনিবার বিকেলে হামলা

শনিবার বিকেলে খুলনায় রূপসা উপজেলার শিয়ালি গ্রামের হিন্দু মন্দিরগুলিতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। দেবদেবীর মূর্তি ভাঙা হয়। এর পাশাপাশি হিন্দুদের দোকান-বাড়িতেও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। মন্দিরে হামলার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছিলেন সেখানকার পুলিশকর্তা মোশারফ হোসেন।
জানা গিয়েছে শুক্রবার মসজিদে নমাজ পড়া নিয়ে সমস্যার শুরু। দুপক্ষের বাদানুবাদ হয়। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে তখনকার মতো বিষয়টি মিটেও যায়।

গ্রেফতার ১০

শনিবারের হামলার ঘটনার পর থেকে পুলিশের তরফ থেকে অন্তত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। তবে শুক্রবারের ঘটনার সঙ্গে শনিবারের ঘটনার কোনও যোগ রয়েছে কিনা তা নিয়ে কিছু বলতে চায়নি স্থানীয় প্রশাসন। অশান্তির আশঙ্কা করে এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

তসলিমার নিশানায় মৌলবাদীরা

সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তসলিমা নাসরিন বলেছেন, লজ্জা লিখেছিলেন ২৯ বছর আগে। বর্ণনা করেছিলেন হিন্দুদের দোকানপাট, বাড়িঘর, মন্দির কী করে ভাঙ্গে, জ্বালিয়ে দেয়, পুড়িয়ে ছাই করে ইসলামের সৈনিকেরা। বর্ণনা করেছিলেন অতি দেশ প্রেমিক, এমনকী ধর্ম-না-মানা হিন্দুদেরও কী ভাবে বাধ্য হয়ে পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটি ত্যাগ করতে হয়, জীবন এবং অবশিষ্ট সম্মানটুকু বাঁচানোর তাগিদে ছাড়তে হয় প্রিয় দেশ। বই লিখে কী হয়? কিচ্ছু হয় না।

আজও চলছে অত্যাটার

তসলিমার অভিযোগ, আজও একই রকম চলছে হিন্দুর ওপর অত্যাচার। আজও কোনও সরকারই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা করেনি। আজও হিন্দুরা জীবন এবং সম্মান বাঁচাতে দেশ ত্যাগ করছে।
শনিবার খুলনায় মুসলমানেরা ফের গুঁড়িয়ে দিয়েছে হিন্দুদের মন্দির,বাড়িঘর, দোকানপাট। অভিযোগ করেছেন তসলিমা।

হাসিনাকে নিশানা তসলিমার

তিনি বলেছেন বাংলাদেশ সরকারের তাতে কিছু যায় আসে না। হিন্দু-সংখ্যা এত কম যে এটি এখন আর ভোট ব্যাঙ্কও নয়। শেখ হাসিনার অবশ্য ভোটটোটেরই আর দরকার নেই। তিনি ওসব ছাড়াই ক্ষমতায় আমৃত্যু থাকবেন বলে পণ করেছেন। কটাক্ষ করেছেন তসলিমা।
তিনি আরও বলেছেন, অসাম্প্রদায়িকতা, মানবতা, উদারতা, গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা? ফুঃ! ওসব তিনি থোড়াই কেয়ার করেন। ঝুলন দাস এখনও বিনা অপরাধে জেল খাটছেন। সরকারের কারও কি কিছু যায় আসে? কিচ্ছু না।

এর আগে বাংলাদেশের হিন্দু মহাজোটের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল সেদেশে হিন্দুদের ওপরে অত্যাচার দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। নির্যাতন বন্ধের দাবিতে সংগঠনের তরফ থেকে মানববন্ধনও করা হয়। সংগঠনের অভিযোগ ছিল যে অত্যাচার হিন্দুদের ওপরে সেখানে হচ্ছে, তা মধ্যযুগকেও হার মানাচ্ছে। বিচার না হওয়ায় হামলার ঘটনা বেড়েই চলেছে বলেও অভিযোগ করেছিল হিন্দু মহোজোট। তারা আরও অভিযোগ করেছিলেন প্রত্যেক ঘটনায় শাসকদলের নেতা-কর্মীদের দোষ থাকলেও, তা বিরোধীদের ওপরে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সেখানকার সংবাদ মাধ্যমেও হিন্দুদের ওপরে হামলা নিয়ে সরব হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যাদের দুচারজন খুন বা ধর্ষিত হলে ফিরতি খুন কিংবা ধর্ষণের আশঙ্কা নেই, তাই তাঁরাই সফট টার্গেট। সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭১-এর যুদ্ধে পাকিস্তানিরা বেছে বেছে হিন্দুদের ওপরে হামলা করেছিল। তারপর পাকিস্তানিরা চলে গেলেও হিন্দুদের ওপরে হামলা থামেনি। বাংলাদেশে প্রত্যেক নির্বাচনের আগেই সংখ্যালঘু গ্রাম আক্রান্ত হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে সেখানকার সংবাদ মাধ্যমেই।
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে হিন্দুদের যেসব বাড়িতে হামলা হয়েছে, তা থানা থেকে মাত্র দুশো গজের মধ্যে। পুলিশ ওইসব এলাকার আগাম কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সাধারণভাবে কোনও হিন্দু যুবকের নামে প্রথমে গুজব ছড়ানো হয়। বলা হয় ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করেছেন। একদিকে পুলিশ ও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে, অন্যদিকে তাঁর বাড়িতে কিংবা পাড়ায় হামলাও চালানো হয়। হিন্দু হিন্দু গ্রামেই নয় আক্রমণের শিকার বৌদ্ধ পল্লিও। যা নিয়ে বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসের মধ্যেই দেশে মৌসুমী বায়ু দুর্বল হওয়ার বার্তা! বাংলার বিভিন্ন জেলার আবহাওয়া একনজরেভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসের মধ্যেই দেশে মৌসুমী বায়ু দুর্বল হওয়ার বার্তা! বাংলার বিভিন্ন জেলার আবহাওয়া একনজরে

জীবনসঙ্গী খুঁজছেন? বাঙ্গালী ম্যাট্রিমনি - নিবন্ধন নিখরচায়!

More HINDU News  

Read more about:
English summary
Taslima Nasrin criticises PM Sheikh Hasina on attack on hindus in Khulna in Bangladesh